নতুন প্রকল্প

সামনেই আসছে পুজো। আর তারপরেই পাখির চোখ ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। এই অবস্থায় একেবারে দিলখোলা মুখ্যমন্ত্রী।সবাইকে চমকে দিয়ে পুজোর আগেই এবার রাজ্যবাসীকে বিরাট উপহার দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রাজ্যবাসীর জন্য আরও এক নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কাউকে দু’লক্ষ আবার কাউকে এক লক্ষ অথবা কাউকে ৫ হাজার বা ৩ হাজার করে টাকা দিচ্ছেন।

যা শোনার পর থেকে একেবারে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠেছেন রাজ্যবাসী। চাইলে আপনিও মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারেন।  কিন্তু কিভাবে? সেই সম্পর্কেই তুলে ধরা হচ্ছে আজকের প্রতিবেদনে। ইতিমধ্যেই  রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী কিংবা লক্ষী ভান্ডার এর মতো প্রকল্প দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে।

আর এবার রাজ্যবাসীদের মধ্যে অনেককেই সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে একটি  নতুন প্রকল্প। এই নতুন প্রকল্পে প্রথমবারের জন্য নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ পাচ্ছে রাজ্যবাসী। প্রসঙ্গত ১ সেপ্টেম্বর থেকেই  শুরু হয়েছে সপ্তম  দুয়ারে সরকার শিবির। যা চলবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর  পর্যন্ত। জানা যাচ্ছে  ১ তারিখ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সরকারি শিবিরগুলিতে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হবে। তারপর ১৮ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে পরিষেবা প্রদান পর্ব। জানা যাচ্ছে সপ্তম দফার এই  দুয়ারে সরকার প্রকল্পের জন্য রাজ্যজুড়ে মোট ৫ লাখ শিবিরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোন প্রকল্পে এই টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার?

রাজ্যবাসীকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও সেইসাথে দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ শর্ত। করোনা মহামারীর সময় দফায় দফায় লকডাউনের জেরে গোটা দেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনে তৈরী হয়েছিল  ভয়াবহ সমস্যা। দেখা যায় অন্যান্য রাজ্যের থেকে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি।

তাছাড়া ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের সাথে দুর্ঘটনা কিংবা অনেকের মৃত্যুর খবরও কানে এসেছে একাধিকবার। সম্প্রতি মিজোরামে রেল সেতু ভেঙে গিয়ে বাংলার প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাই এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবেই এই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।

এই সপ্তম দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এই প্রথমবার পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। তাই বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেস তৈরি করতে চাইছে রাজ্য সরকার। যাতে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কোনো পরিযায়ী শ্রমিক যদি বিপদে পড়ে  তাহলে ওই ডেটাবেস ধরে তাঁদের সহজেই সাহায্য করা যায়।

কাদের কত টাকা দেওয়া হবে?

জানা যাচ্ছে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা কোনো পরিযায়ী শ্রমিক যদি ভিন রাজ্যে কর্মরত অবস্থায় মারা যান তাহলে নমিনিকে ২ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য সরকার। এছাড়া দুর্ঘটনার ফলে শরীরের কোনো অঙ্গ বাদ গেলে বা কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে তার পরিবারের হাতে ১ লক্ষ টাকা তুলে দেবে রাজ্য সরকার। তবে যদি কোন‌ও পরিযায়ী শ্রমিকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তাহলে সেক্ষেত্রে নমিনি পাবেন ৫০ হাজার টাকা।

এছাড়াও জানা যাচ্ছে ভিন রাজ্যে কর্মরত কোনো পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হলে তাঁর  দেহ রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য পরিবার পিছু  ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।দেহ সৎকারের জন্যও থাকবে আরও ৩ হাজার টাকা দেওয়া হবে। বাংলার শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে বিপদে পড়লেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এমনকি হঠাৎ করে কারও  কাজ চলে গেলেও থাকবে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।

মূলত বাংলার মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর কিংবা  উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকা থেকেই বহু মানুষ কাজের সন্ধানে  ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়ে থাকেন। তাই  এই নতুন প্রকল্প চালু  হলে এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে চলেছেন।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *