জনগণের দেওয়া ভোটে নির্বাচিত হয়েই ক্ষমতার দাপট দেখান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। তাঁদের মধ্যে অনেকের নামই জড়িয়ে থাকে একাধিক দুর্নীতি কিংবা কালো টাকার সাথে। তাছাড়া রাজনীতির সাথে দুর্নীতির সম্পর্ক বহুদিনের। জনগণের সেবা করার নামে ক্ষমতা লোভী এই সমস্ত রাজনীতির কারবারীরাই ধন-সম্পত্তিতে একেবারে ফুলেঁপে উঠছেন। যা দেখে লজ্জা পাবেন স্বয়ং ভারতীয় ধন কুবের মুকেশ আম্বানিও। রাজনীতিতে নেমেই বিরাট সম্পত্তির মালিক হয়েছেন তাঁরা।
বিধায়করা মনোনয়ন পেশের সময় যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে উল্লেখ করা সম্পত্তির পরিমাণ দেখেই সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) নামে একটি সংস্থা দেশের বিধায়কদের সম্পত্তি নিয়ে এই সমীক্ষা করেছে। জানা যাচ্ছে দেশের ২৮টি রাজ্যে এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪০০১ জন বিধায়কের সম্পত্তির উপর সমীক্ষা করে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে এডিআর। যদিও এই সমীক্ষার ফল যাচাই করে দেখেনি বাংলা হান্ট।
১) চলতি বছরের মে মাসেই বিধানসভা নির্বাচনের পর কর্নাটকে সরকার গড়েছে কংগ্রেস। সেখানকার উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারই হলেন দেশের সবচেয়ে ধনী বিধায়ক। জানা যাচ্ছে তিনি নাকি মোট ১,৪১৩ কোটি টাকার মালিক।
২) এডিআর-এর এই সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের দ্বিতীয় ধনী বিধায়কও কর্নাটকেরই। নির্দল বিধায়ক কেএইচ পুত্তাস্বামী গৌড়ার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১,২৬৭ কোটি টাকা।
৩) দেশের তৃতীয় ধনী বিধায়কও কর্ণাটক রাজ্যের। তিনি হলেন কংগ্রেস বিধায়কপ্রিয় কৃষ্ণ। জানা যাচ্ছে তাঁর সর্বমোট সম্পত্তির পরিমাণ ১,১৫৬ কোটি টাকা।
৪) এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন টিডিপির এন চন্দ্রবাবু নায়ডু। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ নাকি ৬৬৮ কোটি টাকা। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের কুপ্পম থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন ।
৫) দেশের ধনী বিধায়কদের এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন জয়ন্তীভাই সোমভাই পটেল। গুজরাটের মানসার এই বিধায়কের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৬৬১ কোটি টাকা।
৬) তাঁর পরেই ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন কর্নাটকের বিধায়ক সুরেশ বিএস। কংগ্রেসের এই বিধায়কের সম্পত্তির পরিমাণ ৬৪৮ কোটি টাকা।
৭) এডিআর প্রকাশিত এই সমীক্ষায় সপ্তম স্থানে জ্বলজ্বল করছে ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডি-র নাম। অন্ধ্রপ্রদেশের এই মুখ্যমন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা।
৮) তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের ঘাটকোপার পূর্বের বিধায়ক পরাগ শাহ। জানা যাচ্ছে এই বিজেপি বিধায়কের সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।
৯) কংগ্রেসের টিএস বাবা রয়েছেন নবম স্থানে। ছত্তীসগঢ়ের অম্বিকাপুরের এই বিধায়কের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।
১০) দশম স্থানে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিধায়ক মঙ্গলপ্রভাত লোধা। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪৪১ কোটি টাকা।
কম সম্পত্তির মালিক বাংলার দুই বিধায়ক
তালিকায় রয়েছেন পচিমবঙ্গেরও দুই বিধায়ক। তবে তাঁদের কাছে রয়েছে সব থেকে কম সম্পত্তি। কম সম্পত্তির মালিক এমনই একজন বিজেপি বিধায়ক হলেন ইন্দাসের নির্মলকুমার ধারা।
১ ২)তিনি ছাড়াও কম সম্পত্তির মালিক বাংলার আরও একজন বিধায়ক হলেন পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। নবদ্বীপের এই তৃণমূল বিধায়কের সম্পত্তির পরিমাণ ৩০ হাজার ৪২৩ টাকা।
এই সমীক্ষা থেকে আরও জানা যাচ্ছে, যে বিধায়কদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা নেই তাঁদের তুলনায় যাঁদের নামে অপরাধের মামলা রয়েছে, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ বেশি। যাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা রয়েছে, তাঁদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ১৬.৩৬ কোটি টাকা। আর যাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা নেই, তাঁদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ১১.৪৫ কোটি টাকা। এডিআর-এর সমীক্ষা বলছে দেশের ধনী বিধায়কদের তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে চার জন কংগ্রেসের। আর তিন জন বিজেপির।
Leave a Reply