মন্দির

হিন্দু ধর্ম-সংস্কৃতির পীঠস্থান ভারতের দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটা বড় অংশ জুড়েই রয়েছে মন্দির। ভারতের নানান প্রান্তে রয়েছে অসংখ্য মন্দির। প্রত্যেক মন্দিরেরই রয়েছে  নিজস্ব ইতিহাস। ভারতের বিখ্যাত মন্দিরগুলি দর্শন করতে বছর বছর আসেন বহু বিদেশী পর্যটকরাও। ঠাকুরের বিগ্রহ দর্শন করে অনেকেই টাকা পয়সা সহ সোনা কিংবা হীরের মত বহু মূল্যবান রত্ন দান ধ্যান করেন। যার ফলে বছর ফুলে ফেঁপে উঠছে ওই মন্দিরগুলি। আমাদের দেশেই রয়েছে বিশ্বের এমনই পাঁচটি ধনী মন্দির। আসুন জানা যাক বিস্তারিত।

শ্রী পদ্ভনাভ স্বামী মন্দির : কেরালার তিরুবনন্তপুরমেই রয়েছে আমাদের দেশের সবচেয়ে ধনী মন্দির রয়েছে। এখানকার শ্রী পদ্ভনাভ স্বামী মন্দিরটি বিশ্ববিখ্যাত। একসময় এই মন্দির থেকেই বহু মূল্যবান গুপ্তধন পাওয়া গিয়েছিল। সেসময় এই মন্দির থেকেই উদ্ধার হয়েছিল প্রায় হাজার কোটি টাকার মূল্যবান হিরের বস্তা। যা গল্প হলেও সত্যি। শুধুমাত্র এই মন্দিরের সোনার তৈরি মূর্তিটিরই আনুমানিক মূল্য ৫০০ কোটি টাকা। সোনা-হীরে মিলিয়ে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের গুপ্তধন রয়েছে এই মন্দিরে।

তিরুমালা তিরুপতি ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির : বহু মানুষের বিশ্বাস এই মন্দিরেই একসময় বিরাজমান ছিলেন ভগবান বালাজি।মন্দিরটি অনেক অলৌকিক ঘটনা এবং রহস্যের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুরের তিরুমালা পাহাড়ে অবস্থিত এই মন্দিরের  বিগ্রহ দর্শন করলেই নাকি ভক্তদের মনের সব ইচ্ছা পূরণ হয়।  প্রতিবছর এই মন্দির দর্শনে এসে ভক্তরা ৬৫০ কোটি টাকা দান করেন। এই মন্দিরে রয়েছে ৯ টন সোনা এবং ১৪ হাজার কোটি টাকার এফডি। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই মন্দিরের আরাধ্য দেবতা ভগবান বিষ্ণু। ভগবান শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর এবং তার সহধর্মিনী পদ্মাবতীর বাস করেন এই মন্দিরে।

 

শিরডি সাই বাবা মন্দির:  শিরডিতে অবস্থিত শিরডি সাই বাবা মন্দিরটি  ভারতের  তৃতীয় ধনী মন্দির বলে পরিচিত।  শ্রী সাইবাবাকে উত্‍সর্গ করা হয়েছে এই মন্দির। প্রথম জীবনে সাইবাবা ভিক্ষাবৃত্তি করেই দিন কাটাতেন। বর্তমানে তাঁর এই মন্দিরের বার্ষিক আয় ৯০০ কোটি টাকা। এই মন্দিরের ব্যাংকে জমা রয়েছে ২৫০০ কোটি টাকা। তাছাড়া সারা বছরই অনলাইনে মন্দিরের জন্য দান আসতেই থাকে। এছাড়াও উপহার এবং গয়নার পরিমাণও আকাশ ছোঁয়া।

দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইয়ের শ্রী সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির ভারতের সবচেয়ে ধনী মন্দিরের মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এবং বহু সেলিব্রিটি এই মন্দির পরিদর্শনে যান। এখানকার প্রত্যেক ভক্ত প্রচুর পরিমাণে প্রণামী এবং দান নিবেদন করেন। মন্দিরের দেওয়ালটি ৩.৭ কেজি সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। কলকাতার এক ব্যবসায়ী এই সোনা দান করেছিলেন। প্রতি বছর এই মন্দিরের আয় প্রায় ১২৫ কোটি টাকা। (photo credit: wikipedia)

 

সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির : ভগবান গণেশকে উত্‍সর্গ করে তৈরী মুম্বাইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরও পৃথিবী বিখ্যাত। এই হিন্দু মন্দিরে প্রতিনিয়ত  দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। দেশের অন্যতম এই ধনী মন্দিরে আশীর্বাদ নিতে আসেন বহু সেলিব্রেটিরাও। দিনভর এই মন্দিরে  বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলে।  এই মন্দিরে রয়েছে সোনার দেওয়াল। যা তৈরী হয়েছে ৩. ৭ কেজি সোনার পাত দিয়ে। এই সোনা দান করেছিলেন কলকাতার এক ব্যবসায়ী। প্রতিবছর ১২৫ কোটি টাকা আয় হয় এই মন্দিরের।

 

মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দির ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত মন্দিরগুলির একটি। তবে শুধু বিখ্যাত নয়, দেশের সবচেয়ে ধনী মন্দিরগুলির তালিকাতেও এই মন্দিরের নাম রয়েছে। একটি রিপোর্ট অনুসারে, মন্দিরটি প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আয় করে। যার কারণে এটি দেশের সবচেয়ে ধনী মন্দিরের অন্তর্ভুক্ত। প্রতি বছর দেশ বিদেশের প্রচুর ভক্ত মন্দির দর্শন করতে যান।

 

বৈষ্ণো দেবী মন্দির : ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম হল জম্মু-কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবীর মন্দির। উপত্যকার ত্রিকূট পর্বতের উপর অবস্থিত এক মিলিয়ন বছরের পুরনো গুহার ভিতরে অবস্থিত এই বিখ্যাত মন্দিরটি হল এদেশের দুর্গম তীর্থস্থানগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। প্রত্যেক বছর ১০ মিলিয়নেরও বেশি তীর্থযাত্রী এই মন্দির দর্শনে আসেন। তিরুপতির পর এটিই নাকি দ্বিতীয় সর্বাধিক দর্শনীয় মন্দির। প্রতি বছর মন্দিরটি অনুদান হিসাবে ৫০০ কোটিটাকা আয় করে। এই মন্দিরের সংগ্রহে রয়েছে ১.২ টন সোনা।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *