তৃতীয় চন্দ্র অভিযান

ভারতের তৃতীয় চন্দ্র অভিযানে থাকা ইসরোর বিজ্ঞানীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে জানেন? জানেন তৃতীয় চন্দ্র অভিযানের নেপথ্য নায়কদের ঝুলিতে কী কী ডিগ্রি রয়েছে জানেন? একটি নয় একাধিক ডিগ্রীধারী ইসরোর বিজ্ঞানীদের কেউ পেয়েছেন সোনার পদক তো কারও রয়েছে রেকর্ড করা পরীক্ষার রেজাল্ট। আসুন জানা যাক বিস্তারিত।

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে গত ২৩ অগস্ট ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। ওই দিনেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করেছে ভারতীয় চন্দ্রযান-৩। ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চাঁদের বুকে অভিযান চালিয়ে সালফার, অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালশিয়াম-সহ একাধিক যৌগের হদিস পেয়েছেন । কিন্ত আপনি কি জানেন এই সফল চন্দ্র অভিযানের মূল হর্তাকর্তা যাঁরা, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী?

এস সোমনাথ:
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ হলেন এই মিশনের অন্যতম মূল কান্ডারি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মহাকাশ বিভাগের সচিব তিনি। কেরলের কোল্লামের টিকেএম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাশ করার পর বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। পরবর্তীতে স্ট্রাকচার, ডায়নামিকস, কন্ট্রোলে স্পেশালাইজ়েশন করেছেন। নিজের কৃতিত্বের জন্য পেয়েছেন সোনার পদকও।

এম শঙ্করন:
চন্দ্রযান ৩ অভিযানে বিরাট অবদান রয়েছে ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারের ডিরেক্টর এম শঙ্করনের। তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লির ভারতীদসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তর পাশ করার পর ইসরো স্যাটেলাইট সেন্টারে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটিই ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টার নামে পরিচিত।

ভি নারায়ণ:
এই সফল চন্দ্রাভিযানের আরও এক নেপথ্য নায়ক হলেন লিকুইড প্রোপালশন সিস্টেমস সেন্টার (এলপিএসসি)-এর ডিরেক্টর ভি নারায়ণ। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বিশেষজ্ঞ ভি নারায়ণ খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তন ছাত্র। ১৯৮৯ সালে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমটেক করে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। যার জন্য পেয়েছিলেন পদকও। এছাড়া এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গবেষণা করে পিএইচডি করেন নারায়ণ। তিনি ইসরোয় যোগ দিয়েছেন ১৯৮৪ সালে। তাঁর কৃতিত্বের জন্য অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া তাঁকে সোনার পদক দিয়েছে। চেন্নাইয়ের সত্যভামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পেয়েছেন সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি।

এস উন্নিকৃষ্ণণ নায়ার:
ইসরোর তৃতীয় চন্দ্র অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলেন এস উন্নিকৃষ্ণণ নায়ার। বিক্রম সারাভাই মহাকাশ কেন্দ্রের ডিরেক্টর তিনি। এছাড়াও তিরুঅনন্তপুরমের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইএসটি)-রও ডিরেক্টর তিনি । কেরল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক পাশ করে বেঙ্গালুরুর আইআইএসসি থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন নায়ার। শুধু তাই নয় আইআইটি মাদ্রাজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডিও করেছেন উন্নিকৃষ্ণণ। টেলিকমিউনিকেশন এবং স্পেস ল-তেও রয়েছে স্নাতকোত্তর ডিগ্র ।

পি ভিরামুথুভেল:

চন্দ্রযান-৩-এর প্রোজেক্ট ডিরেক্টর হলেন পি ভিরামুথুভেল। ছোট থেকেই ভীষণ মেধাবী ছাত্র ছিলেন ভিরামুথুভেল। ভিল্লুপুরমের রেলওয়ে স্কুলে পড়াশোনা শেষ করার পর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাশ করেন তিনি। এর পর অন্য একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে আইআইটি মাদ্রাজ থেকে পিএইচডি করেন তিনি।

কল্পনা কলাহস্তি:
চন্দ্রযান-৩-এর ডেপুটি প্রোজেক্ট ডিরেক্টর কল্পনা কলাহস্তিও এই মিশন সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আদতে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা কল্পনাতে। আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তনী। সেখান থেকে এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাশ করার পর মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেক্ট্রনিক্স এবং কমিউনিকেশনে বিটেক করেন তিনি। এই বিজ্ঞানীদের কৃতিত্বেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে চন্দ্রযান-৩।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *