আমাদের দেশের নেতা মন্ত্রীদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের অন্ত নেই। তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে টাকা-পয়সা, কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আমজনতার কৌতূহল আজকের নয়। রাজনীতির সাথে যুক্ত মানেই শিক্ষাগত যোগ্যতা কম। আসলে বহুদিন ধরেই নেতা মন্ত্রীদের নিয়ে আমজনতার মনে এই ভুল ধারণা রয়েছে। রাজনৈতিক সভায় দেওয়া ভাষণ এবং সেখানে করা তাঁদের মন্তব্যকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও হামেশাই চলতে থাকে হাসিঠাট্টা। সেই সূত্রেই অনেকেই প্রশ্ন তোলেন তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে।
কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষেরই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক ধারণাই নেই। জানলে অবাক হবেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে দিল্লি কিংবা মহারাষ্ট্র একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাই হলেন উচ্চশিক্ষিত। কেউ এলএলবি তো কেউ প্রাক্তন প্রফেসর আবার কেউ যুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে। আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা রীতিমতো অবাক করার মত। আসলে এই সমস্ত নেতা-মন্ত্রীরা ছোট থেকেই ছিলেন দারুন মেধাবী। তাই রাজনীতিতে না এলে তারা আজ হয়তো কোন বড় সংস্থায় কোনো উঁচু পোস্টের চাকরি করতেন। অথবা কেউ নিজের ব্যক্তিগত সংস্থা খুলে ফেলতেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে।
মমতা বন্দোপাধ্যায়: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কে না চেনেন। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতাও বেশ অবাক করার মতোই। বিএ পাশ করার পর এমএ-ও কমপ্লিট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। পরে তিনি বিএড করে এলএলবিও করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিয়াল: ভারতীয় রাজনীতির জগতে অত্যন্ত সুপরিচিত একটি নাম হল অরবিন্দ কেজরিবাল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ ছোট থেকেই দারুণ মেধাবী ছিলেন পড়াশোনায়। খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তন ছাত্র তিনি। সক্রিয় রাজনীতিতে আসার আগে ভারতীয় রেভিনিউ সারভিস অফিসার হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
দেবেন্দ্র ফড়নবীশ: শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়ে পিছিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশও। এলএলবি তে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা, বিসনেস ম্যানেজমেন্ট, বার্লিন ডিএসইর প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ছিলেন ভারতের বিখ্যাত এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও।
নীতিশ কুমার : বিহারের দাপুটে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার রাজনীতির পাশাপাশি পড়াশোনাতেও ছিলেন তুখোড়। সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। পরবর্তীতে রাজনীতিতে এসেও দারুণভাবে সফল হয়েছেন তিনি।
শিবরাজ সিং চৌহান: মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীশিবরাজ সিং চৌহানের শিক্ষাগত যোগ্যতাও বেশ উচ্চমানের। ছাত্রজীবনে তিনি দর্শন নিয়ে এমএ করেছিলেন। স্বর্ণপদক বিজয়ী আমাদের দেশের এই মুখ্যন্ত্রী রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন একজন দক্ষ কৃষিবিদ।
বসুন্ধরা রাজ : তালিকায় রয়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজও। পড়াশোনার প্রতি নিদারুণ আগ্রহই ছোট থেকে তাঁকে পড়াশোনায় মেধাবীকরে তুলেছিল। ছাত্রজীবনে ইকনোমিক্স ও পলিটিক্যাল সায়েন্সে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে তারপরেই তিনি পা রেখেছেন রাজনীতির ময়দানে।
মুকুল সাংমা: মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমাও কিন্তু পড়াশোনার দিক দিয়ে কম যান না। এমবিবিএস পাশ করার পর একজন স্বাস্থ্য আধিকারিক হিসাবেও কাজ করে ছিলেন তিনি। যদিও সব ছেড়ে পরবর্তীতে স্বেচ্ছায় তিনি নাম লিখিয়েছেন সক্রিয় রাজনীতিতে।
রমেন সিং: পিছিয়ে নেই ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ড. রমেন সিং-ও। মুখ্যমন্ত্রীর মতো গুরু দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তার। ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য রমেন সিং-এর মূল লক্ষ্যই সাধারণ মানুষের সেবা করা।
Leave a Reply