হস্তরেখা শাস্ত্র

সামুদ্রিক শাস্ত্রের একটি অংশ হল হস্তরেখা শাস্ত্র। ঋষি সমুদ্র এই শাস্ত্র রচনা করেছিলেন বলে এটি সামুদ্রিক শাস্ত্র বা সমুদ্র শাস্ত্র নামে পরিচিত। এই শাস্ত্রে বলা নিয়ম আর উপায়ের ভিত্তিতেই ব্যক্তির হাত ও হাতের সূক্ষ্ম রেখা পড়ে তাঁদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানা যায়। শাস্ত্র মতে প্রত্যেক শুক্ল পক্ষ ও কৃষ্ণ পক্ষে হাতের রেখার ভালো-মন্দ পরিবর্তন দেখা যায়। তবে হাতের রেখায় কোনও পরিবর্তন হয় না। গঠনের ভিত্তিতে সমুদ্র শাস্ত্রে ৭ ধরনের হাতের উল্লেখ রয়েছে। আসুন জানা যাক বিস্তারিত।

এ ধরনের হাত অশুভ

সমুদ্র শাস্ত্র মতে উঁচু-নীচু, রুগ্ন হাতকে নিকৃষ্ট মনে করা হয়। অতিরিক্ত ছোট, মোটা ভরাট ও ভারী হাত  যার বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ সাধারণের তুলনায় ছোট তা শুভ নয়। এই হাতের জাতকরা নিজের জগতেই  থাকেন। নিজের ইচ্ছা মতোই কাজ করেন। তাই কে কী বলছে কিংবা কে কী করছে তাতে এঁদের কিছু যায় আসে না।

বর্গাকার হাত

হস্তরেখা শাস্ত্রে  বর্গাকার হাতকে অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। এই হাতের অধিকারী জাতকরা অত্যন্ত দয়ালু, সত্যনিষ্ঠ, এবং সৎ চরিত্রের হন। এঁদের আত্মসম্মানও থাকে চরমে। গম্ভীর প্রকৃতির এই জাতকরা বড় কাজের জন্য জীবনের এক পর্যায়ে এসে প্রচুর সুনাম অর্জন করেন।

অধিক চওড়া হাত

যেসব জাতকদের হাতের কব্জির পাশের হাতের অংশ অধিক চওড়া হয় তাঁরা আদর্শবাদী, কর্মকুশল আর জনপ্রিয় হন। তবে এঁদের কাজে কারও লাভ হয় না। নিজের পরিশ্রমের জোরেই জীবনে অগ্রসর হন এই জাতকরা।

দার্শনিক হাত

মাঝখানে ঝুঁকে থাকা লম্বা, গাঁঠযুক্ত হাতের অধিকারী জাতকদের বিচক্ষণতা সাধারণ ব্যক্তির তুলনায় অনেক বেশি হয়। কারও হাতের আঙুলের গাঁট চওড়া আর  নখ লম্বা হলে তাঁরা দার্শনিক চিন্তাভাবনার অধিকারী হয়। এঁরা জীবনে অনেক বড় বড় কাজ করে থাকেন। হাতের আঙুল দৃঢ় হলে জাতকদের সৃজনশীল মনোভাব সবাইকে প্রভাবিত করে। এঁদের মনের কথা কেউ জানতে পারে না।

লম্বা-চওড়া হাত

হস্তরেখা শাস্ত্র অনুযায়ী যাঁদের হাতের আঙুলের ওপরের অংশ পাতলা আর নীচের অংশ মোটা হয় তাঁরা ব্যবসায়ি বা শিল্পী হন। এঁরা সহজেই অন্যের কথা বিশ্বাস করে নেয়।  কোনও কাজ শুরু করলেও তা মাঝপথে অসম্পূর্ণই ছেড়ে দেন এঁরা। এই জাতকরা সৃজনশীল কাজে পটু হয়। এঁরা পেশায় সাধারণত ব্যবসায়ী, সঙ্গীতশিল্পী, চিত্রকর, মূর্তিকার, শিল্পী হয়ে থাকেন।

পাতলা হাত

সমুদ্র শাস্ত্র অনুযায়ী যাদের হাতের আঙ্গুল তীক্ষ্ণ, পাতলা, নীচের দিকে হাল্কা ও ওপরের দিকে ভারী হয়  তারা আদর্শবাদী হন। এঁরা  স্বপ্নের জগতেই থাকেন। এঁরা বড়সড় পরিকল্পনা করলেও পরিশ্রম করতে পারেন না। এঁদের মনোভব সহজে বোঝা যায় না।

মিশ্র প্রকৃতির হাত

অনেকের হাতেই উপরিউক্ত ৬ ধরনের বৈশিষ্ট্যে থাকে। এমন মিশ্র বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হাতের অধিকারী জাতকরা যা ভাবেন তা করেন না। এঁদের মনের দ্বন্দ লেগেই থাকে। কোনও সিদ্ধান্তই এঁরা  সহজে নিতে পারেন না।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *