ভারতীয় রেল হল আমাদের দেশের অন্যতম বৃহত্তম গণ পরিবহন ব্যবস্থা। দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে প্রতিদিন সফর করছেন অসংখ্য যাত্রী। এই কারণে ভারতীয় রেলকে দেশের লাইফ লাইন বলেও অভিহিত করা হয়। কম সময়ে, কম খরচে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাওয়ার জন্য সকলেরই একমাত্র ভরসা ভারতীয় রেল। তাই আমাদের প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছেই ভারতীয় রেল হল অত্যন্ত গর্বের একটি পরিবহন ব্যবস্থা। তবে ভারতীয় রেলে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা সম্পর্কে হয়তো জানা নেই অনেকেরই।
প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সুবিধার জন্য নিত্যনতুন পরিষেবা নিয়ে হাজির হয় ভারতীয় রেল। অনেক সময় তা না জেনেই ট্রেনে সফর করেন যাত্রীরা। যার ফলে তারা অজান্তেই বঞ্চিত হন অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে। পুজোর ছুটিতে হোক কিংবা বছরের অন্যান্য সময়ে ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি পেতেই গোটা পরিবার নিয়ে কাছেপিঠে ঘুরতেবেরিয়ে পড়েন ভ্রমণ পিপাসু বাঙালি। ঘুরতে যাওয়ার সময় যে কোনো মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র ভরসা ভারতীয় রেল। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের মতোই এই ধরণের ভ্রমণে সফরসঙ্গী হয় বাড়ির বাচ্চারাও।
তবে ট্রেনে সফর করা এই বাচ্চাদের হাফ টিকিট নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা। সম্প্রতি একটি আরটিআই রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। এই রিপোর্ট বলছে শিশুদের ভ্রমণ সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তন করেই নাকি ভারতীয় রেল গত ৭ বছরে আয় করেছে ২,৮০০ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ সালে রেলের আয় ৫৬০ কোটি টাকা
সম্প্রতি একটি আরটিআই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, বাচ্চাদের টিকিটের নিয়ম পরিবর্তন হওয়ায় ২০২২-২৩ সালে ৫৬০ কোটি টাকা আয় করতে পারে রেল। এমনটাই আশা করছে সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেমস (সিআরআইএস)।
ভারতীয় রেল মন্ত্রক ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ থেকে বাচ্চাদের রিজার্ভেশন টিকিটের ভাড়ার নিয়মে বদল এনেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী ৫ বছর থেকে ১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের আলাদা সিট বুকিং করতে গেলে হাফ টিকিট নয়, সম্পূর্ণ ভাড়া নেবে রেল। তবে এই নিয়ম প্রযোজ্য শুধুমাত্র রিজার্ভেশন কামরাতে আলাদা সিট বুকিংয়ের জন্য। এছাড়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের জন্য আলাদা বার্থ না নিয়ে যদি সেই বাচ্চাকে অভিভাকদের সিটে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলেও অর্ধেক ভাড়া দিতে হবে। প্রসঙ্গত আগের নিয়মে রেল অর্ধেক ভাড়া নিয়েই ৫ থেকে১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের রিজার্ভ বার্থ দিত।
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী CRIS আর্থিক বছর ২০১৬-১৭ থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত শিশুদের দুটি ক্ষেত্রেই ভাড়া সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করেছে। এই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে বিগত সাত বছরে ৩.৬ কোটিরও বেশি বাচ্চা সিট রিজার্ভ না করেই অর্ধেক ভাড়া দিয়ে ভ্রমণ করেছে। অন্যদিকে, ১০ কোটিরও বেশি বাচ্চার জন্য তাঁদের পরিবার আলাদা করে পুরো ভাড়া দিয়েই একটি সিট বুকিং করেছে।
Leave a Reply