ঠিক যেন হেলিকপ্টার!
মাছ না অন্য কিছু।
এর পাখনা এতটাই ধারালো যে রক্তারক্তি হত পারে যে কোন মুহুর্তে।
তার সাথে টিকতে পারে না দেশী মাছেরা।
চাষিদের জন্য বড় বিপদ এই মাছ
দেখেছেন কোনদিন?
দেখলে অবাক হবেন আপনি ও।
মৎস্যজীবীদের জলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরা পড়ে। সেই সকল মাছের মধ্যে আবার এমন কিছু মাছ জালে পড়তে দেখা যায় যেগুলি সচরাচর দেখাই যায় না। ঠিক সেই রকমই সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরে (East Medinipur) এমন একটি মাছ (Fish)ধরা পড়েছে যেটি দেখতে অনেকটা হেলিকপ্টারের মত। এই মাছটি নিয়ে ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্যজীবীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।
সোমবার প্রায় দু’কিলো ওজনের এমন মাছটি ধরা পড়েছে রামনগর এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত সমুদ্র তীরবর্তী প্রতিমা অঞ্চলের মেদিনীপুর গ্রামে। বিচিত্র এই মাছ ধরা পড়ার পর তাকে ঘিরে যেমন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, ঠিক সেই রকমই আবার তা দেখতেও ভিড় জমাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। এই মাছকে ঘিরে এত আতঙ্ক তৈরির কারণ হলো, এরা পাতের মাছ অর্থাৎ খাওয়ার মাছের সংকট তৈরি করে।
পূর্ব মেদিনীপুরে এই যে মাছটি ধরা পড়েছে তার নাম হলো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। অ্যাকোরিয়ামে এই ধরনের মাছ শোভা বর্ধন করার জন্য রাখা হয়। তবে এখন অনেক নদী-নালাতেই এই ধরনের মাছ ধরা পড়ছে। বর্ষাকালে আচমকা এই মাছের দ্রুত বংশ বিস্তার হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের সূত্রে।
দ্রুত বংশ বিস্তারকারী এই মাছ জলজ পোকামাকড় এবং শ্যাওলা খাওয়ার পাশাপাশি ছোট ছোট মাছ এবং মাছের পোনা খেয়ে থাকে। এছাড়াও এই সকল মাছের পাখনা এতটাই ধারালো যে অন্য মাছের ক্ষতি হয়। এই ধরনের মাছ রাক্ষুসে মাছ না হলেও প্রচুর পরিমাণে খাবার খেয়ে থাকে। যে কারণে দেশীয় প্রজাতির যে সকল মাছ রয়েছে তাদের সঙ্গে এই ধরনের মাছের এক প্রকার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আর সেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেনা দেশীয় প্রজাতির মাছেরা। আর এর ফলেই আতঙ্ক বাড়ছে মৎস্য চাষী থেকে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
জানা যাচ্ছে, এই ধরনের মাছের ফলে ইতিমধ্যেই মায়ানমার, আরব আমিরাতের মত দেশে প্রচুর মাছের ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে বিশেষজ্ঞরা বারবার জানাচ্ছেন, অ্যাকোরিয়ামে শোভা বর্ধনকারী এই ধরনের বিদেশী মাছ যেন কেউ জলাশয় না ছাড়েন। কেননা এরা দ্রুত বংশ বিস্তার করার ফলে নিজেদের সংখ্যা ব্যাপক পরিমাণে বাড়িয়ে ফেলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে। আর এমনটা ঘটলে কিন্তু পাতে পড়ার মাছের অভাব হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
Leave a Reply