প্রায় বছর তিনেক আগের কথা, করোনা সংক্রমণের জেরে গৃহবন্দী ছিল গোটা বিশ্ব। সেই ভয়াবহ মহামারীর অন্ধকার দিন থেকে বেরিয়ে সবেমাত্র একটু একটু করে মাথা তুলে দাড়িয়েছে আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলি। এরইমধ্যে কেরল রাজ্যে আচমকাই মাথাচাড়া দিচ্ছে নিপা ভাইরাস। ইতিমধ্যে এই জ্বরে মৃত্যু হয়েছে পরপর দুজনের। তারপর থেকেই জারি হয়েছে সতর্কতা। জানা যাচ্ছে কোঝিকোড়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে দুজনের। এছাড়াও সেখানে এই জ্বর নিয়েই ভর্তি রয়েছেন আরো চারজন। তাদের মধ্যে তিন জন শিশু। একজনের বয়স সবে ১০ মাস আর দুজন ৪ ও ৯ বছরের।
নিপা ভাইরাস কী?
এই নিপা ভাইরাস একটি জুনোটিক ভাইরাস, যা প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত, শূকর,কুকুর,কিংবা ঘোড়ার মতো প্রাণীকেই এই ভাইরাস বেশি প্রভাবিত করে। যা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তার থেকে গুরুতর সংক্রমণ হতে পারে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ১৯৯৮-৯৯ সাল নাগাদ এই ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল। জানা যাচ্ছে এই ভাইরাসটির নাম মালয়েশিয়ার সুঙ্গাই নিপা গ্রাম থেকে এসেছে।
নিপা ভাইরাস কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায়?
যদি কেউ নিপা-সংক্রমিত বাদুড়, শূকর এমনকি এতে সংক্রমিত মানুষের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসে তাহলে তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত বাদুড়ের নিঃসরণকৃত লালা মানুষকে সংক্রামিত করতে পারে। এই ভাইরাস প্রাণী থেকেই মানুষের মধ্যে ছাড়ায়, এমনকি মানুষের থেকে মানুষের মধ্যেও সংক্রমণ ঘটে।
নিপা ভাইরাসের লক্ষণ কী কী?
চিকিৎসকদের মতে প্রথমদিকে মূলত মাথাব্যথা,জ্বর,পেশিতে ব্যথা, বমি কিংবা গলাব্যথার মতো লক্ষণ থাকলেও পরে ঝিমুনি ভাব, শ্বাসকষ্টের মতো আরও নানান উপসর্গ দেখা যায়।
নিপা ভাইরাস থেকে বাঁচার প্রয়োজনীয় সতর্কতা
সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে প্রথমেই জল ও সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে ।
শৌচাগারে ব্যবহৃত জামাকাপড় থেকে শুরু করে মগ এবং বালতি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ব্যবহার করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য আধিকারিকদের জারি করা নির্দেশ অনুসারে নিপা-আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃতদেহগুলি সঠিকভাবে পরিচালনা করা উচিত।
যে কোনো ফল খাওয়ার আগে সবসময় ধুয়ে খেতে হবে। মাটিতে পড়ে থাকা অর্ধেক খাওয়া ফল কখনও ছুঁয়েও দেখা উচিত নয়।
কাঁচা খেজুরের রস পান করা যাবে না।
Leave a Reply