বলা হয় ভারতবর্ষ মানেই মন্দিরের দেশ। হিন্দুধর্ম সংস্কৃতির পীঠস্থান ভারতবর্ষের নানা প্রান্তে রয়েছে একাধিক মন্দির। তাই কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী ভারতের নানান প্রান্ত থেকে তো বটেই বাইরের অনেক দেশ থেকেও বহু বিদেশি পর্যটকরা আসেন ভারতের একাধিক মন্দির দর্শনে।
সকলেই জানেন হিন্দুশাস্ত্রে মোট তেত্রিশ কোটি দেবতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই আমাদের দেশে বিভিন্ন দেব-দেবীর পুজো সম্পর্কে কমবেশি অবগত রয়েছেন সকলেই। কিন্তু কখনওই কি শুনেছেন পেত্নী পুজোর কথা? জানলে অবাক হবেন শুধু পুজোই নয়, রীতিমতো মন্দির তৈরি করে নানান বস্তু নিবেদন করে পেত্নীকে প্রসন্ন করার রীতি প্রচলিত রয়েছে।
সাধারণত সন্তান লাভ কিংবা বিবাহের জন্য এই মন্দিরে ছুটে আসেন ভক্তরা। অদ্ভুত এই মন্দিরটি রয়েছে গুজরাটের একটি গ্রামে। আমেদাবাদ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে আমেদাবাদ-খাম্বাৎ জাতীয় সড়কের ধারে একটি ছোট্ট গ্রাম লম্বাসী। এখানেই রয়েছে সেই বিখ্যাত ‘পেত্নী মাতা’ মন্দির।
কেন নির্মাণ করা হয়েছিল পেত্নী মাতা মন্দির?
কথিত আছে এক সময়ে এই গ্রামের মানুষজন হামেশাই পথ দুর্ঘটনার মুখে পড়তেন। তাই ভয়ে অনেকেই পা মাড়াতেন না ওই এলাকায়। তখন কিছু গ্রামবাসীর মনে হয়েছিল প্রেতাত্মার কারণে এই পথ দুর্ঘটনা হচ্ছে। তাই দুর্ঘটনার হাত থেকে নিস্তার পেতে তারা সকলে মিলে একটি মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।২০১০ সালে দুর্ঘটনাস্থলে একটি পেত্নী মাতার মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। সেই থেকেই এক দশকের বেশি সময় ধরে এই মন্দিরে নিয়মিত পুজো করা হচ্ছে। তারপরই এই এলাকায় পথ দুর্ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়।
সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই মন্দিরে পেত্নী মাতাকে শাড়ি ও ওড়না সহ শৃঙ্গারের অন্যান্য জিনিস নিবেদন করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। গ্রাম বাসীদের বিশ্বাস এর ফলে পেত্নী মাতা প্রসন্ন হন এবং গ্রামবাসীদের নিরাপদে রাখেন। জানলে অবাক হবেন প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক জুড়ে প্রতিটি গাছে অসংখ্য শাড়ি জড়িয়ে বা ঝুলিয়ে রাখা রয়েছে। দশ হাজারেরও বেশি শাড়ি বাঁধা রয়েছে এই গাছ গুলিতে। পেত্নী মাতার মন্দিরে একাধিক প্রার্থনা নিয়ে আসেন ভক্তরা। প্রসঙ্গত শুধুই লম্বাসি গ্রাম নয়। খেড়া জেলার নেনপুর গ্রামেও রয়েছে এমন মন্দির।
Leave a Reply