জি -২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার সন্ধ্যা ঠিক সাতটা নাগাদ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবতরণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর ‘এয়ারফোর্স ওয়ান’ অবতরণ করতেই এদিন তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ভিকে সিংহ।
জানা যাচ্ছে আগামী ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর ভারতে এই টি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন শুরু হবে। তার আগেই শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দীপাক্ষিক পার্শ্ব বৈঠক করবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আগামী দুদিন দিল্লির আইটিসি মৌর্য শেরাটনে থাকছেন বাইডেন এবং তার প্রতিনিধি দল। তাঁদের জন্য এই হোটেলের প্রায় ৪০০ টি ঘর ভাড়া নিয়েছে ভারত সরকার। এছাড়া এই হোটেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর জন্য আলাদা একটি লিফটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ত্রি-স্তরীয় নিরাপত্তার। বাইরের স্তরে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা থাকবে, আর দ্বিতীয় স্তরে থাকবে ভারতের স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের কমান্ডোরা এবং সবচেয়ে ভিতরের বৃত্তে থাকবে সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথেই আসছে তার অফিসিয়াল স্টেট কার ‘দ্য বিস্ট’। জানা আছে দিল্লিতে থাকাকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার এই বিশেষ গাড়িতেই চড়বেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই গাড়িটিকে উড়িয়ে আনা হয়েছে বোয়িং C-17 গ্লোবমাস্টার III . মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই গাড়িটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও নিরাপদ বুলেটপ্রুফ গাড়ি হিসাবে পরিচিত। যা সব সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের পাহারায় থাকবে।
জানলে অবাক হবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এই বিশেষ গাড়ি দ্য বিস্টের ওজন ২০ হাজার পাউন্ড যা সেনা বাহিনীর ট্যাঙ্কের মতই ভারী। যার দাম ভারতীয় মুদ্রায় ১২ কোটি টাকা। আর মার্কিন ডলারের হিসাবে গাড়ির দাম ১৫ লক্ষ ডলার।
নিরাপত্তায় সেরা দ্যা বিস্ট
মার্কিন রাষ্ট্রপতির এই নিজস্ব গাড়ির রয়েছে একাধিক বৈশিষ্ট। জানা যায় বিস্ফোরণেও বুলেটপ্রুফ এই গাড়ির কোনও ক্ষতি হয় না। এমনকি রাসায়নিক যুদ্ধেক্ষেত্রেও গাড়ি অক্ষত থাকে। কোনো ক্ষতি হয় না যাত্রীদেরও। গাড়ির চাকায় গুলি লাগলেও তা দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে পারে অবলীলায়। জানা যায় এই গাড়িটির বিশেষত্ব হল তা কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে সক্ষম। এছাড়া এই গাড়িতে অস্ত্রের পাশাপাশি থাকে নিরাপত্তারক্ষীও।
জানা যায় একাধিক বৈশিষ্ট সম্পন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই গাড়ির অনেকগুলি বিশেষত্বের মধ্যে একটি হল যদি অন্য কোনো গাড়ি ধাওয়া করে তাহলে রাস্তায় পেট্রোল ফেলে সেই গাড়িকে আটকে দিতে পারে বিস্ট। জানা যায় এই গাড়ির সম্পূর্ণ বডি তৈরি হয়েছে ইস্পাত , অ্যালুমিনিয়াম ও সেরামিক দিয়ে। গাড়ির ভিতরে থাকলে বাইরের আওয়াজ কানে আসে না।
বুলেটপ্রুফ এই গাড়ির জানলার কাঁচ ৫ ইঞ্চি পুরু। আর সামনের দরজা ৫ ইঞ্চি পুরু। পিছনের দরজা ৮ ইঞ্চি পুরু। সাত জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে গাড়িতে। রয়েছে শটগান, স্মোকস্ক্রিনস জিপিএস , নাইটভিশন। গাড়িতে বাইডেনের জন্য সারাক্ষণ মজুত থাকে অক্সিজেন আর দুই ব্যাগ রক্ত। এই গাড়িতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছাড়াও বসতে পারেন আরও চার জন। চালকের আসনের পিছনে আর পিছনের সিটের আগে থাকে একটি কাঁচের দেওয়াল। যা নিয়ন্ত্রণের সুইচ থাকে প্রেসিডেন্টের হাতে। সেটাই হল প্যানিক বোতাম। এখান থেকেই সরবরাহ হয় অক্সিজেন। তবে জানালার কাচ নামানো যায় না।
Leave a Reply