বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবীর কত-টুকুই বা আমরা জানি! এক দেশ থেকে আর এক দেশের সীমানা অতিক্রম করলেই বদলে যেতে থাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষজন, রুচি-ব্যবহার, আদব-কায়দা, পোশাক-আশাক এমনই কত কি! সবমিলিয়ে এই জগৎ সংসারের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে আছে না জানি কত অজানা রহস্য। আর অজানাকে জানারকৌতূহল মানুষের বরাবরই। পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ হয়েছে যার নামটুকুই হয়তো আমাদের জানা। কিন্তু তারও বাইরে এমন কিছু জিনিস থাকে থাকে যা সম্পর্কে জানার কৌতূহল চেপে রাখতে পারে না আট থেকে আসি কেউই। অদ্ভুত এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মোড়া ইউরোপ মহাদেশের এমনই একটি দেশ হল গ্রীনল্যান্ড।
জানলে অবাক হবেন বেজায় ঠান্ডার এই দেশ গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫৮ হাজার। বিশ্বের দ্বাদশ বৃহত্তম দেশ গ্রীনল্যান্ড এখনও ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জানলে অবাক হবেন এই দেশের প্রায় ২০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকাই রয়েছে তুষারাচ্ছন্ন। এখানকার মানুষ মাটি নয়, হেঁটে যান বরফের উপর দিয়ে। আসুন জেনে নেওয়া যাক গ্রিনল্যান্ড সম্পর্কে এমনই একগুচ্ছ আকর্ষণীয় তথ্য।
নামের বিপরীত:
নাম শুনে প্রথমেই মনে হতে পারে নামের মতই বোধহয় সবুজে ঘেরা এই দেশ। কিন্তু আসলে একেবারেই তার উল্টো। সবুজের লেশমাত্র নেই এই দেশে। গ্রিনল্যান্ডের ৮৫% এলাকাই রয়েছে ধবধবে সাদা বরফে ঢাকা। হিমবাহের উপস্থিতি দেশটির সৌন্দর্য্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
যাতায়াতের মাধ্যম কুকুর:
সারা বছর বরফে ঢাকা থাকায় এখানকার মানুষের পা মাটিতেই পড়ে না। এটি পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে ট্রেন চলাচল করে না। এখানকার মানুষ যাতায়াতের জন্য নৌকা হেলিকপ্টার কিংবা কুকুরে টানা স্লেজ গাড়ি ব্যবহার করেন।
সূর্য অস্ত যায় না:
অদ্ভুত এই দেশে গ্রীষ্মকালে সূর্য অস্ত যায় না। স্থানীয় সময় অনুযায়ী মাঝরাতেও গ্রিনল্যান্ডে সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও এখানকার তাপমাত্রা থাকে শূন্য থেকে চার ডিগ্রির মধ্যে। শীতকালের আকাশে দেখা যায় বিভিন্ন রঙের আলোর মেলা। তাই একে বলা হয় মেরুজ্যোতি।
বিরল প্রজাতির প্রাণীর বাস:
গ্রীনল্যান্ড এমন একটি দেশ যেখানে পৃথিবীর সমস্ত বিরল প্রজাতির প্রাণীরা বাস করে। তালিকায় রয়েছে সাদা খরগোশ,এরমিনের,রেইনডিয়ার, এবং আর্কটিক ফক্স-এর মতো প্রাণীরা। যাদের দেখা মেলে না বিশ্বের অন্য কোন দেশে।
পোলার বিয়ার বা মেরু ভাল্লুক:
গ্রীনল্যান্ড বিখ্যাত মেরু ভাল্লুক বা পোলার বিয়ারদের জন্যও। এখানকার বিস্তৃত তুষারাবৃত অঞ্চলের বরফের মধ্যে থাকতেই ভালবাসে এরা।
বরফ গললেই ধ্বংস পৃথিবী:
বলা হয় গ্রীনল্যান্ডের এত বেশি বরফ আছে যা গলতে শুরু করলেই পৃথিবী এগিয়ে যাবে ধ্বংসের মুখে।
পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ
গ্রীনল্যান্ড হলো বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ। পর্যটকদের এই দ্বীপের প্রত্যেক দিক ভ্রমণ করতে গেলে তার জন্য ৮০ ঘন্টা করে সময় লাগে।
গ্রীনল্যান্ডের মাছ
এছাড়াও এখানে রয়েছে ২২৫ প্রজাতির মাছ। বাসিন্দারা মূলত এই মাছ বিক্রি করেই সংসার চালান।
নিজস্ব মুদ্রা নেই
এখানেই শেষ নয় গ্রীনল্যান্ড এমন একটি দেশ যার নিজস্ব কোন মুদ্রা নেই। আসলে গ্রীনল্যান্ড ডেনমার্কের একটি অংশ। তাই এখানে ডেনমার্কের মুদ্রা চলে। এখানকার এক ডলার ভারতের ১০ টাকার সমান।
Leave a Reply