ভারতবর্ষের মতো বৈচিত্রময় দেশ এই পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মোড়া এই দেশের এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে পা রাখলেই বদলে যায় মানুষের ভাষা থেকে কথাবার্তা কিংবা পোশাক থেকে খ্যাদ্যাভ্যাস। গোটা ভারতবর্ষ ঘুরলেই মনে হয় চোখের সামনে ভেসে উঠবে গোটা পৃথিবীর সৌন্দর্য্য। তাই প্রকৃত অর্থেই বৈচিত্রের সমাহার আমাদের এই ভারতবর্ষ বিভিন্ন ধর্ম-সংস্কৃতির পীঠস্থান। অসংখ্য ভারতীয়দের মতে হিন্দুপুরাণ অনুযায়ী এই দুনিয়া তৈরি স্বর্গ,মর্ত্য এবং পাতাল নিয়ে।
স্বর্গে যেমন দেবতাদের বাস তেমনি মর্ত্যে মানুষের আর পাতালে থাকেন দানব কিংবা অসুরেরা। জানলে অবাক হবেন ভারতের মধ্যপ্রদেশে রয়েছে এমনই এক জায়গা যেখান থেকেই নাকি শুরু হয়েছে পাতাল লোকের। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘন সবুজ জঙ্গল আর পাহাড়ে ঘেরা এই রহস্যময় জায়গাটির নামই হল ‘পাতালকোট’। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলায় শহরাঞ্চল থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে সাতপুরা পাহাড়ের উপত্যকায় অবস্থিত এই তামিয়া অঞ্চলে মোট ১২টি গ্রাম রয়েছে।
এখানকার প্রতিটি গ্রামের মধ্যে দূরত্ব ৩-৪ কিলোমিটার। প্রায় ২০,০০০ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই পাতালকোটে প্রায় ২০০০ আদিবাসীর বাস। মূলত ভারিয়া এবং গোন্ড প্রজাতির আদিবাসীরাই বসবাস করেন এখানে। তবে গাছপালায় ঢাকা এই দুর্গম গ্রামগুলির অধিকাংশ জায়গাতেই সূর্যের আলো পৌঁছয় না। তাই দিনের বেলাতেও এই এলাকা ডুবে থাকে গভীর অন্ধকারে। সূর্যের আলো প্রবেশ করতে না পারায় নেমে আসে গভীর অন্ধকার।
এখানকার মানুষজন নিজেরাই নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করেন। এখানকার জলের একমাত্র উৎস দুধ নদী। বাইরের দুনিয়া থেকে এঁরা একেবারেই বিচ্ছিন্ন থাকেন। যার ফলে করোনা মহামারির সময়ও নাকি তারা জানতেই পারননি বিশ্ববাসী করোনা মহামারির মত মহামারীতে ভুগছেন। জানা যায় রহস্যময় এই গ্রামে সেই সময় নাকি করোনাও থাবা বাসাতে পারেনি।
এই এলাকাতেই রয়েছে এক গভীর খাদ। যার শেষ কোথায় কেউ জানে না। কথিত আছে এখানে নাকি রামায়ণে বর্ণিত দেবী সীতার পাতাল প্রবেশ ঘটেছিল। শুধু তাই না ওই জানা যায়, অহিরাবণের হাত থেকে রাম-লক্ষণকে বাঁচাতে এই এলাকার মধ্য দিয়েই নাকি পাতালে প্রবেশ করেছিলেন স্বয়ং হনুমানও।
Leave a Reply