চাঁদ

রহস্যময়ী চাঁদকে নিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের সীমা নেই! তাই এখন গোটা বিশ্বের চোখ ভারতের তৃতীয় চন্দ্রজানের দিকেই। প্রশ্ন উঠছে ইসরোর চন্দ্র যান কি পারবে চাঁদ ঘিরে তৈরী ৬ টি অজানা রহস্যের সমাধান করতে ?

গোটা দেশবাসীর কাছে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু চন্দ্রযান ৩। গত মাসের শেষের দিকেই অর্থাৎ ২৩ আগস্ট ইসরোর পাঠানো তৃতীয় চন্দ্রযান চাঁদের মাটি ছুঁতেই এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছিলেন গোটা দেশবাসী। প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্যই সেই মুহূর্ত ছিল অত্যন্ত গর্বের। হবে না’ই বা কেন? গোটা বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশ গুলিকে টেক্কা দিয়ে এই প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রেখেছেন ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। সেইথেকেই গোটা বিশ্বের চোখ এখন ভারতের দিকেই।

প্রসঙ্গত ইসরোর এই মহাকাশ অভিযান যে মহাকাশ বিজ্ঞানের জগতে এক নতুন দিশা খুলে দিতে চলেছে তা শুধু সময়ের অপেক্ষা। পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে  চাঁদকে দেখতে অপরূপ সুন্দর লাগলেও  যুগ যুগ ধরেই রহস্যময়ী চাঁদের মাটিতে  লুকিয়ে রয়েছে একাধিক অজানা রহস্য।  এবার সেই রহস্যের সমাধানে বদ্ধপরিকর ভারতীয় মহাকাশ চারীরা। তবে ১৪ দিনের আগেই চাঁদের মাটিতে  ইসরোর দেওয়া সমস্ত অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে ফেলেছে চন্দ্রযান-৩। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই তাদের স্যুইচ অফ করে দিয়েছে ইসরো। এবার অপেক্ষা আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের। ওই দিন আবার ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পালা বিক্রম আর প্রজ্ঞানের। প্রসঙ্গত রহস্যে মোড়া চাঁদের ৬টি রহস্যের সমাধান হয়নি আজও। আসুন দেখে নেওয়া যাক চাঁদকে ঘিরে থাকা এমনই  ৬টি রহস্য।

১) চাঁদের গঠন

চাঁদের গঠন নিয়ে বিজ্ঞানীদের সংশয় বহুদিনের। আগে অ্যাপেলো ১১ চাঁদের মাটি এবং অন্যান্য শিলা সংগ্রহ করে এনে বিজ্ঞানীদের অনেক তথ্য দিয়েছিল। কিন্তু তা চাঁদের গঠন সম্পর্কে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। প্রসঙ্গত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ১০ বছর আগে নাসা জলের সন্ধান পেয়েছিল। যদিও তারপরেও থেকে গিয়েছে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন।

২) চাঁদের মাটিতে বরফ

অন্যদিকে এর আগে ২০০৮ সালে চন্দ্রযান ১ চাঁদের মাটিতে প্রচুর বরফের সন্ধান পেয়েছিল। যা প্রশ্ন তুলেছিল চাঁদে যদি জল থাকে তাহলে তা কি আদৌ ব্যবহারযোগ্য? তাছাড়া ভবিষ্যতে চাঁদ মানুষের বসবাসযোগ্য হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন। তাই চাঁদে যে জলের সন্ধান মিলেছিল প্রজ্ঞান তার উৎস খুঁজে পেয়েছে কিনা, সেটাই এখন দেখার।

৩) চাঁদে ভূমিকম্প

পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ভূ কাঠামো সক্রিয় থাকার কারণেই পৃথিবীতে ভূমিকম্প হয়। কিন্তু চাঁদে কেন ভূমিকম্প হয় তার উত্তর মেলেনি আজও। অ্যাপেলো যুগে চাঁদে যে সকল সিসমোমিটার রাখা হয়েছিল সেগুলি ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত চাঁদের মাটিতে হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করেছিল। সেখানে দেখা যায় চাঁদ ভূতাত্ত্বিক দিক দিয়ে সক্রিয়। কিন্তু তার কারণ জানা যায়নি।

৪) চাঁদের আইটকেন বেসিন

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রয়েছে এক বিরাট গহ্বর।  তার কাছেই অবতরণ করেছে ল্যান্ডার বিক্রম। বিজ্ঞানীদের মতে এই সুগভীর গর্তের মধ্যে এমন কিছু রয়েছে যা চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে প্রভাবিত করে। একে বলা হয় আইটকেন বেসিন। যা আজও ডুবে রয়েছে রহস্যের অন্ধকারে।

৫) চাঁদের কক্ষপথ

পৃথিবীর চারদিক ঘুরতে চাঁদের যতটা সময় লাগে ঠিক ততটাই সময় লাগে চাঁদকে নিজের কক্ষপথের চারপাশ ঘুরতে।  এই কারণেই পৃথিবী থেকে চাঁদের কেবলমাত্র একটি পৃষ্ঠ দেখা যায়। কিন্তু এর কারণ এখনও অজানা।

৬) চাঁদে আগ্নেয়গিরি

মহাকাশ গবেষণায় দেখা গিয়েছে ১০০ মিলিয়ন বছর আগে চাঁদে বহু আগ্নেয়গিরি সক্রিয় ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হওয়া অথবা অগ্নুৎপাতের মতো কোনো ঘটনা ঘটতে দেখা যায়নি।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *