মহাকাশচারী হওয়া মানে যেমন গর্বের তেমনই জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে থাকে ঝুঁকি। তাই প্রকৃত অর্থেই মহাকাশচারী হওয়া নেহাত মুখের কথা নয়। এই মুহূর্তে চাঁদের মাটিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছেন ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। আমরা জানি পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব ৩৮৪,৪০০ কিলোমিটার। যা অতিক্রম করে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছাতে ইসরোর বিজ্ঞানীদের সময় লেগেছে মোট ৪০ দিন।
পৃথিবী থেকে বহুদূরে মহাশূন্যে মহাকাশযানে ভেসে বেড়াচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁরা কিভাবে দিন কাটাচ্ছেন কিংবা চাঁদে গিয়ে কি কি সমস্যার মুখে পড়ছেন তা নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। সেই কৌতূহল বশতই মানুষের মনে উঁকি দিচ্ছে একাধিক প্রশ্ন।এতটা পথ সফর করে চাঁদে পৌঁছানো, এবং তারপর মহাকাশে থাকাকালীন এই দীর্ঘ সফরে মহাকাশচারীরা কি ওই একই স্পেসস্যুট আর অন্তর্বাস পরেই থাকেন ? কিংবা বায়ুহীন চাঁদে জলছাড়া কিভাবেই বা জামাকাপড় কাচেন তাঁরা ? আর যদি কাচা না যায় তাহলে তো অতদিন একই স্পেসস্যুট বিশেষ করে একই অন্তর্বাস পরে সংক্রমণের হাত থেকে কিভাবে রক্ষা পান মহাকাশচারীরা?
প্রসঙ্গত চাঁদে কোনো বায়ুমণ্ডলই নেই। তাছাড়া চাঁদে অবতরণ করতেই স্পেসস্যুটে চাঁদের ধুলো লাগবে। একটানা ওই ধুলোবালি ভর্তি স্পেসস্যুট পরে থাকা অস্বস্তিকর তো বটেই তার চেয়েও অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর। আসলে এই ধরণের স্পেসস্যুট গুলি সকলে ভাগাভাগি করে পরেন। তাই স্পেসস্যুটের মধ্যেই বৃদ্ধি পায় জীবাণু। এছাড়া চাঁদে নানান ক্ষতিকারক মহাজাগতিক রশ্মির বিকিরণ হয়। এই পরিস্থিতে মহাকাশে এতটা সময় একই অন্তর্বাস পরে থাকলে সংক্রমণের ভয় থেকে যায় মহাকাশচারীদের।
তাই মহাকাশচারীদের কথা ভেবেই এই সমস্যার সমাধান করতে অস্ট্রিয়ান স্পেস ফোরাম ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মহাকাশবিজ্ঞানীরা BACTeRMA নামে একটি প্রোজেক্ট শুরু করছেন। যার মাধ্যমে তাঁরা এমন এক ধরণের স্পেসস্যুট তৈরী করার চেষ্টা করছেন যা মহাকাশচারীদের অন্তর্বাসের মধ্যে থাকা জীবাণুর বৃদ্ধিকে আটকে দেবে। চাঁদের ধুলো কিংবা মহাজাগতিক রশ্মির হাত থেকে বাঁচতেও ব্যাহার করা হচ্ছে বিশেষ উপাদান।
Leave a Reply