নামটা যখন শাহরুখ খান, তখন তাঁর তুলনা তিনি নিজেই। ‘পাঠান’ ছবিটি হাজার কোটি টাকার গণ্ডি পেরোতেই যে রেকর্ড তৈরি হয়েছিল এবার তাঁর ‘জাওয়ান’ সিনেমার হাত ধরেই ভাঙছে সেই রেকর্ড। প্রথম দিনেই সেরা ওপেনিং হিন্দি সিনেমার তকমা জুড়েছিল ‘জওয়ান’-এর নামের সাথে। দ্বিতীয় দিনে বিশ্ব জুড়ে ছবিটির মোট সংগ্রহ ২০০ কোটি বলেই অনুমান।
তাই এই মুহূর্তে রীতিমতো নোট বৃষ্টিতে ভিজছে শাহরুখ খানের জওয়ান। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার মিলে ভারতে জাওয়ান ব্যবসা করেছে মোট ১২৭ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষে সংখ্যাটা যে বাড়বে বলাই বাহুল্য। তবে প্রশ্ন উঠছে জাওয়ান বক্স অফিসে হিট হওয়ার পিছনে কি শুধু শাহরুখ ম্যাজিকই রয়েছে? নাকি রয়েছে অন্য কোন বিশেষ কারণ। আসুন দেখা যাক জাওয়ান হিট করার পিছনে থাকা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
ছবির কাস্টিং : শাহরুখ ম্যাজিক ছাড়াও এই সিনেমার উপরি পাওনা ছিল অনান্য সমস্ত চরিত্ররাও। পরিচালক অ্যাটলি কুমারের এই ড্রিম প্রজেক্টের দুর্দান্ত কাস্টিং, এই সিনেমার অন্যতম মূল ইউএসপি। ছবিতে শাহরুখ খানের সাথে দক্ষিণী সুপারস্টার বিজয় সেতুপতির দ্বৈরথ চুটিয়ে উপভোগ করেছেন দর্শক। এছাড়া দীপিকা পাড়ুকোন থেকে সাউথের নয়নতারা, কিংবা শাহরুখের লেডি গ্যাংয়ের প্রিয়ামনি থেকে শুরু করে বাকিরা এককথায় সবাই ছিলেন অনবদ্য। প্রায় শেষ মুহূর্তে এন্ট্রি নিয়ে নজর কেড়েছেন সঞ্জয় দত্তও।
স্ক্রিন প্লে : প্রায় ২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিটের এই সিনেমার জমজমাট স্ক্রিন প্লে এক মুহূর্তের জন্যও চোখ ফেরাতে দেয়নি দর্শকদের। ইন্টারভালের আগে থেকে পরে টুইস্টে ভরপুর সিনেমার প্রতি মুহূর্ত মন ভরিয়ে দিয়েছে দর্শকদের। তাই বলতেই হয় গল্পের এত সুন্দর বুননের জন্য ‘স্ক্রিন প্লে’-তে জওয়ান দশে দশ।
নানা রূপে ‘জওয়ান’ শাহরুখ: এই সিনেমার পরিচালক অ্যাটলি কুমার নিজেই একজন বড় শাহরুখ ভক্ত। তাই তিনি সিনেমার প্রতিটি দৃশ্যেই খুব ভালোভাবেই ব্যবহার করেছেন কিং খানের ‘হিরোইজম’ কে। এই সিনেমায় শাহরুখ খান মোট ১১ টি অবতারে ধরা দিয়েছেন। যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। ছবিতে শাহরুখ বাবা-ছেলের দ্বৈত চরিত্রে অভিনয়নয় করেছেন। এই বয়সে এসেও সিনেমার প্রতিটা দৃশ্যের জন্য প্রতি মুহূর্তে নিজেকে নতুন করে ভেঙেছেন কিং খান। সিনেমায় তাঁর চরিত্রটিকে আলাদা মাইলেজ দিয়েছে টাক মাথার মেকআপও।
দুর্দান্ত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক : এই সিনেমার সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তরুণ সংগীত পরিচালক অনিরুদ্ধ। যদিও সিনেমা মুক্তির আগে গানগুলি খুব একটা ছাপ ফেলতে পারেনি। তবে সেই খামতি তিনি পুষিয়ে দিয়েছেন সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিয়ে। তাই শাহরুখ খান যে এমনি এমনিই এই ‘শাইনিং স্টার’-এর পিছনে ১০ কোটি টাকা খরচ করেননি তা বুঝতে হলে অবশ্যই যেতে সিনেমা হলে।
সামাজিক বার্তা: আগেই বলেছি গোটা সিনেমা জুড়ে শাহরুখ খানকে দেখা গিয়েছে একাধিক অবতারে। এমন অনেক্ষেত্রেই আড়ালে থেকে সাধারণ মানুষের মাসিহা হয়ে কাজ করেছেন সমাজ কল্যাণে। সেই সাথে সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক অরাজকতার বিরুদ্ধে। সিনেমায় জন সাধারণের হয়ে করা শাহরুখের প্রশ্নগুলি সামাজিক বার্তা তো দেবেই সেইসাথে সোজা এসে বুকে বিঁধবে দর্শকদের।
Leave a Reply