লোডশেডিং

ভাদ্র মাসের প্রচন্ড গরমের সাথেই লাগাতার বেড়ে চলেছে লোড লোডশেডিং। ঊর্ধ্বমুখী এই তাপমাত্রার জেরে একেবারে নাজেহাল অবস্থা গোটা রাজ্যবাসীর। এরই মধ্যে গোটা বাংলার মানুষের কাছে ‘গোদের  ওপর বিষফোঁড়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং।সারাদিনের কাজকর্ম সেরে সবাই যখন রাতে ঘুমাতে যাচ্ছেন ঠিক তখনই অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। যার জেরে একেবারে হাসফাঁস করছেন রাজ্যের মানুষ। ঘন ঘন এই লোডশেডিং-এর জেরে তিতিবিরক্ত হয়ে অনেক এলাকাবাসী ইতিমধ্যেই নিকটবর্তী বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসে বিক্ষোভ ভাঙচুর পর্যন্ত চালিয়েছেন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ হয়নি কিছুই।

কারণ বিদ্যুৎ কর্মীরাও হাত তুলে নিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন তাদের করার কিছুই নেই। এখন  নাকি নিরুপায়  তাঁরাও। জানা যাচ্ছে  রাজ্যের এই ঘনঘন লোডশেডিং-এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। জানা যাচ্ছে ইদানিং রাজ্যে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সাপ্লাই-এর পরিমাণ গিয়েছে অনেকটাই কমে। পরিস্থিতি একেবারে চরমে ওঠে বৃহস্পতিবার। ওইদিন কার্যত রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় ঘনিয়ে এসেছিল ঘোর অন্ধকার। ঐদিন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা (WBSEDCL) এলাকায় বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল প্রায় ১১০০ মেগাওয়াট। তবে শুক্রবার থেকে এই পরিস্থিতি কিছুটা ভালোর দিকেই এগিয়েছে বলেই খবর।

যদিও রাজ্যের বিদ্যুৎ ঘাটতির বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। উল্টে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তাঁর স্পষ্ট দাবি  পুজোর সময় যাতে বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে কোন রকম সমস্যা না হয়, তার জন্য প্রতিবছর প্রাক পুজোর প্রিপারেশন নেওয়া হয়। রক্ষণাবেক্ষণের এই কাজের জন্যই বিভিন্ন জায়গায় শাটডাউন করা হয়ে থাকে। শাটডাউন করার বিষয়টি মাইকিং করে আগেই প্রচার করা হয়। যাতে সাধারণ মানুষের কোন অসুবিধা না হয়।

সেইসাথে বিদ্যুৎ দপ্তরের অপদার্থতা ঢাকতে লোডশেডিং এর জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রী এদিন খানিকটা দোষ চাপিয়েছেন বৃষ্টির ঘাটতি আর ট্রান্সফর্মার বদলের ওপর। মন্ত্রীর কথায় ‘পুজোর আগে বৃষ্টি হয়, কিন্তু এ বছর সেভাবে বৃষ্টি হয়নি’।  সেই সাথে তিনি যোগ করেছেন ‘ট্রান্সফর্মার বদল করা হচ্ছে বলেও এই সমস্যা আরও বেড়েছে’। উল্লেখ্য এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক জায়গাতেই। জানা গিয়েছে মালদার  একটি গ্রাম গত তিন দিন ধরে ডুবে রয়েছে অন্ধকারে। একই অবস্থা পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামসহ অন্যান্য জেলাগুলি-তেও। রাত্তিরে খাওয়া-দাওয়া সেরে শুতে যেতেই দফাই দফায় লোডশেডিং হওয়ায় কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছে রাজ্যবাসীর। ওদিকে এই সুযোগে  রাজ্য রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শানাতে ছাড়ছেন না বিরোধীরাও।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *