‘নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান’। তাই ভারতবর্ষই মানেই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। আমাদের দেশের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে পা বাড়ালেই বদলে যায় ভাষা-সংস্কৃতি-পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে মানুষের রুচি-ব্যবহার সবকিছুই। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী ভারতের প্রত্যেক রাজ্যেই বসবাস করেন আলাদা ভাষা-সংস্কৃতির মানুষ। বিভিন্ন রাজ্যে বিয়ে নিয়েও রয়েছে আলাদা আলাদা নিয়ম। তব শুধু ভারতবর্ষেই নয় বিশ্বের যে কোনো দেশেই বাড়িতে জামাই গেলে একটু বেশিই খাতির যত্ন করা হয়।
তাই জামাইরা যখনই শ্বশুরবাড়ি যান তখনই তাদের খাতির যত্নের কোনো কমতি রাখা হয় না। সকালে ঘুম থেকে উঠে রাত্রে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত তাদের খাওয়া দাওয়ার জন্য থাকে একেবারে এলাহী আয়োজন। কিন্তু আগেই বলেছি কিন্তু ভারতবর্ষ মানেই বৈচিত্রে ঘেরা। তাই শুনলে হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করবেন না ভারতেই এমন একটি উপজাতি যাঁরা বাড়িতে জামাই গেলে তাদের বরণ নয় বরং তাদের চাকর মনে করেন।
ভারতের এমনই এক বিশেষ উপজাতি হলেন গোন্ড। এখানে বলে রাখি এই উপজাতি হল এমন একটি গোষ্ঠী যাদের মধ্যে জটিলতা নেই। এরা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাস করেন এবং একই ভাষায় কথা বলেন। এরা নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম নীতি পালন করে চলেন। এরা আজও তাদের বেশ কিছু পুরনো নিয়ম মেনে চলেন। প্রসঙ্গত ভারতের বিভিন্ন উপজাতি গুলির মধ্যে গোন্ড উপজাতিকেই ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন উপজাতি বলে গণ্য করা হয়। এরা মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্রিশগড় সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন। উঁচু জায়গায় বাস করার জন্য এই এঁদের ‘হিল ম্যান’ও বলা হয়।
তাঁদের সুরক্ষার্থেই ভারত সরকার ইতিমধ্যেই বেশ কিছু উদ্যোগও নিয়েছে। এদের বিয়ে সংক্রান্ত বেশ কিছু অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে যা বাকি উপজাতিদের বিয়ের নিয়ম থেকে একেবারেই আলাদা হয়। এমনিতে প্রত্যেকের কাছে বিয়ে মানেই আনন্দ অনুষ্ঠান। তাই প্রত্যেকেই বিয়েতে নাচ গান করে আনন্দে মেতে ওঠেন। কিন্তু গোন্ডদের বিয়ের অদ্ভুত নিয়ম শুনলে অবাক হবেন আপনিও। বিশেষ করে যেসমস্ত দম্পতি প্রেম করে বিয়ে করে তাদের জন্য বিয়ের আগে তাদের হবু জামাইকে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
এক্ষেত্রে ছেলেকে প্রথমে তার শ্বশুরের খামারের কাজ করতে হয়। এইভাবে দিনের পর দিন কাজ করার পর যখন শ্বশুরের মন গলবে অর্থাৎ যখন তাঁর মনে হবে যে ছেলেটি সত্যিই কঠোর পরিশ্রমী তখন তিনি নিজেই তাদের বিয়েতে সম্মতি দেবেন। শুধু তাই নয় গোন্ড উপজাতির মানুষরা মাছ-মাংস খেতে পছন্দ করেন। এই উপজাতির মহিলারা শাড়ি এবং পুরুষরা ধুতি ও গেঞ্জি পড়েন। এদের মূল জীবিকা কৃষিকাজ।
Leave a Reply