মহাকাশচারীরা মহাকাশে কিভাবে মলমূত্র ত্যাগ করেন? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। যা মাঝেমধ্যেই জায়গা পাচ্ছে সংবাদ শিরোনামেও। কিছুদিন আগেই খবর মিলেছিল ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে মহাকাশযানে অত্যাধুনিক টয়লেট বসানো হচ্ছে৷। যদিও বিষয়টা মোটেই অবাক হওয়ার মতো নয়। কারণ, বহুদিন ধরেই মহাকাশচারীদের কাছে এই প্রশ্নটা অত্যন্ত কমন হয়ে গিয়েছে। হালফিলে ন্যাশনাল এয়ারোনটিস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ওরফে নাসার তরফেও সাফ জানানো হয়েছে সাধারণ মানুষদের থেকে একজন মহাকাশ্চারীর কাছে নাকি এই প্রশ্নটাই সব চেয়ে বেশি বার আসে!
আমরা সকলেই জানি মহাকাশে কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করে না। তাই কেউ পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করলেও তা কানে এসে পৌঁছায় না। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে মহাকাশচারীরা মহাকাশে কিভাবে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেন? তাই সকলের সমস্ত কৌতূহলের অবসান ঘটাতে মহাকাশ থেকেই মহাকাশযানের একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন মহাকাশচারী ক্রিস্টোফার ক্যাসিডি।
সেই ভিডিওতেই তিনি একেবারে হাতে ধরে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন কী ভাবে মহাকাশযানের টয়লেট কাজ করে? কী ভাবেই বা অন্তরীক্ষে মল এবং মূত্র ত্যাগ করতে হয়? ক্যাসিডির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মহাকাশযানে মহাকাশচারীদের টয়লেটকে ‘ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইজিন কম্পার্টমেন্ট’ বলা হয়। যা দেখতে অনেকটা ট্রেনে থাকা টয়লেটের মতোই হয়। কিন্তু সেখানে জায়গা খুবই সীমিত থাকে। তাই নাড়াচড়া করা একটু অসুবিধা জনক হয়ে থাকে।
ক্যাসিডি দেখিয়েছেন এই ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইজিন কম্পার্টমেন্টে মলত্যাগের ব্যবস্থা অবশ্য খানিকটা কমোডের মতোই। যদিও কমোডের বদলে সেখানে রাখা থাকে একটা পাত্র, আর তার উপরেই থাকে বসার জায়গা। ৫ ইঞ্চি মতো চওড়া গর্তের ভিতরে রাখা থাকে একটা থলি। মলত্যাগের পর সেই থলি আর নোংরা টয়লেট পেপার এক সঙ্গে করে তাকেই ফেলে দিতে হয়। আর পরের জনের জন্য ওই গর্তের মধ্যেই আরও নতুন একটা থলি পরিয়ে রাখতে হয়!
মহাকাশযানে থাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইজিন কম্পার্টমেন্ট প্রযুক্তিগত ভাবেও বেশ উন্নত হয়। তাই এই কম্পার্টমেন্টের দেওয়ালেই থাকে কিছু বোতাম আটকানো প্যানেল। সেখানে থাকা তিনটে বোতাম যখন ইংরেজি V অক্ষরের মতো সাংকেতিক চিহ্ন তৈরী করে জ্বলে উঠবে, তখন বোঝা যায় যে টয়লেট মহাকাশচারীদের মূত্রত্যাগের জন্য তৈরি। এই সময় পাইপের সঙ্গে আটকানো একটা ফানেলের মুখে প্রস্রাব ত্যাগ করতে হয়!
Leave a Reply