মুকেশ আম্বানি

ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি হলেন বিশ্বের ১৪ তম ধনী ব্যক্তি। প্রিল মাসে প্রকাশিত বিখ্যাত পত্রিকা ফোর্বস থেকে জানা যাচ্ছে  মুকেশ আম্বানি এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি হওয়ার খেতাব ধরে রেখেছেন এই বছরেও। রিলায়েন্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর  গোটা পরিবারের রাজকীয় জীবনযাপন নিয়ে আমজনতার কৌতুহল বরাবরের। মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি থেকে শুরু করে তিন সন্তান আকাশ অনন্ত এবং ইশা প্রত্যেকের জীবন যাপনেই রয়েছে বিলাসিতার ছাপ। তাই আম্বানিদের লাইফ স্টাইল, পোশাক আশাক থেকে শুরু করে রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি সবকিছু নিয়েই নেটিজেনদের মধ্যে থাকে ব্যাপক কৌতূহল।

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানির বার্ষিক বেতন কত জানেন? জানলে হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করবেন না এত কোটি সম্পত্তির মালিক হয়েও মুকেশ আম্বানির নিজের রোজগার শূন্য! নিজের কোম্পানির প্রত্যেক আধিকারীকেই মোটা মাস মাইনে দিলেও মুকেশ আম্বানির নিজে গত তিন বছরে এক টাকাও পারিশ্রমিক নেননি। তবে মুকেশ আম্বানি একা নন তাঁর মতই রিলায়্যান্স থেকে কোন বেতন নেন না তাঁর  স্ত্রী নীতা আম্বানি দুই ছেলে আকাশ এবং অনন্ত সহ মেয়ে ঈশাও।

রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষ পর্যন্ত রিলায়্যান্স থেকে নিয়মিত বেতন নিতেন মুকেশ আম্বানি। ২০০৮-’০৯ থেকে ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষ পর্যন্ত রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকার বার্ষিক বেতন নিতেন তিনি। তবে  করোনা মহামারির সময় থেকেই অর্থাৎ ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে নিজে থেকেই বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আম্বানি।  যা বহাল রয়েছে ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত। আগামী আরও ৫ বছর কোন বেতন নেবেন না মুকেশ আম্বানি ।

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নিয়ম অনুযায়ী, সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভের বয়স সর্বোচ্চ ৭০ হতে পারে। কিন্তু মুকেশ আম্বানি ২০২৯ সাল পর্যন্ত তিনি  তাঁর পদে বহাল থাকলে তাঁর বয়স ৭০ পেরিয়ে যাবে। তাই আম্বানি  যাতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য বিশেষ প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়েছে। সেই প্রস্তাবনা অনুসারে, আম্বানির অনুরোধে তাঁকে ২০২৪ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে ২০২৯ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রস্তাবিত কার্যকালে কোনও বেতন বা লভ্যাংশ-ভিত্তিক কমিশন প্রদান না করার সুপারিশ করছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বোর্ড।

তাই এখন থেকেই রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মালিকানাধীন বিভিন্ন সংস্থার রাশ তিন সন্তানের কাঁধে তুলে দিয়েছেন আম্বানি। মেয়ে ঈশাকে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর রিটেলের দায়িত্ব দিয়েছেন মুকেশ। এছাড়া ছেলে আকাশ হয়েছেন টেলিকম সংস্থা জিয়ো ইনফোকম লিমিটেডের চেয়ারম্যান। আর অন্যদিকে অনন্ত হয়েছেন রিলায়্যান্স এনার্জির প্রধান।

বিওডি বৈঠকে যোগদানের জন্য আম্বানির উত্তরসূরিদের জন্য একটি মোটা অঙ্কের ভাতা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সংস্থার অর্জিত মুনাফার উপর ‘সিটিং ফি’ এবং কমিশন। ২০১৪ সালে স্ত্রী নীতাকে রিলায়্যান্স পরিচালন পর্ষদের সদস্য করেছিলেন মুকেশ। ২০২২-’২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ছ’লক্ষ টাকা ‘সিটিং ফি’ এবং দু’কোটি টাকা কমিশন পেয়েছেন নীতা।

এখানে বলে রাখি নিজের এবং পরিবারের জন্য বেতন না নিলেও রিলায়্যান্সের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর পদে আসীন দুই তুতো ভাই নিখিল মেসওয়ানি এবং হিতল মেসওয়ানি-সহ অন্য উচ্চপদস্থ কর্মীদের মোটা বেতন এবং ভাতা বরাদ্দ করেছেন আম্বানি। বেতন, কমিশন এবং অন্যান্য ভাতা মিলে রিলায়্যান্স গোষ্ঠী থেকে বছরে ২৫ কোটি টাকারও বেশি উপার্জন করেন নিখিল এবং হিতল।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *