ISRO চন্দ্রযান-৩

ভারত এখন পৌঁছে গিয়েছে চাঁদে। ২৩  আগস্ট সন্ধ্যা ৬:০৪ মিনিটে, চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩। এবারের অভিযানের শুরু থেকেই একেবারে আঁটঘাঁট বেঁধেই নেমেছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। তাই চাঁদে যে  চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ ঘটবে তা নিয়ে দারুন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু জানেন কী চন্দ্রযান-৩-র ল্যান্ডার বিক্রমের সফট ল্যান্ডিং-এর জন্য এই ২৩ অগাস্ট  তারিখটিই কেন বেছে নেওয়া হয়েছে? আসুন জানা যাক আসল কারণ।

চাঁদে ১৪ দিন, দিন থাকে এবং ১৪ দিন রাত্রি। তাই চন্দ্রযান অবতরণের সময়  চাঁদে যদি রাত থাকে তাহলে এটি কাজ কোনো কাজই করতে পারবে না।

তাই অনেক গণনা করার পরেই, ISRO এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে ২৩ অগাস্ট থেকে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের আলো থাকবে।

চাঁদের এই ১৪ দিন রাতের ২২ আগস্টেই শেষ হয়েছে।

আর ২৩ অগাস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর, দক্ষিণ মেরুতে থাকবে সূর্যের আলো। এই সূর্যরশ্মির সাহায্যেই  চন্দ্রযানের রোভারটি চার্জ হবে এবং তার পরবর্তী  কাজ  করবে।

জানা যাচ্ছে  চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার এবং রোভার চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর সৌর শক্তি ব্যবহার করেই তাদের মিশন পরিচালনা করবে।

চাঁদের তাপমাত্রা মাইনাসে 

এপ্রসঙ্গে ISRO-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর প্রমোদ কাল জানিয়েছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে তাপমাত্রা মাইনাস ২৩০ ডিগ্রিতে চলে যায়, এই কারণেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যে ১৪ দিন আলো থাকে তখনই এই মিশন চলে। কারণ কঠোর শীতে দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান চালানো সম্ভব নয়।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের  বিস্তারিত
তবে এখন মানুষের মনে এই চন্দ্রযান-৩  এর অভিযান নিয়ে রয়েছে এক গুচ্ছ প্রশ্ন। চাঁদে চন্দ্রযান-৩ অবতরণের ফলে কী লাভ হবে? এই সফল অবতরণের পর ভারত কীভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে? চাঁদের রহস্য ভারত উদঘাটনকরতে পারবে? নাসার আগে কি ইসরো চাঁদে প্রাণ খুঁজে পাবে? চাঁদে মানুষের বাড়ির স্বপ্ন কি পূরণ হবে? রয়েছে এমন একাধিক প্রশ্ন। এপ্রসঙ্গে NASA থেকে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সিগুলো চাঁদে মানুষের বসবাসের দাবি করেছে। তবে এখন  গোটা বিশ্ব তাকিয়ে ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর দিকে। এখন সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
বিক্রম ল্যান্ডারের বাইরেটা সোনায় মোড়া ?

কিন্তু এরই মধ্যে সকলের নজর কেড়েছে চন্দ্রযান-৩-র বিক্রম ল্যান্ডারের বাইরের আবরণ। যা দেখে অনেকেই ভাবছেন মোরা ল্যান্ডার  বিক্রম কি তবে সোনায় মোড়া? কেনই বা  ল্যান্ডার  বিক্রমকে সোনালী আবরণে মুড়ে ফেলা হল? এর পিছনে কি কোন বৈজ্ঞানিক কারণ আছে? জানা যাচ্ছে চন্দ্রযানের এই সোনালি স্তরকে আসলে ইনসুলেশন বলে। পুরো চন্দ্রযান ল্যান্ডারে যে ধরনের সোনালী আস্তরণ রয়েছে তাকে মাল্টি লেয়ার ইনসুলেশন বলে। আসলে এটি বিভিন্ন স্তরে গঠিত,তাই একে বলা হয় মাল্টি ইনসুলেশন। এই ইনসুলেশনের বেশিরভাগ স্তর গঠিত হয় পলিয়েস্টার দিয়ে। বিক্রম ল্যান্ডারের মাল্টি লেয়ার ইনসুলেশনের সোনালী স্তর অ্যালুমিনিয়াম এবং পলিমাইড দিয়ে তৈরি।  এর অ্যালুমিনিয়াম স্তর ভেতরের দিকে রয়েছে। এর কাজ হল ল্যান্ডারের সরঞ্জামকে বাইরের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করা। এছাড়াও এই ইনসুলেশনের কাজ হল ল্যান্ডারের অভ্যন্তরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ধরে রাখার পাশাপাশি চাঁদে অবতরণের সময় যে রুক্ষ ধুলোবালি থাকে তার থেকেও ল্যান্ডারকে রক্ষা করা।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *