কম্বোডিয়া

সারা পৃথিবী জুড়ে নানান প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হিন্দু ধর্মের মানুষজন। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোন রাষ্ট্র নেই যা সম্পূর্ণরূপে হিন্দু জাতির বলে দাবি করা যায়। তবে পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ রয়েছে যাদের দেশের জাতীয় প্রতীকে হিন্দু দেব-দেবী এবং পতিক ও মন্দিরের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। আজকের প্রতিবেদনে থাকছে পৃথিবীর এমনই একটি দেশের জাতীয় পতাকার কথা। যে দেশে জাতীয় পতাকার উপর রয়েছে একটি সুন্দর মন্দিরের ছবি। পৃথিবীর সেই দেশটি হলো কম্বোডিয়া।

এটাই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যাদের পতাকার উপরে রয়েছে হিন্দু মন্দির। অথচ এই দেশে একজনও হিন্দু বসবাস করেন না। জানা যায় এই দেশের পতাকা ইতিপূর্বে বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে।  কিন্তু এই পতাকার উপরে নির্মিত মন্দিরটিতে আজ পর্যন্ত কোনো বদল আনা হয়নি। বর্তমানে এই দেশের যে পতাকাটি দেখা যায় তা তৈরি হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এই পতাকা কম্বোডিয়ার সরকার অনুমোদন দিয়েছিলেন ১৯৯৩ সালে। কিন্তু এদেশের পতাকায় যে মন্দিরের ছবিটি রয়েছে তা তৈরি হয়েছিল ১৮৭৫ সালে।

প্রসঙ্গত কম্বোডিয়ার পতাকায় যে মন্দিরটি দেখা যাচ্ছে তা আসলে সেই দেশের আঙ্কোরভাট মন্দির। জানা যাচ্ছে  ১২ শতকের এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন মহিধরপুরার রাজারা। আঙ্কোরভাট মন্দিরটি তার অনন্য কারুকার্যের জন্য  বিশ্ববিখ্যাত। এই মন্দিরটি বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সৌধ হিসাবে জায়গা পেয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই মন্দিরে পাঁচটি মিনার রয়েছে। তবে পতাকায় এই মন্দিরের মাত্র তিনটি মিনার দেখা যায়।

জানা যায় রাজা দ্বিতীয় সূর্যবর্মন ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করেই নির্মাণ করেছিলেন এই মন্দির। ৪০২ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই মন্দিরটি তৈরী করতে সময় লেগে গিয়েছিল মোট ২৮ বছর। প্রথমদিকে এই মন্দিরের আসল নাম ছিল ব্রহ্ম বিষ্ণুলোক বা পরমা বিষ্ণুলোক যার অর্থ ‘বিষ্ণুর’ পবিত্র বাসস্থান। এটি মূলত একটি হিন্দু মন্দির। যদিও পরে এই মন্দিরটিই বৌদ্ধ মন্দিরে রূপান্তরিত হয়। পরে এই মন্দিরটি বর্তমানে  হিন্দু-বৌদ্ধ মন্দির নামে পরিচিত।

কম্বোডিয়ার মার্কিন দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংস্কৃতি ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এদেশে ৯৩% বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রয়েছে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টান, মুসলিম, বাহাই, ইহুদি ধর্মের বিশ্বাসী মানুষ। অর্থাৎ সরকারি তথ্য অনুযায়ী এই দেশের  বাসিন্দাদের পরিসংখ্যানে কোন  হিন্দু নাগরিকের উল্লেখ নেই।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *