বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য

আপনি কি জানেন বদলে গিয়েছে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের তালিকা? নতুন তালিকার শুরুতেই রয়েছে কোন স্থাপত্য জানেন? ভারত থেকে  জায়গা পেল কোন স্থাপত্য জানেন? নাম জানলে গর্বে মাথা উঁচু হবে প্রত্যেক ভারতীয়র।

আট থেকে আশি বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য নিয়ে আগ্রহ রয়েছে ছোট-বড় সকলেরই। তাই ছোটবেলায় ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে পড়া এই  ঐতিহাসিক এই নিদর্শন গুলি নিজের চোখের সামনে দেখার ‘লোভ’ রয়েছে কমবেশি সকলেরই। সকলেরই ইচ্ছা থাকে জীবনে অন্তত একবার হলেও পৃথিবীর এই সপ্তম আশ্চর্য নিজের চোখে দর্শন করা। যুগান্তকারী স্থাপত্যকীর্তির এই নিদর্শনগুলিকে একবার হলেও চোখের দেখার জন্যই বছর বছর  পৃথিবীর দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য পর্যটক।

কিন্তু এই সপ্তম আশ্চর্যের তালিকা কিন্তু সবসময় এক থাকেনি, পরিবর্তনও হয়েছে তালিকায়। তাই প্রাচীন যুগের অনেক কিছুই বাদ দিয়ে অনেক নতুন স্থাপত্য নিদর্শন জায়গা করে নিয়েছে এই তালিকায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সুইজারল্যান্ডের একটি সংস্থা পুরনো সপ্তম আশ্চর্যের তালিকা নতুন করে তৈরি করার উদ্দেশ্যেই ২০০০ সালে  একটি তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছিল।  যা শেষ হওয়ার পর নতুন সপ্তম আশ্চর্যের তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৭ সালে।

পৃথিবীর এই নতুন সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় একেবারে শীর্ষ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে দিল্লির আগ্রার তাজমহল। যা নিঃসন্দেহে প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। দুধ সাদা মার্বেলে তৈরি এই অপূর্ব স্মৃতি সৌধ আজও বিস্ময় সৃষ্টি করে বিশ্ববাসীর মনে। পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই বিশেষ স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করেছিলেন। মমতাজের মৃত্যু হয়েছিল ১৬৩১ সালে।

আর তার পরের বছরেই প্রিয় পত্নীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন শাহজাহান। তার জন্য সম্রাট শাহজাহান পশ্চিম এশিয়া থেকে নিয়ে এসেছিলেন বিখ্যাত সব কারিগরদের। ১৬৩২ সাল থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর তাজমহল তৈরির কাজ শেষ হয়েছিল ১৬৫৩ সালে। তাজমহলের মধ্যেই রয়েছে মমতাজ এবং শাজাহান দুজনের সমাধি।

বিশ্বের এই সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর রিও ডি জেনিরোতে অবস্থিত ক্রাইস্ট দ্য রেডিমারের মূর্তি। যা তৈরি করতে খরচ হয়েছিল প্রায়২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যদিও এই অর্থের পুরোটাই অনুদান হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছিল।  মাউন্ট কর্কোভাডো পর্বতের কোলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা এই মূর্তিটির উচ্চতা ১৩০ ফুট।

এরপরেই সপ্তম আশ্চর্যের পুরনো ও নতুন দুই তালিকাতেই জায়গা করে নিয়েছে গ্রেট ওয়াল অফ চায়না বা চীনের বিখ্যাত প্রাচীর। বৈদেশিক আক্রমণ আটকাতে খ্রীস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে কুন ও মিং রাজবংশের তরফে এই প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল। জানলে অবাক হবেন বিশ্ব বিখ্যাত ওই পাঁচিলটির দৈর্ঘ্য প্রায় প্রায় ৮ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার।

ঐতিহাসিক এই নিদর্শনগুলি তালিকায় নতুন পুরনো উভয় ক্ষেত্রেই জায়গা করে নিয়েছে রোমান কলোসিয়াম। যা প্রকৃতপক্ষে রোমান সম্রাটদের দ্বারা নির্মিত একটি স্টেডিয়াম। এখানে প্রতিযোগীদের ক্ষুধার্ত সিংহের সাথে লড়াই করতে হতো। এছাড়াও এই তালিকায় জায়গা পেয়েছে পেরুর মাচু পিচু, মেক্সিকোর চিচেন ইটজা ও জর্ডনের পেট্রা। এছাড়া বিস্ময়কর এই সৃষ্টির তালিকায়  অষ্টম আশ্চর্য হিসেবে জায়গা পেয়েছে বিশ্ববিখ্যাত  পানামা খাল। একসময় এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান কিংবা মিশরের গিজার পিরামিড। যদিও বর্তমানে এই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির কোনটারই অস্তিত্ব নেই।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *