‘বিশ্বকর্মা’ প্রকল্প

ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজ্য হোক কিংবা কেন্দ্র প্রত্যেক সরকারই জনস্বার্থে নিয়ে আসে একাধিক প্রকল্প। যার মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকেন দেশের হাজার হাজার মানুষ। যে প্রকল্পে যত বেশি সুবিধা সেই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা তত বেশি। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের ‘লক্ষী ভান্ডার’, ‘স্বাস্থ্য সাথী’  কিংবা কন্যাশ্রী প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই প্রকল্পগুলি ইতিমধ্যেই ব্যাপক জন জনপ্রিয়তা পেয়েছে সারা দেশে। এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরেও সাড়া ফেলে দিয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প। তবে এবার বাংলার এই সমস্ত প্রকল্পকে টেক্কা দিয়েই  হস্তশিল্পের সাথে যুক্ত দেশের সমস্ত  কারিগরদের জন্য উপহারস্বরূপ বিশ্বকর্মা প্রকল্প আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

চলতি বছরে মাত্র কদিন আগেই লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় এই প্রকল্পের উল্লেখ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই এদিন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের দেশের সমস্ত ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প কারিগর অর্থাৎ তাঁতি, স্বর্ণকার, নাপিত, কর্মকার, কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি সহ বিভিন্ন পেশার কারিগররা বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবেন। আগামী মাসেই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন অর্থাৎ ১৭ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই ‘বিশ্বকর্মা’ প্রকল্প চালু করা হবে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন ১৩ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে উপকৃত হবেন ৩০ লক্ষ ঐতিহ্যবাহী শ্রমিক। অন্যান্য প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পেও টাকা দিয়ে সাহায্য করা হবে আমাদের দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী কারিগরদের। যার জন্য এই নতুন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেওয়া হবে মোট তিন লক্ষ টাকার ঋণ।  জানা যাচ্ছে এই প্রকল্পের প্রথম কিস্তিতে ‘উদার শর্তে’ দেওয়া হবে ১ লক্ষ টাকার  ঋণ আর দ্বিতীয় কিস্তিতে দেওয়া হবে আরও দুই লক্ষ টাকার ঋণ। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া এই ঋণের সুদ থাকবে মাত্র পাঁচ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সরকারের তরফে এই সমস্ত পেশার সাথে যুক্ত কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ পর্বে প্রথম প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে সমস্ত কারিগরদের। এছাড়া বিভিন্ন পেশার সাথে যুক্ত কারিগরদের তাদের প্রয়োজনীয় আধুনিক জিনিসপত্র যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সাহায্য করা হবে ১৫ হাজার টাকা। এই ভাবেই লোকসভা ভোটের আগেই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্মের সাথে যুক্ত কারিগরদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *