মুকেশ আম্বানি

আমাদের দেশে রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার মুকেশ আম্বানির মতো ধনকুবের আর দ্বিতীয় কেউ নেই। গোটা আম্বানি পরিবারের বিলাসবহুল জীবন যাপনের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে গোটা দুনিয়া। আরব সাগরের পাড়ে মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় অবস্থিত তাঁদের  রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি অ্যান্টিলিয়া ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি বাসভবন। ২৭ তলার বিলাসবহুল এই বাড়িটিকে নানান সুযোগ-সুবিধা এবং সমস্ত রকম প্রাচুর্যে ভরিয়ে দিয়েছেন মুকেশ আম্বানি। যার অন্দরমহলে প্রবেশ করলেই চোখ ধাঁধিয়ে যাবে যে কারও। কিন্তু জানলে অবাক হবেন এত বড় বাড়িতে সব ঘর বাদ দিয়ে গোটা আম্বানি পরিবার নিজেদের থাকার জন্য বেছে নিয়েছেন শুধুমাত্র ২৭ তলাটিকে। বিলাসবহুল এই বাড়ির সবচেয়ে উপরের তলাতেই সপরিবারে বাস করেন গোটা আম্বানি পরিবার। কিন্তু কেন? এর পিছনেও রয়েছে এক বিশেষ কারণ। আসলে এক্ষেত্রে বিশেষ যোগ রয়েছে বাস্তুশাস্ত্রের।

এপ্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে খোদ নীতা আম্বানি জানিয়েছিলেন, তাঁর এমন বাড়ি পছন্দ যেখানে সব ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে। এই কারণেই নিজেদের বসবাসের জন্য গোটা আম্বানি পরিবার ২৭ তলাকেই বেছে নিয়েছেন। আসলে এরসাথে এক অদৃশ্য যোগসূত্র রয়েছে বাস্তু শাস্ত্রের। বাস্তুশাস্ত্রের সাথে যুক্ত  সেই নিয়মগুলিকেই বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন মুকেশ আম্বানি এবং তার স্ত্রী নীতা আম্বানি।বাড়িতে সূর্যালোক প্রবেশ বাস্তুশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। কারণ আমাদের সৃষ্টির মূল ভিত্তি সূর্য। এই সূর্যের আলো পৃথিবীতে প্রবেশ করলে তবেই  পৃথিবীতে জীবনের সংসার হয়।

হিন্দু ধর্মে সূর্যকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করা হয়। পূর্ব দিকের অধিপতি গ্রহ সূর্য জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী ধন সম্পদ, স্বাস্থ্য প্রদান করে থাকে। তাই বাস্তুশাস্ত্র মেনে পূর্ব দিকে ঘর করলে সেই গৃহের সদস্যরা সুস্থ এবং দোষ মুক্ত হয়। আর সেই বাড়ির সদস্যরাও উচ্চাকাঙ্ক্ষী সদ্গুণে  পরিপূর্ণ হয়। আর তাঁদের চোখে মুখে থাকে এক অদ্ভুত তেজ। আর সূর্য মানেই সম্মানের প্রতীক। জানা যায় সকালে সূর্য ওঠার পর যে আলো আসে তা নাকি অত্যন্ত গুণধর্মী এবং শক্তিযুক্ত। এই কারণে বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী পূর্ব ও উত্তর দিকের মাহাত্ম্য অত্যাধিক।

বলা হয় সূর্য ইতিবাচক শক্তির উৎস। তাই সেই শক্তির প্রবেশদ্বার হল পূর্ব দিক। অন্যদিকে উত্তর ও ঈশান কোণ থেকে ব্রহ্মাণ্ডের শক্তি বাড়িতে প্রবেশ করে। তাই এই দুই শক্তি মিলে বাড়ির ভিতরে শুভশক্তির বলয় সৃষ্টি করে। যা সেই গৃহের সদস্যদের মনে শুভ শক্তির উদয় ঘটায়। তাই বাড়ি থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর করতে বাড়িতে সূর্যের আলো পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরী। তা না হলে সেই বাড়িতে বাস্তু দোষ আর গ্রহ দোষ দেখা যায়।

আগেই বলেছি এর ফলে বাড়িতে সূর্যের আলো প্রবেশ না করলে ইতিবাচক শক্তির পরিবর্তে নেতিবাচক শক্তির এসে প্রবেশ করে। যার ফলে বাস্তু দোষ কিংবা গ্রহ দোষ হয়। যার ফলে সেই বাড়ির সদস্যদের মধ্যে  মানসিক অবসাদ,আর্থিক লোকসান, কিংবা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। তাই বাড়ির প্রতিটি কোণে সূর্যের আলো পৌঁছানো দরকার। তাই বাস্তু শাস্ত্র মেনে এমন জায়গায় রান্নাঘর আর বাথরুম তৈরি করতে হয় যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায়। আর এইভাবে শুভ শক্তির উদয় ঘটলে সেই বাড়ি সব দোষ মুক্ত হয়। এর ফলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির সাথে সাথেই বাড়ির সদস্যদের মনে তৈরি হয় জীবনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।  বাস্তুশাস্ত্র মেনে সূর্যের অবসান অনুযায়ী কাজ করলেও মেলে অনেক সুফল।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *