রচনা বন্দোপাধ্যায় নামটাই যথেষ্ট! তাঁকে এক ডাকে চেনে গোটা বাংলা। কিন্তু আপনি কি জানেন এটা অভিনেত্রীর আসল নামই নয়! জানেন অভিনয় জীবনে আসার আগে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতৃপ্রদত্ত আসল নাম কি ছিল? কি এমন প্রয়োজন পড়েছিল যে অভিনয়ে আসার আগে নিজের নামটাই বদলে ফেলেছিলেন রচনা? আসুন জানা যাক এর নেপথ্য কারণ
কথায় যাচ্ছে নাম দিয়ে যায় চেনা! বিশেষ করে সেলিব্রেটিদের জীবনে এই নামের নাম ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। পরপর ফ্লপ সিনেমা করার পর এই নাম বদলে অরুণকুমার থেকে উত্তমকুমার হয়েই সাফল্যের স্বাদ পেয়েছিলেন খোদ বাঙালির মহানায়ক। তাই অভিনয় জগতে এসে বেশী জনপ্রিয়তা পাওয়ার আশায় নাম বদলে ফেলার ঘটনা নতুন নয়। নাম বদলেই যুগ যুগ ধরেই নিজস্ব ক্যারিশ্মা ধরে রেখেছেন বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীই। বিনোদন জগতে এমন উদাহরণ রয়েছে ঝুড়ি ঝুড়ি। নায়িকা সুলভ নাম না হওয়ায় নিজের নামটাই বদলে ফেলেছিলেন বাংলার প্রথম সারির একজন অভিনেত্রী। তিনি হলেন বাংলার দিদি নাম্বার ওয়ান অর্থাৎ সকলের প্রিয় অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলা সিনেমার প্রথম সারির এই অভিনেত্রী একসময় বাংলার পাশাপাশি চুটিয়ে অভিনয় করেছেন ওড়িয়া এবং হিন্দি সিনেমাতেও। যদিও এখন অভিনেত্রীর পাশাপাশি তাঁকে সবাই দিদি নাম্বার ওয়ান-এর সঞ্চালিকা হিসেবেই বেশি চেনেন। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জি বাংলা জনপ্রিয় এই রিয়ালিটি শোটির দায়িত্ব নিজের কাঁধে বহন করে চলেছেন টলিউডের এই এভারগ্রিন অভিনেত্রী। তাই এখন ৮ থেকে ৮০ বাংলার সকল প্রজন্মের কাছেই তিনি হলেন দিদি নাম্বার ওয়ান।
এ তো গেল রিয়েলিটি শো এর দৌলাতে পাওয়া দর্শকদের ভালোবাসার নাম। বয়স ৪৮ পেরোলেও আজও কোনও পরিবর্তন আসেনি অভিনেত্রীর চেহারায়,তাই আজও তিনি একইরকম রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কি এমন প্রয়োজন পড়েছিল যে অভিনয়ে আসার আগে নিজের নামটাই বদলে ফেলেছিলেন রচনা? অধিকাংশ মানুষই জানেন না অভিনয় জীবনে আসার আগে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতৃপ্রদত্ত আসল নাম কি ছিল? স্কুলের শংসাপত্র থেকে শুরু করে মিস ক্যালকাটার খেতাব সবতেই উল্লেখ রয়েছে অভিনেত্রীর সেই পুরনো নাম। আসলে এর পিছনে রয়েছে এক অজানা কাহিনী।
জানা যায়, অভিনেত্রীর বাবা ছিলেন প্রয়াত অভিনেতা সুখেন দাসের বন্ধুসম। তখন নবাগত অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে রীতিমতো স্ট্রাগল করছিলেন। সেসময় তাঁর অভিনয় নজরে পড়েছিল অভিনেতা সুখেন দাসের। অভিনয় ভালো লাগলেও তাঁর আপত্তি ছিল অভিনেত্রীর নাম নিয়ে। কারণ তখন অভিনেত্রীর নাম ছিল ঝুমঝুম ব্যানার্জি। তাই তিনিই কন্যাসম অভিনেত্রীকে ছবির অফার দিয়ে বলেছিলেন, ‘ঝুমঝুম নামটা চলবে না, সকলে বলবে মুনমুনের মেয়ে।’ তখন সুখেন দাস বাংলা সিনেমার এই উঠতি অভিনেত্রীর নাম খুঁজতে ভরসা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের ওপরেই। সেসময় ঠিক করা হয় রবীন্দ্র রচনাবলী থেকেই খোঁজা হবে ঝুমঝুমের নাম। যেই কথা সেই কাজ! ঠিক তখনই সুখেন দাসের মনে হয়, ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ এই শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে অভিনেত্রীর নাম। সেই থেকে ঝুমঝুম হয়ে গেলেন রচনা। এখন গোটা দুনিয়া তাঁকে চেনে রচনা নামেই। আর কালের নিয়মে ইন্ডাস্ট্রি থেকে এখন একেবারে হারিয়ে গিয়েছে অচিনেত্রীর ঝুমঝুম নাম।
Leave a Reply