ভারতের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও বারবার প্রশংসিত হচ্ছে ভারতীয়দের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। তালিকায় রয়েছেন আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস থেকে শুরু করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাক। আমেরিকা থেকে রাশিয়া, কিংবা ব্রিটেনসহ আরও অনেক দেশে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতারা উচ্চ পদে বসে আছেন। তাঁদের প্রত্যেকের শিরায় শিরায় বইছে ভারতীয় রক্ত।
ঋষি সুনক
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ১৯৮০ সালের ১২ই মে ব্রিটেনের সাউদাম্পটনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি । পেশায় তাঁর বাবা একজন চিকিৎসক আর মা একটি ক্লিনিক চালাতেন। ঋষির দাদু-ঠাকুমা আদি পাঞ্জাবের বাসিন্দা। জানা যায় ভারত স্বাধীন হওয়ার আগেই কাজের সূত্রে নাইরোবি চলে যান ঋষি সুনকের ঠাকুরদা। তিন বোন ও ভাইয়ের মধ্যে ঋষিই নাকি সবার বড়। তাঁরা সকলেই হিন্দু ধর্ম মেনে চলেন। জানা যায় নিজেকে ‘গর্বিত হিন্দু’ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন ব্রিটেনের এই প্রধানমন্ত্রী। শোনা যায় নিজের টেবিলে সব সময় গণেশের মূর্তি রাখেন ঋষি।
কমলা হ্যারিস
২০২১ সালে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ করেন। আমেরিকার ২৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম মহিলা,প্রথম এশীয়-আমেরিকান মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি। কমলার সাথেও রয়েছে ভারতের সংযোগ। তাঁর মা শ্যামলা গোপালন তামিলনাড়ুর মেয়ে।
ওয়েভেল রামকালাওয়ান
ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র সেশেলসের রাষ্ট্রপতি ওয়েভেল রামকালাওয়ানের পূর্বপুরুষরা ছিলেন বিহারের বাসিন্দা। ওনারা পূজারী ছিলেন। তাঁর পরিবার থাকতেন গোপালগঞ্জে। একবার এক সাক্ষাৎকারের তিনি জানিয়ে ছিলেন তাঁর পূর্বপুরুষরা বিহার থেকে মরিশাস গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পরে সেশেলস যান তাঁরা।
আন্তোনিও কস্তা:
পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তার পরিবার একসময় ভারতের গোয়ার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর আত্মীয়রা এখনও গোয়ার মারগাওয়ের কাছে আবেদ ফারিয়াতে থাকেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে রয়েছে ভারতের বিদেশী নাগরিক কার্ড। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৭ সালে তাঁকে এই ওসিআই কার্ড উপহার দিয়েছিলেন।
পৃথ্বীরাজ সিং রূপান:
মরিশাসের রাষ্ট্রপতি পৃথ্বীরাজ সিং রূপানের শিকড় রয়েছে ভারতে। বিহার ও উত্তরপ্রদেশের সাথে অনেক পুরনো সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। তার পূর্বপুরুষরা গয়ার বাসিন্দা। তিনি যখনই ভারতে আসেন, মন্দিরে যান। চলতি বছরেই কলকাতায় এসে দক্ষিণেশ্বর মন্দির ও বেলুড় মঠ দর্শনে গিয়েছিলেন তিনি।
হালিমা ইয়াকব
সিঙ্গাপুরের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত হালিমা ইয়াকব। হালিমার বাবার শিকড় ছিল ভারতেই। আর মা ছিলেন সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী মালয় জনগোষ্ঠীর সদস্য। দুর্ভাগ্যবশত খুব ছোটবেলাতেই বাবাকে হারান হালিমা। নারীমুক্তি ও দেশের উন্নতির জন্য তিনি অনেক কাজ করেছিলেন। হালিমা ইয়াকব বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০ জন মুসলিমদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।
চন্দ্রিকা প্রসাদ সান্তোখি
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম। এই দেশের রাষ্ট্রপতি চন্দ্রিকা প্রসাদ সান্তোখির পূর্বপুরুষ বিহারের বাসিন্দা ছিলেন। বিদেশে থেকেও ভারতীয় সংস্কৃতির গৌরব বহন করে চলেছেন তিনি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত চন্দ্রিকা প্রসাদ বেদ সাক্ষী রেখে সংস্কৃত ভাষায় শপথ নিয়েছিলেন।
মোহাম্মদ ইরফান আলী
গায়ানার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইরফান আলিও ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ইন্দো-গুয়ানিজ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ইরফান আলি। জানা যায় ব্রিটিশ জমানায় তাঁর পূর্বপুরুষরা ভারত থেকে গায়ানা যান। ২০২০ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তিনি।
Leave a Reply