নাসা এবং ইসরোর মধ্যে কে বেশি শক্তিশালী? এদের মধ্যে বিশ্ব সেরা মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র কোনটি? তুলনায় এগিয়ে আছে কে? ভারতের অবস্থান কত?

নাসা এত শক্তিশালী হয়েও কেন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যেতে পারল না? বিশ্ব সেরা মহাকাশ সংস্থা হয়েও কীভাবে ভারতের কাছে হেরে গেল?

নাসা এত শক্তিশালী হয়েও কেন
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যেতে পারল না?

বিশ্ব সেরা মহাকাশ সংস্থা হয়েও
কীভাবে ভারতের কাছে হেরে গেল?

নাসা এবং ইসরোর মধ্যে
এই মুহূর্তে কে বেশি এগিয়ে?

তুলানায় টেক্কা দিচ্ছে কে
আমেরিকা নাকি ভারত?

মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই অপার কৌতূহল। সম্প্রতি ইসরোর চন্দ্রযান ৩ সফল হওয়ার পর থেকেই, এই কৌতূহল যেন আরও বেড়ে গিয়েছে। মহাকাশের গভীরতা ও বিপুলতা সম্পর্কে জানতে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে আমাদের মন। মহাকাশ সম্পর্কে জানতে আমাদের নির্ভর করতে হয় স্পেস এজেন্সির উপর। বর্তমান পৃথিবীতে বেশ কয়েকটি স্পেস এজেন্সি আছে। এই সংস্থাগুলো মহাকাশ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য আমাদের কাছে প্রেরণ করে। এই সকল সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম হল নাসা এবং ইসরো। এখনও পর্যন্ত মহাকাশ সম্পর্কে যে সমস্ত তথ্য আমাদের হাতে আছে তার পিছনে ৫০% অবদান রয়েছে এই দুটি সংস্থার। এই দুটি সংস্থা কীভাবে মহাকাশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্য আমাদের প্রেরণ করে তা অনেকেরই অজানা। তাই আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের সামনে তুলে ধরব, নাসা এবং ইসরোর নানাণ তুলনামূলক পার্থক্য। আসুন জেনে নিই দুই স্পেস এজেন্সি কি কি কাজ করে এবং কি তাদের পার্থক্য-

নাসার সম্পূর্ণ নাম ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইংরেজি: National Aeronautics and Space Administration)। নাসা হল একটি আমেরিকান স্পেস এজেন্সি।
অন্যদিকে ইসরোর সম্পূর্ণ নাম – Indian Space Research Organization। ইসরো ভারতের স্বনামধন্য স্পেস এজেন্সি।

নাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৮ সালের ২৯ জুলাই। অন্যদিকে ইসরো প্রতিষ্ঠিত হয় নাসার প্রায় ১১ বছর পর ১৯৬৯ সালের ১৫ আগস্ট।

নাসা প্রতিষ্ঠার পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন যে মানুষটি তিনি হলেন ডিডি আইজেন হাওয়ার। অন্যদিকে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোর জনক বিক্রম সারাভাই।

নাসার হেড কোয়াটার আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থিত। অন্যদিকে ইসরোর হেড কোয়াটার ভারতের বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত।

নাসার বর্তমান চেয়ারম্যান Dr. Nicola Fox । ইনিই বর্তমানে নাসার যাবতীয় দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। ইসরোর বর্তমান চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। ইসরোর সমস্ত রকম দায়ভার পরিচলানা করছেন এই মানুষটি।

নাসার কর্মী সংখ্যা ১৭ হাজার। এদের মধ্যে সবাই আমেরিকান নয়। কারণ নাসা দেশ বিদেশের সমস্ত গুণী বিজ্ঞানীদের তাদের সংস্থায় কাজের সুযোগ দিয়ে থাকেন। জানলে অবাক হবেন নাসায় কাজ করেন এমন বিজ্ঞানীদের মধ্যে ৩৬ শতাংশই ভারতীয়। টাইম অফ ইণ্ডিয়া তাদের সমীক্ষায় এই তথ্য প্রকাশ্যে আনেন। কল্পনা চাওলা,সুণীতা উইলিয়ামস, শর্মিলা ভট্টাচার্যের মতন ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও নাসায় কাজ করেছেন। এই তো নাসার কথা। অন্যদিকে ইসরোতে ১৬ হাজারেরও বেশি কর্মী কাজ করেন। এরা প্রত্যেকেই ভারতীয়।

একদিকে নাসার মূল কাজ হল, মহাবিশ্বের পৃথিবী থেকে বহুদূরে অবস্থিত গ্রহদের সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান করা। অন্যদিকে ইসরোর সমস্ত প্রজেক্ট ভারত এবং তার আশে পাশে প্রতিবেশী দেশগুলোর সার্বিক উন্নতিতে নিয়োজিত রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং দেশের আবাহাওয়া ও জলবায়ু সমীক্ষা করা এর প্রকৃষ্ট উদাহারণ।

তবে যে কোনও প্রজেক্ট পিছু বাজেট সংক্রান্ত তুলনামূলক আলোচনায় নাসা ইসরোর থেকে অনেকগুণ এগিয়ে। যেখানে নাসার বাজেট ২০.৭ মিলিয়ন ডলার। সেখানে ইসরোর বাজেট মাত্র ১.৬ মিলিয়ন ডলার।

নাসা তার প্রজেক্টের জন্য অনেক বেশি ব্যয় করে। বাইরের দেশ থেকে যন্ত্রাংশ আনে। অন্যদিকে ভারত মহাকাশ যাত্রার জন্য বাইরে থেকে কোনও যন্ত্রাংশ নেয় না বললেই চলে। ভারত মহাকাশ গবেষণায় স্বল্প খরচে সফলতা লাভের চেষ্টা চালায়।

নাসার সবথেকে সফল মিশন, পাইওনিয়ার, ভায়জার, ক্যাসিনি হায়জিনস, হাবেল, এপোলো, ভাইকিন এছাড়াও আর অনেক মিশন রয়েছে। অন্যদিকে ইসরোর সফল মিশনগুলো হল চন্দ্রযান ১, মঙ্গলযান ১, কারটোসেট এবং পিএসএলভি ৩৭।

নাসা এই পর্যন্ত একাধিকবার চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে। সেই তুলনায় ভারত এখনও পর্যন্ত কোনও মানুষ পাঠাতে সক্ষম হয়নি।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *