কোহিনুর হীরে

কোহিনূর হীরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে পাঁচ হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস। ভারতের এই বহুমূল্যবান রত্ন বর্তমানে ইংরেজ রাজ পরিবারের সম্পত্তি। তবে কোহিনূর নিয়ে রয়েছে আরও একাধিক  কারণ। জানা যাচ্ছে এই কোহিনূর হীরে অভিশপ্তও বটে। তাই এই হিরে আজ পর্যন্ত যার কাছে গিয়েছে তার  জীবনে নেমে এসেছে কালো ছায়া। যার থেকে বাদ যায়নি মোঘল সম্রাট শাহজাহানও। এমনকি এই হীরের অভিশাপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বড় বড় সাম্রাজ্যও। জানলে অবাক হবেন আজ পর্যন্ত কোহিনূর হীরা কোথাও বিক্রি হয়নি বা নিলামে ওঠেনি। কারণ বিগত ৫ হাজার বছরে এই হীরা প্রতিবারই কোন যুদ্ধ অথবা ছলনার মাধ্যমে হাতবদল হয়েছে। তবে এই হীরের ঐতিহাসিক দিক আর আকারের ভিত্তিতে এর আনুমানিক মূল্য হতে পারে চার হাজার কোটি টাকা।

কোহিনুর শব্দের অর্থ অপূর্ব আলোর ঝলকানি বা আলোর পাহাড়।বলা হয় কোহিনুরের আকারের মতো পরিবর্তন হয়েছে নামেরও। এই কোহিনূর নামটি দিয়েছিলেন ইরানের সুলতান নাদির শাহ। বলা হয় এই হীরে যার কাছে থাকে সে হয়ে যায় সারা পৃথিবীর মালিক।  কিন্তু সেইসাথে তাঁর জীবনে নেমে আসে অভিশাপ। এই কারণে ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়া  কোহিনুর হীরেকে নিজের সম্পত্তি বানানোর  পরে ঘোষণা করেছিলেন এই হীরে ইংল্যান্ডের কোন রাজা ব্যবহার করতে পারবেন না। কারন এই হীরের অভিশাপ পরে পুরুষ মালিকদের ওপর। তাই রাজার স্ত্রী বা অন্য কোনো মহিলাই শুধু এই ধারণ করতে পারবেন। এই ভাবেই কোহিনূর ধারণ করেও এর অভিশাপ থেকে মুক্ত ছিলেন ইংল্যান্ডের রানীরা।

পুরোনো ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় এই অভিশপ্ত হীরেটি ভারতের অন্ধ্র[প্রদেশের গোলকোন্ডা খনি থেকে উদ্ধার হয়েছিল। খনি থেকে তোলার পর এই হীরের ওজন ছিল আনুমানিক প্রায় ৮০০ ক্যারেট বা প্রায় ১৬০ গ্রাম।  বর্তমানে এর ওজন ১০৫ ক্যারেট বা ২১ গ্রাম। কিন্তু ক্রমাগত হাত বদল হয়ে বর্তমানে এই হীরেই পৌঁছে গিয়েছে ইংল্যান্ডে।  কিন্তু এখন প্রশ্ন হল ইংল্যান্ডের রাজ পরিবারের হেফাজতে থাকা এই কোহিনুর কি ভারতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব?  স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের তরফে ক্রমাগত ইংল্যান্ড সরকারকে চাপ দেওয়া হয়েছে এই কোহিনূর হীরে ফিরত দেওয়ার জন্য।

কিন্তু প্রতিবারই ব্রিটিশ সরকার শিখ রাজা দিলীপ সিং-এর সাথে হওয়া লর্ড ডালহৌসির লাহোর চুক্তির কথা উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে কোহিনুর যে একটা অভিশপ্ত হীরে এটা কিন্তু শুধুমাত্র একটা লোককথা।  ইতিহাসে আজ পর্যন্ত এমন কোন নথি পাওয়া যায়নি যেখানে হীরাটিকে অভিশপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  তবে হীরের মালিকদের সাথে হওয়া ঘটনার উপর ভিত্তি করেই এই  হীরাকে অভিশপ্ত বলা হয়।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *