আমাদের সমাজে নারী পুরুষের দ্বন্দ্ব এবং ভেদাভেদ বহুদিনের। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের মধ্যে কারা বেশি কথা বলে? এমন যদি কোনো প্রতিযোগিতা হয় এমন যদি কোন প্রতিযোগিতা হয় তাহলে এই প্রতিযোগিতায় কে জিতবে তা নিয়েও রয়েছে বেশ কিছু ভিন্ন মতবাদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় ছেলেদের থেকে মেয়েরা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি বকবক করে। এই ধারণাই প্রচলিত রয়েছে বহুদিন ধরেই। এইকথার কোনো অকাট্য যুক্তি নেই। কিন্তু বাস্তব জীবনের সেই প্রতিচ্ছবিই দেখা যায় বড় পর্দাতেও।
ছেলে নাকি মেয়ে কারা বেশি কথা বলে তার জবাব খুঁজতেই এক সমীক্ষা চালিয়েছিল নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ডেভিড লেজার আর তাঁর সহযোগীরা। ১৩৩ জন প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছিলেন তাঁরা। সামাজিক বার্তালাপের এই গণনার জন্য সম্প্রতি মোবাইল ফোনের মত সোশিওমিটার নামে ছোটখাটো একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল ।
যার ফলাফল বলছে ছেলেরা নাকি মেয়েরা কারা বেশি কথা বলেন, তা পুরোটাই নির্ভর করে পরিস্থিতির উপরে। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে,দুপুরের খাবার খাওয়ার সময়ে মেয়েরা নাকি কম কথা বলেন।কিন্তু যদি কোনও শিক্ষামূলক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়,তখন নাকি মেয়েরাই বেশি কথা বলেন। যদিও আলোচনা পরিচালনার রাশ থাকে শুধুমাত্র ছেলেদের হাতে।
লেজার এই বিষয়ে প্রথম এই ধরনের সমীক্ষা করলেও ছেলে-মেয়েদের মধ্যেকার এই দ্বন্দ কিন্তু অনেক পুরনো। ইতিপূর্বে একাধিক বইতে এই বিষয়ে একাধিক পরিসংখ্যান দেখা গিয়েছে। অতীতে ১৯৯৩ সালের এক ম্যারেজ কাউন্সিলের প্যামফ্লেট থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী মেয়েরা দিনে ২০ হাজার শব্দ উচ্চারণ করলেও , ছেলেরা বলেন মাত্র ৭ হাজার শব্দ। যদিও ওই ম্যারেজ কাউন্সিলরকে সনাক্ত করা যায়নি।
তার কয়েক বছর পর অর্থাৎ, ২০০৭ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী মেয়েরা দৈনিক ১৬,২১৫ টা শব্দ উচ্চারণ করেন, আর ছেলেরা ১৫৬৬৯-টা। এখানে খুব একটা বড় তফাত চোখে পড়ছে না। আবার ২০০৪ সালের এক পরিসংখ্যান বলছে ক্লাসে মেয়েরা বেশি কথা বলেন, তো ওই সালেরই আরেক পরিসংখ্যানের দাবি ক্লাসে বেশি কথা বলেন ছেলেরা।
আবার, ২০০৭ সালের এক পরিসংখ্যান বলছে মেয়েরা দৈনিক ১৬২১৫টা শব্দ উচ্চারণ করেন আর ছেলেরা ১৫৬৬৯টা। এখানে খুব একটা বড় তফাত চোখে পড়ছে না। ২০০৪ সালের অনুযায়ী পরিসংখ্যান অনুযায়ী ক্লাসে মেয়েরা বেশি কথা বলে। যদিও বিরোধিতা করে ওই সালেরই আরও এক পরিসংখ্যানের দাবি ক্লাসে বেশি কথা বলেন ছেলেরা।
তাহলে কি শেষমেশ বহুচর্চিত বিবাদের অবসান ঘটল? এক্ষেত্রে লেজারের বক্তব্যের রেশ ধরেই বলা যায় ছেলে নাকি মেয়ে কারা বেশি কথা বলেন পুরোটাই নির্ভর করে পরিবেশ এবং পরিস্থিতির উপরে।
Leave a Reply