ব্যতিক্রমী কিছু যৌন অভ্যাস

যৌনতা যে কোনো মানুষের স্বাভাবিক জীবনের অঙ্গ। এক ঘেয়েমি কাটিয়ে যৌন জীবনকে আনন্দায়ক করে তুলতে হামেশাই নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে মানুষ। বৈচিত্রময় এই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে যেমন খাদ্যাভ্যাস,পোশাক,রুচি, কিংবা ভাষাগত পার্থক্য রয়েছে তেমনই অঞ্চল ভেদে মানুষের কিছু ব্যতিক্রমী কিছু যৌন অভ্যাস। যা সাধারণ সভ্য জগতের মানুষের কল্পনার বাইরে।

পূর্ব পাপুয়া (পাপুয়া নিউগিনি)

পাপুয়া নিউগিনির পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা সাম্বিয়া বা সিম্বারি আঙ্গা উপজাতি। এই উপজাতির মানুষের কাছে যৌনতা একটি সামাজিক প্রথা। এই উপজাতির বালকদের সাত বছর থেকে দশ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও নারীর সঙ্গে মেশা বারণ। এই তিন বছরে সাম্বিয়া বালকদের নাক ও কান ফোটানোর পাশাপাশি সারা শরীরে আঁকা হয় উল্কি। তবে জানলে অবাক হবেন এই তিন বছর সমাজের আদেশে সাম্বিয়া উপজাতির বালকদের প্রতিদিন পান করতে হয় দুর্ধর্ষ যোদ্ধাদের বীর্য। এই বীর্য পান করেই নাকি বালকরাও হয়ে ওঠেন শক্তিশালী যোদ্ধা।

ট্রোবায়ান্ড দ্বীপপুঞ্জ (পাপুয়া নিউগিনি)

ট্রোবায়ান্ডার উপজাতির মানুষরা থাকেন পাপুয়া নিউগিনির অন্তর্গত ট্রোবায়ান্ড দ্বীপমালায়। এখানকার মানুষ কিলিভিলা ভাষায় কথা বলেন। এদের কাছে ‘কুলা’ নামে এক ধরনের ঝিনুকের চকচকে খোলাই হল টাকা। এই কুলার বিনিময়েই জিনিসপত্র দেওয়া-নেওয়া করেন এঁরা। এই উপজাতির ছেলেরা দশ-বারো বছর এবং মেয়েরা পাঁচ ছ’বছর বয়সেই লিপ্ত হয় যৌন সম্পর্কে। এমনকি এই অল্প বয়সেই যৌনসঙ্গী নির্বাচন ও পরিবর্তন করার স্বাধীনতা রয়েছে তাঁদের। শুনতে অবাক লাগলেও ট্রোবায়ান্ডারদের সমাজে যৌনতা নাকি খাবার খাওয়ার মতোই স্বাভাবিক ও বাধ্যতামূলক।

মানগাইয়া দ্বীপ (কুক দ্বীপপুঞ্জ)

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের স্বাধীন দ্বীপমালা হল ‘কুক আইল্যান্ড’। যার দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ ‘মানগাইয়া’। এই দ্বীপের আজব নিয়ম হল ছেলেদের বয়স ১৩ হলেই, গ্রাম থেকে দূরে একটি কুঁড়ে ঘরে মাতৃসম বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে দু’সপ্তাহ ধরে বাধ্যতামূলকভাবে যৌনমিলন করতে হয়। দু’সপ্তাহে,অসংখ্যবার যৌনমিলনের পর আবার গ্রামে ফিরে আসে ওই কিশোর।

কালাশ উপত্যকা (পাকিস্তান)

