ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাছাড়া বিড়ি,সিগারেটের মতো দাহ্য বস্তুর জ্বলন্ত অংশ কিংবা দেশলাই কাঠি থেকে ঘটে যেতে পারে অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাই এই সমস্ত দুর্ঘটনার কথা ভেবেই ভারতবর্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল, কিংবা বাস ট্রেনের মতো গণপরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ। তাই এই সমস্ত জায়গায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা ভারতীয় আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। যদিও এসব নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেকেই প্রকাশ্যে ধূমপানকরে থাকেন।
সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি থেকে সেকেন্দ্রাবাদগামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ঘটে গিয়েছিল এমনই এক অদ্ভুত ঘটনা। ট্রেনে যে ফায়ার এলার্ম আছে তা না জেনেই বাথরুমে গিয়ে ধূমপান করছিলেন এক ব্যক্তি। যার ফলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনে থাকা ফায়ার অ্যালার্ম বাজতে শুরু করে এবং গোটা ট্রেনের কামরা ধোঁয়ায় ভরে যায়। যার ফলে অহেতুক যাত্রীদের মধ্যে তৈরি হয় এক ভয়ের পরিবেশ। প্রাণ বাঁচাতে যাত্রীরা সবাই ট্রেনের কামরাতেই ছোটাছুটি করতে শুরু করে দেন। কিন্তু ট্রেনের মধ্যে কখনই সিগারেট খাওয়া উচিত নয়। কেউ যদি ভুল করেও এই ধরনের কাণ্ড ঘটিয়ে থাকেন তাহলে সে ক্ষেত্রে রেলওয়ে বোর্ডের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুযায়ী টিকিট পরীক্ষকএবং রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনীরা ধৃত ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পারেন। তাই এক্ষেত্রে কোনো শিশু কিংবা বয়স্কদেরও কোনো চার থাকে না। রেলওয়ে আইনের ১৬৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী ট্রেনে ধূমপান করা একটি অপরাধ। তাই রেলের এই আইন অমান্য করলে হতে পারে মোটা অংকের জরিমানা। এছাড়া ট্রেনের সহযাত্রীদের বারণ না শুনলে হতে পারে ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
ট্রেনের টয়লেটেও ধূমপান করা আইনত অপরাধ। কারণ টয়লেটের বর্জ্যে জ্বলন্ত সিগারেটের অংশ বা কিংবা আধপোড়া দেশলাই কাঠি নিক্ষেপ করলে ঘটে যেতে পারে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা। অতীতে রেলওয়েতে যেসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেই সব ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছে, ট্রেনে ধূমপান বা দাহ্য পদার্থ পরিবহণের কারণেই দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছিল। এই কারণেই ট্রেনে ধূমপান নিষিদ্ধ করে দিয়েছে সরকার।
ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা রোধ করার উদ্দেশ্যে, রেলওয়ের ২,৫০০ টিরও বেশি কোচে আগুন এবং ধোঁয়া সনাক্তকরণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। COTPA অনুযায়ী কোনও যাত্রী যদি ট্রেনে ধূমপান করেন, তাহলে তাঁকে ২০০ টাকা এবং রেলওয়ে আইনের অধীনে ১০০ টাকা জরিমানা করা যেতে পারে। এছাড়াও রয়েছে আরও কিছু জিনিস যা ট্রেনে কখনই ট্রেনে নিয়ে ওঠা যায় না। তালিকায় রয়েছে কাঁচ, অ্যাসিড, কেমিক্যাল,স্টোভ, গ্যাস সিলিন্ডার,বাজি,কোন পোষ্য, ছুরি কিংবা রাইফেল, মদ,সিগারেট,কাঁচা মাছ,মাংস কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস ইত্যাদি।
Leave a Reply