ভারতীয় রেল আমাদের দেশের গর্ব। তাই প্রত্যেক দেশবাসীর কাছেই রেলের মতো ভরসাজনক গণপরিবহন ব্যবস্থা আর দুটো নেই। তাই এমনি এমনিই ভারতীয় রেলকে দেশের লাইফ লাইন বলা হয় না। প্রতিদিন দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছুটে চলেছে অসংখ্য ট্রেন। এখনও দেশের নানান প্রান্তে চলছে রেল নেটওয়ার্ক বিস্তারের কাজ। স্বাধীনতা লাভের আগেই ইংরেজদের হাত ধরে ভারতীয় রেলের যাত্রা শুরু হলেও, স্বাধীনতা লাভের পর থেকে যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন পরিষেবা নিয়ে হাজির হয়েছে ভারতীয় রেল।
তবে রেল সম্পর্কে এমন অনেক অজানা তথ্য রয়েছে যা চোখে পড়লেও সচরাচর খেয়াল করেন না অনেকেই। কিংবা রেলের এমন কিছু নিয়ম রয়েছে যা সম্পর্কে হয়তো অবগত নন অনেকেই। তবে ভারতীয় রেলের এই পরিষেবার মধ্য দিয়ে প্রতিদিন যেমন অসংখ্য মানুষ উপকৃত হচ্ছেন সেই সাথে প্রশ্ন ওঠে ট্রেন লেট নিয়েও। অনেক সময় দেখা যায় নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরেই ট্রেন প্লাটফর্মে ঢোকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় কিছু ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই প্ল্যাটফর্মে ঢুকে যায়।
ট্রেনের গতি কম বেশি হওয়ার পেছনেও বিশেষ কারণ থাকে। তাই অনেকেই জানতে চান কিভাবে এই সময় এবং দূরত্ব ম্যানেজ করা হয়? ভারতীয় রেলে ট্রেনের গতি কমবেশি হওয়ার পিছনে যে আসল কারণ? কি অনেক সময় ট্রেন দ্রুত গতিতে চলে সেই সময়টা কখন? তা নিয়ে রয়েছে অনেকের কৌতুহল। উল্লেখ্য ট্রেন সাধারণত দিন এবং রাত উভয় সময়েই দ্রুত গতিতে চলে। তবে দিনের তুলনায় অপেক্ষাকৃতভাবে রাতেই ট্রেনের গতি অনেক বৃদ্ধি পায়। তার পিছনেও রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ।
প্রথমত দিনের আলোর তুলনায় রাতের অন্ধকারে সিগন্যাল অনেক দূর থেকেও শনাক্ত করা যায়। অনেক দূর থেকেই স্পষ্ট সংকেত দেখতে পারেন ট্রেনের চালক। যার ফলে তিনি ট্রেনের গতি বাড়িয়ে দেন। অন্যদিকে গরমকালের তুলনায় শীতকালে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। কারণ শীতের রাতে কুয়াশার কারণে দূর থেকে কোনো সিগন্যাল দেখা যায় না।
তবে রাতে ট্রেনের গতি বাড়ানোর পিছনে রয়েছে আরও একটি বিশেষ কারণ। এই সময় ট্রেনের ট্র্যাকে যানজট কম থাকে। আসলে দিনের বেলায় ট্র্যাকে মানুষ কিংবা পশুপাখি-জীবজন্তু সবারই আনাগোনা একটু বেশি থাকে। কিন্তু রাতে সে তুলনায় লোকজন অনেকটা কমে যায়। তাই ট্রেনের গতিও স্বাভাবিকভাবে বেশি থাকে। তবে রাতে ট্রেনের গতি বেশি হয় ঠিকই, কিন্তু তাই বলে তা সব ট্রেনের ক্ষেত্রে নয়।
জানা যায় রাতে প্যাসেঞ্জার ট্রেন নয়, শতাব্দি,বন্দেভারত কিংবা সুপারফাস্ট ট্রেনের গতি বেশি থাকে। অনেক সময় ট্রেনের গতি ঘন্টায় এক থেকে দুই কিলোমিটার বেড়ে যায়। আর সেই কারণেই সকালে ট্রেনগুলি নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যায়। কোন নির্দিষ্ট রুটে নয় রাতের দিকে অনেক রুটেই ট্রেন দ্রুতগতিতে চলে। কোনো কোনো ট্রেন ট্র্যাকে প্রতি ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলে, অথচ একই ট্র্যাকে রাতের ট্রেনের গতি বৃদ্ধি পায়।
Leave a Reply