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত হিন্দুকুশ পর্বতশ্রেণির দুর্গম এলাকায় রয়েছেন কালাশ নামের এক শেতাঙ্গ জনজাতি। এদের দেখতে ইউরোপিয়ানদের মতো। এই কালাশ উপজাতির ছেলেদের বয়স পনেরো হলেই, গ্রীষ্মকালে ভেড়ার পাল দিয়ে উচুঁ পাহাড়ে পাঠানো হয়। পাহাড়ি গুহার দুর্গম পরিবেশে কয়েকমাস কাটিয়ে শীতকাল আসার ওই কিশোর গ্রামে ফিরে আসলে তার সাবালকত্ব লাভ করাকে উদযাপন করার জন্য গ্রামে শুরু হয় ‘বাদুলাক উৎসব’। উৎসবের শেষে ওই কিশোরকে তার পছন্দ করা নারীর সাথে পাঠানো হয় গ্রামের বাইরে একটি বাড়িতে। সেখানেই গোটা শীতকাল চলে উদ্দাম যৌনমিলন।

রাতানাকিরি (কম্বোডিয়া)

কম্বোডিয়ার রাতানাকিরি প্রদেশের বাসিন্দা ক্রেয়াং উপজাতির মধ্যেও রয়েছে এক অদ্ভুত যৌন রীতি। এই উপজাতির কিশোরীরা মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই ইচ্ছামতো চেনা অচেনা যুবকদের সঙ্গে যৌনমিলন করতে পারে। শুধু তাই নয় পছন্দের পুরুষ খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত মেয়েটির বাড়িতেই তৈরী একটি ‘লাভ-হাট’-এ চলতে পারে অবাধ যৌনমিলন। উপযুক্ত জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়ার পর, তার সাথে বিয়ে করেই সারাজীবন কাটাতে হয়।

জাভা (ইন্দোনেশিয়া)

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও বালি দ্বীপের মাঝেই  আছে জাভা দ্বীপ। এই জাভা দ্বীপের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে ‘সেক্স মাউন্টেন’ নামে পরিচিত। এই পাহাড়টির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক অদ্ভুত যৌনসংস্কার। ‘জুমাত পন’ তিথিতে এই পাহাড়ে টানা পঁয়ত্রিশ দিন ধরে হয় ‘পন’ উৎসব। এই উৎসবের সময় যে কোনো অপরিচিত নারী-পুরুষ সাত বার যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারেন। এতে পুণ্য অর্জন করা যায় বলেই এঁদের বিশ্বাস।

ইনিস বিয়েগ (আয়ারল্যান্ড)

আয়ারল্যান্ডের ‘ইনিস বিয়েগ’ দ্বীপে বাস করেন আইরিশ ভাষী প্রায় সাড়ে তিনশ ক্যাথলিক খ্রিস্টান। এঁরা প্রচন্ড কঠোর নিয়ম মেনে জীবনযাপন করেন। এঁরা যৌনতাকে ‘অশুভ’ বলে মনে করেন। শুধুমাত্র সন্তান লাভের জন্য যৌনমিলন করলেও স্বামী স্ত্রীরা সম্পুর্ণ নগ্ন হন না। অন্ধকারের শুধু যৌনাঙ্গ উন্মুক্ত করে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়াই ‘ইনিস বিয়েগ’ দ্বীপের রীতি।

মার্কেসাস দ্বীপমালা (ফরাসি কলোনি)
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ‘মার্কেসাস আইল্যান্ড’এর বাসিন্দা পলিনেশিয়ান উপজাতিদের মধ্যেও রয়েছে একটি আজব রীতি। শুনতে অবাক লাগলেও এখানকার দম্পতিরা নাকি তাঁদের ছেলে মেয়েদের সামনেই যৌনমিলন করে থাকেন।

প্রাচীন মিশর

যৌন সঙ্গম নয় প্রাচীন মিশরের অধিবাসীদের হস্তমৈথুনের প্রতিই ছিল বিরাট আকর্ষণ। প্রচলিত বিশ্বাস থেকেই এখানকার মানুষজন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, হস্তমৈথুন করে বীর্যপাত করতেন নীল নদের জলে। তাঁদের বিশ্বাস ছিল নীল নদের জলে বীর্যপাত করলে নাকি নীল নদের জলের ফসল ফলানোর ক্ষমতা বাড়বে।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *