রঙিন সর্তকতা

পুজোর আগেই কার্যত বানভাসি গোটা বাংলা। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ আর সেই সাথে রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত যার ফলে দফায় দফায় একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছে রাজ্যের একাধিক জেলায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করতে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন রঙের রঙিন সর্তকতা জারি করে মৌসম ভবন। ভারী বৃষ্টি শুধু নয় পাশাপাশি তুষারপাত কিংবা ধুলো ঝড় বোঝাতেও কখনও লাল-কমলা আবার কখনও হলুদ রঙয়ের মধ্যে দিয়ে রঙিন সতর্কতা জারি করে মৌসম ভবন।

কিন্তু এই রং গুলির অর্থ কি? তা হয়তো জানেন না অনেকেই। আসলে এই রং গুলির ওপরেই নির্ভর করে আবহাওয়া খারাপ নাকি ভালো? সবুজ,হলুদ, কমলা এবং লাল মূলত এই চার রঙের সতর্কতা জারি করে মৌসম ভবন। এই প্রত্যেকটি রঙের রয়েছে নির্দিষ্ট সংকেত। যা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হয়। কতটা দুর্যোগ হতে পারে তার ওপর ভিত্তি করেই মূলত এই রঙিন সর্তকতা জারি করা হয়। সর্বোচ্চ পাঁচ দিনের জন্যই নাকি এই সতর্কতা বৈধ থাকে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল কিভাবে জারি করা হয় এই সর্তকতা?

সবুজ সংকেত- মৌসুম ভবন সূত্রে খবর পরবর্তী ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিপাত যদি ৬৪ মিলিমিটারের কম হয় তাহলে তা বোঝাতে সবুজ সংকেত সর্তকতা জারি করা হয়।

হলুদ সংকেত- পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৬৪.৫ মিলিমিটার থেকে ১১৫.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে হলুদ সংকেত দিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়।

কমলা সংকেত- পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১১৫.৬ মিলিমিটার থেকে ২০৪.৪ মিলিমিটার হলে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়।

লাল সংকেত- বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় যদি ২০৪.৫ মিলিমিটারের বেশি হয়, তাহলে লাল সংকেত দিয়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়। মূলত অঞ্চল ভেদে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করতেই এই রঙিন সংকেতের সতর্কতা জারি করা হয়।

ঝড়ের ক্ষেত্রে হাওয়ার গতিবেগের উপর নির্ভর করেই জারি করা হয় এই রঙিন  সতর্কতা। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়  হাওয়ার গতিবেগ বেশি হলে লাল সতর্কতা জারি করা হয়। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায়  রঙিন সতর্কতার মাপকাঠি হল দৃশ্যমানতা। দৃশ্যমানতা যত কমবে তত লাল সতর্কতার দিকে এগিয়ে যাবে। আর দৃশ্যমানতা সবচেয়ে বেশি হলে সবুজ সতর্কতা জারি হবে।অন্যদিকে হাওয়ার গতিবেগ এবং দৃশ্যমানতা এই দুইয়ের মাপকাঠির ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয় ধুলোঝড়ের রঙিন সতর্কতা।

উল্লেখ্য সবুজ সতর্কতা জারি হওয়ার অর্থ আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেও তার জন্য নাগরিকদের সতর্ক থাকার প্রয়োজন নেই। তার চেয়ে একধাপ এগিয়ে থাকা হলুদ সতর্কতা জারির অর্থ, আবহাওয়া খারাপ হলে তার প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনের ওপর। এমনকি আবহাওয়া আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

তার চেয়েও খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয় কমলা সংকেত। এই সময় আবহাওয়া এতটাই বিগড়ে যায়, যার ফলে বিঘ্নিত হতে পারে বাস, ট্রেন, এবং বিমান চলাচলের মতো পরিবহন ব্যবস্থাও। এমনকি বিচ্ছিন্ন হতে পারে বিদ্যুৎ সংযোগও। সবচেয়ে খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য জারি করা হয় লাল সতর্কতা। এইসময় ট্রেন, বিমান সহ অন্যান্য যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা তো থাকেই। পাশাপাশি আশঙ্কা থাকে প্রাণহানিরও।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *