সূর্যগ্রহণ

বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো। দেখতে দেখতে এসে গিয়েছে  মহালয়া, এই মহালয়াকেই দুর্গাপুজোর ‘গৌরচন্দ্রিকা’ বলা যায়।  মহালয়ার দিনেই এ এবছর ঘটতে চলেছে এক বিরল ঘটনা। ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো এই শনিবার এই বিরল সূর্যগ্রহণ ঘটতে  চলেছে আমেরিকার। যা চলতি বছরের সর্বশেষ সূর্যগ্রহণ। এই  সূর্যগ্রহণকে ‘রিং অফ ফায়ার’ বলা হয়।  এই সূর্যগ্রহণে আংশিক দৃশ্য দৃশ্যমান হবে। ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদন অনুসারে এই শনিবার চাঁদ সূর্যের সামনে অবস্থান করবে। এই কারণেই বেশিরভাগ অংশই অদৃশ্য হলেও একটি দর্শনীয় বৃত্ত বা বলয় দেখা যাবে।

চাঁদ যখন পৃথিবী থেকে তার দূরতম বিন্দুতে সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝখানে চলে যায়,সেই সময় এই বৃত্তাকার সূর্যগ্রহণ ঘটে। এই কারণে চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে রাখতে পারেনা। যার কারণে আকাশে সূর্যের আলোর একটি পাতলা বৃত্ত বা ‘আগুনের বলয়’ দেখা যায়। সূর্যগ্রহণ তখনই হয় যখন চাঁদ পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি থাকে। সে সময় চাঁদ পৃথিবীর এত কাছে থাকে যে এটি আকাশে সূর্যের মতো বড় দেখায়, তখনই সম্পূর্ণরূপে সূর্যগ্রহণ ঘটে।মার্কিন যুক্ত যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো এবং দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার অনেক দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পশ্চিম গোলার্ধে এই বিরল ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছেন।  মহালয়ার দিন অর্থাৎ ১৪ই অক্টোবর ওরেগন উপকূল থেকে টেক্সাস উপসাগরীয় উপকূলে একটি আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।

রিং অফ ফায়ার অর্থাৎ বলয় আকার সূর্যগ্রহণ ভারত থেকে দেখা যাবে না। তাই ভারত এবং অন্যান্য দেশের মানুষরা এই সূর্যগ্রহণ বাড়িতে বসেই নাসার ব্রডকাস্ট চ্যানেলে দেখতে পাবেন। এই সূর্য গ্রহণ ১৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে চারটা থেকে অনলাইনে দেখা যাবে। বলয় আকার এই সূর্যগ্রহণ  কোস্ট অফ অরেগন থেকে টেক্সাস গল্ফ কোস্ট পর্যন্ত হবে। নাসার তথ্য অনুযায়ী আবহাওয়া ভালো থাকলে বৃত্তাকার সূর্যগ্রহণকে ওরেগন, নেভাদা, উটাহ,নিউ ম্যাক্সিকো এবং টেক্সাসের সঙ্গে -কেলিফোর্নিয়া, ইদাহো, কোলেরাডো এবং অ্যারিজোনার কিছু অংশ থেকে কিছু দেখা যেতে পারে। তার পরেই মেক্সিকো, সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং সাউথ আমেরিকা থেকে দেখা যাবে।  গ্রেট আমেরিকান অ্যাকলিপস ওয়েবসাইট অনুসারে, এই সূর্যগ্রহণের  সূর্যাস্ত হবে আটলান্টিক মহাসাগরে। নাসার তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই সূর্য গ্রহণের গড় সময় হবে চার থেকে পাঁচ মিনিট।

 

তবে আগামী শনিবার অর্থাৎ মহালয়ার দিন বছরের এই দ্বিতীয় সূর্যগ্রহণ এর সাক্ষী হতে পারবেন না ভারতীয়রা। ভারতে এই সূর্যগ্রহণ দেখা না যাওয়ায়  এদেশে এর কোন প্রভাব পড়বে না। আশ্বিনের অমাবস্যাকে অনেকেই সর্বপিতৃ অমাবস্যা বলেন। জ্যোতিষমতে এমন শুভ দিনে গ্রহণ পড়ায়, ভারতে তার কোনো  প্রভাব নেই। মহালয়ার দিন ১৪ অক্টোবর রাত ৮.৩৪ মিনিট থেকে এই গ্রহণ শুরু হবে। আর তা শেষ হবে মধ্য রাত্রি ২.২৫ মিনিটে। এই দিন আকাশের দিকে তাকালে  সূর্যকে কঙ্কণ বা চুড়ির মতো  দেখতে  লাগে। এই কারণেই এই ধরনের গ্রহণকে ‘কঙ্কনাকৃতি সূর্যগ্রহণ’ও বলা হয়।

কোন রাশি ও নক্ষত্রে সূর্য গ্রহণ?

এই সূর্য গ্রহণ কন্যা রাশি ও চিত্রা নক্ষত্রে লাগবে। তাই এই রাশি ও নক্ষত্রের জাতকদের জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। জ্যোতিষ অনুযায়ী এই জাতকরা শরীরে শক্তির অভাব অনুভব করবেন। বিশেষত কন্যা রাশির জাতক-জাতিকাদের চোখের সমস্যা হতে পারে। জ্বর, অ্যালার্জির সমস্য়াও ভোগাতে  পারে।

 


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *