উলুধ্বনি

হিন্দুদের যে কোন শুভ অনুষ্ঠান তা সে পুজো পাঠ হোক কিংবা বিয়ে,অন্নপ্রাশন, অথবা পৈতের মতো মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান সবেতেই উলুধ্বনি দেওয়া অপরিহার্য। উলুধ্বনি ছাড়া হিন্দুদের যে কোন শুভ কাজ এক কথায় অসম্পূর্ণ। কিন্তু এখনকার যুগে অনেকেই মনে করেন এটা শুধু সংস্কার মাত্র। যার ফলে এখনকার দিনে উলুধ্বনি দেওয়ার প্রচলন টাই কমে গিয়েছে। তাই এখনকার দিনে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা বাড়ির শুভ কাজগুলি এই উলুধ্বনি ছাড়াই সম্পন্ন করেন।

অথচ খোঁজ নিলে জানা যাবে যে এই উলুধ্বনি শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের মানুষদের প্রচলিত প্রথাই নয়, এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু মাহাত্ম্য। বহু মানুষের বিশ্বাস পুজো-অর্চনার মতো মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান কিংবা অন্যান্য যে কোনো শুভ কাজে উলুধ্বনি দিলে তবেই নাকি সন্তুষ্ট করা যায় দেবতাগণকে। তাই এই উলুধ্বনি শুনে সন্তুষ্ট হলে তবেই স্বয়ং ভগবান আশীর্বাদ দেয়। তাই বলা হয় উলুধ্বনি দিলে তবেই যে কোন মঙ্গলময় মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান আরো বেশি মঙ্গলময় হয়ে ওঠে।

উলুধ্বনি দেওয়ার সুফল:

১) পুজো-পার্বনে ঠাকুর দেবতার আরাধনায় কিংবা অন্যান্য আনন্দ অনুষ্ঠানে উলুধ্বনি দিতেই আমাদের আশপাশের পরিবেশ যেন পবিত্র হয়ে ওঠে।

২) উলুধ্বনিতে চারদিক মুখরিত হতেই বাড়ি থেকে সব অশুভ শক্তি দূর হয়ে যায়।

৩) প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই উলু ধ্বনিই নাকি সমস্ত অশুভ শক্তির নাশ করে শুভ শক্তিকে বাড়িতে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। ফলে সেই বাড়ির সদস্যরা দ্রুত নিজেদের কাজে সফল হয়।

৪) উলুধ্বনি বাতাসে যে কম্পন সৃষ্টি করে তাতে পরিবেশ জীবাণুমুক্ত হয়।

ছেলেরা কেন হলুদ ধ্বনি দেয় না?

ছোট থেকেই আমরা দেখে আসছি বাড়ির পুজো কিংবা যেকোনো শুভ অনুষ্ঠানে মেয়েরাই বেশিরভাগ সময় উলুধ্বনি দিয়ে থাকেন। কিন্তু ছেলেরা উলুধ্বনি দিতে পারে না, কারণ এই উলুধ্বনি হলো একটি বিশেষ ধরনের স্ত্রী আচার। তাই কম-বেশি বিভিন্ন বা বয়সী মহিলারাই শুধু এই গুণের অধিকারী হয়ে থাকেন। তাছাড়া বহু দিনের প্রচলিত বিশ্বাস মহিলাদের সমবেত উলুধ্বনিতেই নাকি দেবতারা অনেক বেশি সন্তুষ্ট হন।

তবে মেয়েদের উলুধ্বনি দেওয়ার পিছনেও রয়েছে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক বিশেষ কারণ। বলা হয় এই উলু ধ্বনি দেওয়ার ফলে মেয়েদের পেট সঙ্কুচিত হয় এবং এর ফলে নানা প্রকার স্ত্রীরোগ নির্মুল হয়।

 


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *