নামি দামি শপিং মল হোক কিংবা সুপার মার্কেট, এই সব জায়গা গুলিতেই হাজার হাজার টাকার জিনিসপত্র কেনার পর কাউন্টারে বিল করতে গেলে পেমেন্টের আগে জিজ্ঞেস করা হয় ‘ব্যাগ নেবেন?’ পরিবর্তে কারও কাছ থেকে ৫ টাকা, ১০ টাকা, ১৫ টাকা অথবা কুড়ি টাকা নিয়ে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। কেনাকাটা করতে গিয়ে এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন কমবেশি সকলেই। বিষয়টিকে সেভাবে আমল দেন না কেউ। অথচ ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের তরফ থেকে বিষয়টিকে বেআইনি বলে দাবি করা হয়েছে বারবার।
কারণ যে ব্যাগের জন্য কাউন্টার থেকে এই নূন্যতম টাকা নেওয়া হচ্ছে তা আসলে বিনামূল্যে দেওয়া উচিত। ইতিপূর্বে ক্রেতাদের কাছ থেকে ক্যারিব্যাগের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার জন্য জরিমানা দিতে হয়েছে বহু নামিদামি সংস্থাকে। কিন্তু তারপরেও শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন শপিং মল কিংবা সুপারমার্কেটে ক্যারি ব্যাগের বদলে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। যা প্রকৃতপক্ষে ব্যবসার নামের লুট।
শুধু তাই নয় কাউন্টার থেকে দেওয়াএই ক্যারি ব্যাগ গুলিতে লেখা থাকে দোকানের নাম এবং লোগো। এভাবেই শহরের একাধিক শপিং মল এবং বড় বড় বিপণী গুলিতে ক্রেতার থেকে ক্যারিব্যাগের জন্য টাকা নেওয়ার পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে সেই সংস্থার বিজ্ঞাপন। তাই ক্রেতাই যেন বিক্রেতা সংস্থার বিজ্ঞাপনি এজেন্ট। ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের মতে বিষয়টি একেবারে বেআইনি। এটা সম্পূর্ণ অসাধু ব্যবসা। ক্যারি ব্যাগের জন্য কোন সংস্থা টাকা নিতে পারে না। তাদের নিজেদের বিজ্ঞাপনও ছাপাতে পারে না।
অনেক আগেই এ বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে ‘২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যারি ব্যাগের জন্য টাকা নেওয়া বেআইনি। প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ এবং অন্য কোন ধরনের ব্যাগ দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া যাবে না। কেউ যদি ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরে অভিযোগ করেন তাহলে সেই আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ যদিও ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও ক্যারি ব্যাগের দাম এখনও চড়া।
৭ টাকার ক্যারি ব্যাগের জন্য ৩০০০ টাকা জরিমানা :
গত মাসে দিল্লিতে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রিলায়েন্স ট্রেন্ডকে ৭ টাকার একটি ক্যারি ব্যাগের জন্য ৩০০০ টাকার জরিমানা দিতে হয়েছিল। কোম্পানির যুক্তি ছিল ক্যারি ব্য়াগ কেনার জন্য তারা গ্রাহককে জোর করেননি। এছাড়াও, একটি ক্যারি ব্যাগের জন্য ২০ টাকা নেওয়ায় আসবাবপত্র ব্র্যান্ড Ikea-কে ৩০০০ টাকা জরিমানা করেছিল বেঙ্গালুরুর ক্রেতাসুরক্ষা আদালত।
কয়েকটি ব্র্যান্ডের দাবি, তারা তাদের ব্র্য়ান্ডের নাম দেওয়া ক্যারি ব্যাগের জন্য গ্রাহকদের থেকে টাকা নেয় না। আইনজীবীদের মতে, ২০১১ সালে কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রক প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ম জারি করার সময় ক্যারি ব্যাগের জন্য দাম ধার্য্য করার কথা উল্লেখ করে বলেছিল খুচরা বিক্রেতারা গ্রাহকদের বিনামূল্যে কোনও ধরণের ক্যারি ব্যাগ সরবরাহ করতে পারবে না। এর পর খুচরা বিক্রেতারা কাগজ এবং কাপড়ের ব্যাগের দাম নিতে শুরু করেন।
Leave a Reply