মদ

রোজকার ব্যস্ত জীবনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে অনেকেরই মন চায় নিরিবিলি কোথাও গিয়ে একান্তে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে। এই অবসর যাপনে সমু্দ্রের চেয়ে পছন্দের জায়গা আর কীই বা হতে পারে! সঙ্গে একটু গলা ভেজানো। এক্ষত্রে সবার মনে আসে একটাই জায়গার নাম। তা হল গোয়া। তার পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণও। বিশেষ করে সুরাপ্রেমীদের জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা গোয়া। কারণ গোটা দেশে একমাত্র গোয়াতেই পানীয়ের দাম সব থেকে কম। এমনকি এই রাজ্যে পানীয়ের উপর করও সব থেকে কম।

আমাদের দেশের কোন রাজ্যে পানীয়ের দাম কত? কিংবা রাজস্বই বা কত? তা জানতে একটি সমীক্ষা করেছিল ভারতের আন্তর্জাতিক স্পিরিটস অ্যান্ড ওয়াইন অ্যাসোসিয়েশন।এই সমীক্ষা বলছে, হুইস্কি, রাম, ভোদকা বা জিনের একটি বোতলের দাম গোয়ায় ১০০ টাকা হলে দিল্লিতে হবে ১৩৪ টাকা। একইভাবে হরিয়ানায় হবে ১৪৭ টাকা, উত্তরপ্রদেশে ১৯৭ টাকা, রাজস্থানে ২১৩ টাকা, মহারাষ্ট্রে ২২৬ টাকা এবং তেলঙ্গানায় হবে ২৪৬ টাকা।

এই সমীক্ষা অনুযায়ী গোয়ায় এক বোতল পানীয়ের উপর রাজস্বের পরিমাণ ৪৯ শতাংশ। যা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম। এই কারণেই অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় গোয়ায় মদ অনেক সস্তা। তবে গোয়ার প্রতিবেশী রাজ্য কর্নাটকে পানীয়ের দাম সব থেকে বেশি। এখানে এক বোতল পানীয়ের উপর ৮৩ শতাংশ রাজস্ব থাকে।

পানীয় বিক্রির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের ছবিটা ঠিক কি রকম? পানীয় বিক্রয়কারী সংগঠনগুলি জানিয়েছে, এই রাজ্যের সরকার মদের উপর প্রায় ৭১ শতাংশ রাজস্ব নেয়। বাংলার মতোই একই পরিমাণ রাজস্ব লাগা রয়েছে মহারাষ্ট্রে। তেলঙ্গানায় রাজস্বের পরিমাণ ৬৮ শতাংশ। মরু রাজ্য রাজস্থানে রাজস্বের পরিমাণ ৬৯ শতাংশ। যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে মদের বোতলে রাজস্বের পরিমাণ ৬৬ শতাংশ, দেশের রাজধানী দিল্লিতে রাজস্বের পরিমাণ ৬২ শতাংশ। আর হরিয়ানাতেও ৪৭ শতাংশ রাজস্ব ধার্য করা হয়েছে।

তবে এদিক দিয়ে বিশেষ  দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে গুজরাট আর বিহার। গুজরাটে ১৯৬১ সাল থেকে মদ নিষিদ্ধ। আর বিহারে নীতীশ কুমার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে মদ নিষিদ্ধ করেছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় শুল্কের কারণে এক বোতল বিদেশি স্কচের দাম বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম হয়। তাই দিল্লিতে এক বোতল ব্ল্যাক লেভেল স্কচের দাম ৩,১০০ টাকা হলেও মুম্বইয়ে ওই একই পানীয়ের দাম ৪,০০০ টাকা। আমাদের দেশে বিভিন্ন পণ্য এবং পরিষেবার উপর জিএসটি লাগু হলেও একমাত্র মদ এবং পেট্রোলিয়াম এই জিএসটির আওতায় পড়ে না। এই কারণেই দেশের এক এক রাজ্যে মদের উপর শুল্কের হার এক এক রকম হয়।

তবে বিভিন্ন মহল থেকে ইতিমধ্যেই পেট্রল এবং ডিজ়েলকে জিএসটির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। তাহলে সে ক্ষেত্রে সব রাজ্যে জ্বালানির দাম এক হবে। এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হলেও অ্যালকোহলকে জিএসটির আওতায় আনা নিয়ে আপাতত কোনও হেলদোল নেই। তাই মদ গোয়ায় যতটা সস্তা, কর্নাটকে ততটাই দামি। তাই সুরাপানের টানেই গোয়ায় বছর বছর ভীড় বাড়ছে পর্যটকদের।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *