‘চন্দ্রযান ৩’ এর গোটা সফলতা নির্ভর করছে ‘সফট ল্যান্ডিং’ এর উপর! জানেন এই ‘সফট ল্যান্ডিং’ আসলে কি?

এবারেও সফট ল্যান্ডিং করবে চন্দ্রযান ৩! সাহায্য করবে শক্তিশালী যন্ত্র থ্রাস্টার, কী এই থ্রাস্টার?কীভাবে কাজ করবে?

এবারেও সফট ল্যান্ডিং করবে
চন্দ্রযান ৩!

সাহায্য করবে শক্তিশালী
যন্ত্র থ্রাস্টার!

অসম্ভবকে করবে সম্ভব!
চন্দ্রযান ৩ কে করবে সফল!

এর ধারে কাছে নেই
অন্য কোনও যন্ত্র!

কী এই থ্রাস্টার?
কীভাবে কাজ করবে?

এই মুহূর্তে সবথেকে ইণ্টেরেসটিং একটি টপিক ‘চন্দ্রযান ৩’। এটি শুধু ইণ্টেরেসটিংই নয় একই সাথে চ্যালেঞ্জিংও বটে। আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের চন্দ্রযান ৩ এর সবচেয়ে ইণ্টেরেসটিং একটি ফ্যাক্টের ব্যাপারে জানাব। যা অনেকেই শুনেছেন ঠিকই কিন্তু বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। আপনাদের মাথায়ও আসেনি এই ফ্যাক্টের বিষয়টি। ইণ্টেরেসটিং এই ফ্যাক্টটি হল থ্রাস্টার। চন্দ্রযান ৩ এর বিষয়ে যখনই কোনও তথ্য পাচ্ছেন, তার মধ্যে থ্রাস্টার এই শব্দটি শুনছেন! ইসরোর বিজ্ঞানীদের মুখেও বারে বারে শোনা যাচ্ছে, ‘চন্দ্রযান ৩’ কে থ্রাস্টারের সাহায্যে ল্যান্ড করানো হবে! এখানেই প্রশ্ন এই থ্রাস্টার আসলে কি? আপনারা জানলে আশ্চর্য হবেন, চন্দ্রযান ৩ এর সম্পূর্ণ সফলতা নির্ভর করছে থ্রাস্টার এর উপর। থ্রাস্টারের গুরুত্ব অনেক। থ্রাস্টার সম্পর্কে জানার আগে সবার আগে জানতে হবে সফট ল্যান্ডিং সম্পর্কে। কারণ সফট ল্যান্ডিং ও থ্রাস্টারের একটা সম্পর্ক রয়েছে।

সফট ল্যান্ডিং আসলে কি?

প্রথমেই জানাই চাঁদের বুকে কোনও মহাকাশযানকে সফট ল্যান্ডিং করানোটা মোটেও সহজ নয়। এই সফট ল্যান্ডিং বিষয়টা অনেকটা এই রকম – পাখির পালক যেভাবে উপর থেকে ধীরে ধীরে ভেসে ভেসে মাটিতে পড়ে, ঠিক তেমনই। চন্দ্রযান ৩ কে ঠিক এই ভাবেই পাখির পালকের মতন সফট ল্যান্ডিং করানো হবে।

কেন সফট ল্যান্ডিং করানো হবে?

পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তির মতন, চাঁদেরও মধ্যাকর্ষণ শক্তি রয়েছে। চাঁদের কক্ষপথে কোনও বস্তু ঢুকে পড়লে, চাঁদের কাছাকাছি চলে গেলে, চাঁদ তার সমস্ত বল প্রয়োগ করে বস্তুটিকে সজোরে নিজের কাছে টেনে নেবে। এই সময় বস্তুটি তীব্র বেগে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়বে। সেটি তখন হার্ড ল্যান্ডিং করবে। এর ফলে বস্তুতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যেটা হয়েছিল চন্দ্রযান ২ এর ক্ষেত্রে। তাই চন্দ্রযান ৩ এর ক্ষেত্রে এই ভুলের পুনরাবৃত্তি না ঘটাতেই সফট ল্যান্ডিং করানো হবে। এক্ষেত্রে ইসরো কতৃপক্ষ, চন্দ্রযান ৩ কে সফট ল্যান্ডিং করানোর জন্য চন্দ্রযান ৩ টিকে একটি ঊর্ধ্বগতি দিয়ে ব্যালেন্স করে রাখবে। আর এই ব্যালেন্স করার কাজটি করার জন্য চন্দ্রযান ৩ এ লাগানো হয়েছে থ্রাস্টার নামক একটি যন্ত্র।

থ্রাস্টার কি?

থ্রাস্টার হল চন্দ্রযান ৩ এর পেছনে থাকা একটি যন্ত্র। চন্দ্রযান ৩ যখন ধীরে ধীরে চাঁদের মাটিতে ল্যান্ড করবে, তখন এই থ্রাস্টার থেকে আগুন বেরোবে। আগুন বেরিয়ে এটি চন্দ্রযান ৩ কে উপরের দিকে নিয়ে যাবে। আসলে থ্রাস্টারের কাজ হল, চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ব্যালেন্স করা। চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তি সব সময় চাইবে, চন্দ্রযান ৩ কে চাঁদের দিকে তীব্র বেগে টানতে। এই সময় যদি চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ব্যালেন্স করা না যায়, তাহলেই বিপদ। চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে চন্দ্রযান ৩ মুখ থুবড়ে পড়বে চাঁদের মাটিতে। এটাই হল হার্ড ল্যান্ডিং। এই অঘটন থেকে বাঁচাতেই থ্রাস্টার চন্দ্রযান ৩টিকে উপরের দিকে টানবে। অর্থাৎ, চাঁদের মধ্যকর্ষণ শক্তির বিপরীতে টানবে। এইভাবে চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তি ও থ্রাস্টার উভয়ের বল প্রয়োগে ব্যালেন্স এলেই, চন্দ্রযান ৩ ধীরে ধীরে ফুলের পাঁপড়ির নেমে যাবে চাঁদের মাটিতে। আর এখানেই হবে সফট ল্যান্ডিং। আর একবার এই সফট ল্যান্ডিং হলেই চন্দ্রযান ৩ মিশন অবধারিতভাবে সাকসেসফুল।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *