মানুষের ভাগ্যের চাকা কখন কিভাবে ঘুরে যায় তা বলা সত্যিই মুশকিল। তাই যেমন মানুষ রাতারাতি কোটিপতি হতে পারেন তেমনি বিশাল বিত্তশালী ব্যক্তিও নিজের দম্ভেই সব খুইয়ে হতে পারে পথের ভিখারীও। তাই কার কখন ভাগ্য কখন বদলায় তা আগে থেকে বলা অসম্ভব।
চোখের সামনে থাকা এমনই এক জলজ্যান্ত উদাহরণ হলেন বেঙ্গালুরুর নাপিত রমেশ বাবু। একসময় অভাব ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। আর আজ তিনিই হয়েছেন কোটিপতি। তাঁর গ্যারেজে রয়েছে কয়েক কয়েকশো নামি দামি গাড়ি। যা হামেশাই টেক্কা দিতে পারে মুকেশ আম্বানি, রতন টাটা, কিংবা গৌতম আদানীর মত ভারতীয় ধনকুবেরদের।
পেশায় নাপিত হলেও ভারতবর্ষে রমেশই হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি দামি গাড়ির কালেকশনের দিক দিয়ে পিছনে ফেলে দিয়েছেন তাবড় শিল্পপতিদেরও। এই পর্যন্ত শুনে জানতে মন চাইছে নিশ্চই রমেশ নাপিত থেকে কোটিপতি হলেন কীভাবে? মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী খবর রমেশের রয়েছে ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের ব্যবসা। বর্তমানে উভয় পেশাতেই দারুণভাবে সফল রমেশ। বর্তমানে তিনি এক জন সফল উদ্যোগপতি। তাঁর নিজস্ব একটি সেলুন রয়েছে। সেইসাথে সামলাচ্ছেন নিজের ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের ব্যবসাও।
তবে আজকের এই সাফল্য কিন্তু রাতারাতি আসেনি তাঁর জীবনে। নানান চোরাই উৎড়াই পেরিয়ে অবশেষে সাফল্য ধরা দিয়েছে তাঁর জীবনে। আদতে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা রমেশের বাবা পি গোপালও পেশায় নাপিত ছিলেন। মাত্র সাত বছর বয়সে পিতৃহারা হন রমেশ। সেসময় ব্যাপক অর্থসংকটে পড়েছিলেন রমেশের গোটা পরিবার।
তাই ওই অল্প বয়সেই পেটের দায়ে সংবাদপত্র বিক্রি করতেন তিনি। কিন্তু তাতে যথেষ্ট পরিমান অর্থ উপার্জন না হওয়ায় নিজের ব্যবসা শুরু করেন রমেশ। তারপরেই সৌভাগ্য ফেরে রমেশের। যা তাঁকে অত্যন্ত সাধারণ এক নাপিত থেকে কোটিপতি বানিয়ে দেয়।
ব্যবসায় ‘লক্ষ্মীলাভ’ হতেই গাড়ি কেনার শখ জাগে রমেশের। যার শুরুটা তিনি করেছিলেন একটি মারুতি ওমনি দিয়ে। পরে ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠতেই একের পর এক বিলাসবহুল গাড়ি কেনা শুরু করেন রমেশ। তাঁর গ্যারেজে রয়েছে মার্সিডিজ় ই ক্লাস সেডান, রোলস রয়েস, বিএমডব্লিউ, জাগুয়ার, বেন্টলের মতো নামী সংস্থার গাড়ি।
জানলে অবাক হবেন রমেশের গ্যারেজে রয়েছে ৪০০টিরও বেশি গাড়ি, সেখানে মুকেশ অম্বানীর রয়েছে মাত্র ১৬৮টি গাড়ি। প্রসঙ্গত গাড়ি সংগ্রহের দিক দিয়ে দেশের আরও এক শিল্পপতি গৌতম আদানিকেও টেক্কা দিয়েছেন রমেশ। কারণ তাঁর কাছে রয়েছে মাত্র ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি।
রমেশের ‘কার রেন্টাল কোম্পানি’-তে কাজ করেন ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী। তাঁর সংস্থার গ্রাহকদের তালিকায় রয়েছে অমিতাভ বচ্চন, সচিন তেণ্ডুলকর, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, কিংবা আমির খানের মতো সেলিব্রেটিদের নাম। এখানেই শেষ নয় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক রমেশবাবুর মোট সম্পত্তির পরিমাণও কিন্তু নেহাত কম নয়, কত? জানা গিয়েছে,তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা।
Leave a Reply