জিন্স

এখনকার দিনে শুধু নয়, জিন্স বরাবরই ফ্যাশনে ইন আর অত্যন্ত কম্ফোর্টেবল একটি পোশাক। ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সকলের কাছে জিন্স অত্যন্ত পছন্দের একটি পোশাক। । সহজলভ্য জিন্স দেখতেও যেমন স্টাইলিশ তেমনি ‘ইজি টু ক্যারি’। তাই তাড়াহুড়ো করে কোথাও বেরনোর আগে প্রথমেই মাথায় আসে এই আউটফিটটির কথা। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা তো বটেই আগেকার দিনেও অনেকে চুটিয়ে জিন্স পরতেন। তাছাড়া  জিন্স এমনই একটি আউটফিট, যা কোনও লুকেই তা ফিট হয়ে যায়। তাই অফিসযাত্রীই হোক কিংবা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া সকলের কাছেই জিন্স অত্যন্ত আরামদায়ক একটি পোশাক। ক্যাজুয়াল হলেও এই আউটফিটটি  কিন্তু বেশ ‘কুল’ লুক দিয়ে থাকে ৮ থেকে ৮০ সবাইকেই।

তবে এই জিন্সেই  এমন বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয় আছে যার সম্পর্কে জানেন না অনেকেই। অনেকেই হয়তো খেয়াল করেছেন জিন্সের সামনের পকেটের সাথেই থাকে একটা ছোট পকেট। কিন্তু কেন? তা হয়তো জানেন না অনেকেই। মেয়েদের জিন্সের সাথে ছেলেদের জিন্সের  পার্থক্য কি, কিংবা জিন্সের পকেট গুলিতে কেন ছোট ছোট বোতাম রাখা হয়? আজকের প্রতিবেদনে জানা যাবে সেও সমস্ত অজানা তথ্য।

জিন্সের কটা পকেট থাকে এবং সবচেয়ে ছোট পকেটের বিশেষত্ব:

জিন্সে দুপাশে দুটো পকেট ছাড়াও ব্যাক সাইডে কখনও একটি আবার কখনও দুটি পকেট থাকে। কিন্তু জিন্সের সামনের দিকে ডানদিকের পকেটের উপরেই থাকে আরও একটি ছোটো পকেট। এখন যদিও এই পকেটের তেমন কোনও  প্রয়োজন নেই। কিন্তু একসময় এই পকেটের ব্যবহার ছিল। এই পকেটে একসময় ছোট ঘড়ি রাখা হত। তাই একে বলা হয় ওয়াচ পকেট।

পকেটের উপরে থাকা ধাতব বোতাম

খেয়াল করলে দেখা যাবে, জিন্সের সামনের পকেটগুলোর উপরে থাকে ছোট ছোট বোতাম। যদিও এই বোতামগুলো সেভাবে বোতামের কাজ করে না। তবে এই বোতাম দেখে অনেকেরই কৌতূহল হয়, কেন এই বোতাম দেওয়া হয়ে থাকে?

এই বোতামগুলোর নাম কি?

মেটালের তৈরী এই স্টাড গুলোকে ‘রিভাট’ বলা হয়। সাধারণত লিভাইসের জিন্সে এই ধরনের মেটাল স্টাড থাকে। অন্যান্য় ব্র্যান্ডের জিন্সেও এই মেটাল স্টাড থাকে। লিভাইসের জিন্সেই প্রথম এই ধরনর মেটাল স্টাড দেখা যায়। যদিও এখনকার অনেক ব্র্যান্ডের জিন্সেই এই ধরনের মেটাল স্টাডের ব্যবহার কমে আসছে। অনেক ফ্যাশন এক্সপার্টের মতে আগামীদিনে এই স্টাডের ব্যবহার বন্ধও হয়ে যেতে পারে।

 

কেন এই বোতাম ব্যাবহার করা হয়?

বিগত প্রায় ২০০ বছর ধরে ফ্যাশন দুনিয়া কাঁপাচ্ছে এই জিন্স। জিন্সের প্যান্টে ছোট পকেটের প্রচলন শুরু হয় ১৮২৯ সালে। ওই সময় যে সব শ্রমিকরা কয়লা খনিতে কাজ করতেন তারা প্রায় সবাই জিন্স পরতেন। কিন্তু অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে তাঁদের প্যান্ট তাড়াতাড়ি ছিঁড়ে যেত। বিশেষ করে প্যান্টের সামনে এবং পিছনে চাপ পড়ায় পকেটের কাছেই বেশি ছিঁড়ত। কিন্তু বারবার দামি প্যান্ট কেনারও সামর্থ্য ছিল না শ্রমিকদের।

ওই সময় এক শ্রমিকের স্ত্রী জেকব ডেভিস নামে স্থানীয় এক দর্জির কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিলেন এমন প্যান্ট তৈরি করতে হবে যা কাজ করার সময় সহজে ছিঁড়বে না। তাই পকেট যাতে সহজে না ছিঁড়ে না যায় তাই পকেটের কোণায় ছোট ছোট রিভেট লাগিয়ে দিয়েছিলেন ডেভিস। তাঁর এই আবিষ্কার খুবই কাজে আসে। এই কাজের জন্য শ্রমিকদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। সেসময় জিন্সের নামী সংস্থা ছিল লিভাইস স্ট্রস। তারা ডেভিসকে তাদের সংস্থায় প্রোডাকশন ম্যানেজারের কাজ দেয়। ১৮৭৩ সালে লিভাইসের তরফেও জিন্সের পকেটে তামার রিভেটের ব্যবহার শুরু করে।

ছেলেদের জিন্স মেয়েদের থেকে আলাদা কেন?

ছেলে-মেয়ে উভয়ের জিন্সে পকেট থাকলেও,পকেটের মাপ কিন্তু এক হয় না। মেয়েদের জিন্সের পকেট ছেলেদের জিন্সের পকেটের থেকে অনেকটাই ছোট হয়।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *