ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে পুজোর পরেই এবার প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি জায়গা নিতে চলেছে স্মার্ট মিটার। একই সঙ্গে বদলে যাবে বিদ্যুতের ট্যারিফও। বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফ থেকে নির্দেশ জারি করা হয়েছে এই মিটার লাগিয়ে গ্রাহকদের প্রতিমাসে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য রিচার্জ করতে হবে। রাজ্য সরকারের এই নতুন প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের প্রধান দুই বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা WBSEDCL এবং CSC। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আপাতত রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এবং বাড়ি মিলিয়ে মোট ৩৭ লক্ষ কানেকশনকে স্মার্ট মিটারে পরিবর্তিত করা হবে। জানা যাচ্ছে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফে এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ।
কিভাবে কাজ করবে এই স্মার্ট মিটার?
যার ফলে টিভি বা মোবাইল রিচার্জের মতই এবার থেকে প্রিপেড স্মার্ট রিচার্জ করতে হবে ইলেকট্রিক মিটারেরও। প্রত্যেক মাসের শুরুতেই করা ওই রিচার্জের থেকেই এবার থেকে টাকা কাটবে ইলেকট্রিক অফিস। এই নতুন স্মার্ট মিটারের স্ক্রিনে প্রতিদিন ইউনিট খরচের সাথে সাথে কত টাকার বিদ্যুৎ খরচ হল, তার হিসেবও দেওয়া থাকবে। তাই এবার থেকে মিটার চেক করেই বিদ্যুৎ-এর ব্যালান্স জানা সহজ হতে চলেছে গ্রাহকদের কাছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো গ্রাহক যদি রিচার্জ না করেন, তবে টাকা শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তার জন্য আগাম কোন নোটিশ দেওয়া কিংবা বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না। তবে আগাম সতর্কতা হিসাবে এক সপ্তাহ আগে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে গ্রাহক জানতে পারবেন যে জমা দেওয়া টাকার পরিমান শেষ হয়ে আসছে।
কোথায় বসেছে এই মিটার?
জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই নাকি পচিমবঙ্গের রাজারহাট,গড়িয়া, সল্টলেক ও শ্রীরামপুর মহকুমার বিভিন্ন স্থানে পুরোনো ডিজিটাল মিটার সরিয়ে স্মার্ট মিটার লাগানো হয়েছে। আগামীদিনে রাজ্যের সর্বত্র এই আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে হুগলি সহ রাজ্যের বাকি জায়গা গুলিতেও পুজোর পরেই বসতে চলেছে এই স্মার্ট মিটার। ইতিমধ্যেই নাকি জরিপ করার কাজও শেষ হয়েছে।
স্মার্ট মিটারের কি কি সুবিধা রয়েছে ?
এইভাবে প্রিপেড স্মার্ট মিটার চালু হল অবৈধভাবে কেউ কিছু করলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের ফোনে মেসেজ যাবে। সবটাই ডিজিটাল। অ্যাডভান্স টেকনোলজি দিয়ে তৈরি এই মিটারে সবটাই হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে বিদ্যুৎ দপ্তরের কন্ট্রোলরুমের কাছে সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ চলে যাবে। এমনকি বাড়িতে কেউ না থাকলেও বাড়ির বিদ্যুতে কোন সমস্যা হলেও গ্রাহকের কাছে মেসেজ চলে যাবে।।
স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে কি অভিযোগ?
যদিও বিভিন্ন সংগঠনের দাবি এই নতুন স্মার্ট মিটার বসলে গ্রাহকদের সমস্যা বাড়বে, এই পদ্ধতি ব্যবহার করেই বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যুতের খরচ বেড়ে গিয়েছে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরা। তবে নতুন স্মার্ট মিটার চালু হলে এবার থেকে মিটার রিডারদের প্রয়োজন হবে না। যার ফলে চাকরি হারাবেন বেশ কিছু মানুষ। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ-এর মুখে পড়বে তাদের গোটা পরিবার। তবে সেক্ষেত্রে তাদের অন্যান্য কাজেও লাগাতে পারবে সংস্থা।
Leave a Reply