আপনার সন্তান স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে কি সুরক্ষিত? কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত?
আপনার সন্তান
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে
সুরক্ষিত কিনা বুঝবেন কি করে?
সন্তান নিরাপদে আছে কি না
যাচাই করবেন কীভাবে?
সন্তানকে কোথাও ভর্তির আগে
কি কি বিষয় মাথায় রাখবেন?
কোন ৫টি ক্ষেত্রে অবশ্যই খোঁজ নেবেন?
দেখুন
এক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ খবর নিনঃ স্কুল হোক কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানেই সন্তানকে ভর্তি করানোর স্বপ্ন দেখছেন, সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আগে থেকেই খোঁজ খবর নিন। প্রতিষ্ঠানটির হিস্ট্রি সম্পর্কে জানুন। তাদের রেকর্ড দেখুন। ভালো নাকি খারাপ, খুঁটিনাটি তথ্য যাচাই করুন। এরপর পা বাড়ান।
দুই, প্রতিষ্ঠানের নাম, যশ, খ্যাতি দেখে ছুটবেন নাঃ অনেক বাবা মা শিক্ষা প্রাঙ্গনের নাম, যশ, খ্যাতি দেখে সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দেন। লোভে পড়ে বহু বাবা মা এই কাজ করে থাকেন। অন্যদের কাছে সন্তানের স্ট্যাটাস বাড়াতে এই পথ অবলম্বন করছেন বহু বাবা মা। অথচ তারা যাচাই করতে ভুলে যান আদৌ সেই প্রতিষ্ঠানটি তাদের সন্তানের জন্য উপযুক্ত কি না! এই ভুলের জন্যই সম্প্রতি প্রাণ হারিয়েছে স্বপ্নদ্বীপ নামক যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্রটি। যাদবপুরের নাম, যশ, খ্যাতি দেখেই স্বপ্নদ্বীপ নামক এই এই ছাত্রটিও ভর্তি হয়েছিল নামজাদা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ই তার প্রাণ কাড়ল। তাই প্রতিটি বাবা মায়েদের বলব আজ থেকেই সাবধান।
তিন, শিক্ষা প্রাঙ্গন কতটা সুরক্ষিত ও নিরাপদ খুঁটিয়ে দেখুনঃ বিপদ বলে কয়ে আসে না। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। কিন্তু সাবধানতার কোনও বিকল্প হয় না। তাই সবার প্রথমে দেখুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুরক্ষা ব্যবস্থা কতটা মজবুত। কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জেনে নিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা আছে কি না। থাকলেও কতগুলো আছে, কোথায় কোথায় আছে প্রশ্ন করুন। উত্তর জানুন। প্রতিষ্ঠানের পাবলিক ডোমেনগুলোতে নজরদারি ব্যবস্থা সক্রিয় কি না খোঁজ নিন। ক্লাসে কিংবা যেখানে ছাত্র ছাত্রীদের জমায়েত হয় সেই স্থানগুলো সিকিউর কি না জানুন।
চার, পড়ুয়া ও শিক্ষকের সম্পর্ক কেমন যাচাই করুনঃ প্রতিটি বাবা মা শিক্ষকদের ভরসায় সন্তানকে শিক্ষার অঙ্গনে পাঠায়। সেখানে শিক্ষকেরাই বাবা মায়ের ভূমিকা পালন করেন। তাই শিক্ষক ও পড়ুয়ার মানসিক মেলবন্ধন খুবই জরুরি। একজন শিক্ষকের সঠিক আদর্শ অনুসরণ করে একজন আদর্শ শিক্ষক গড়ে ওঠে। শিক্ষকের আচরণ শিক্ষার্থীকে প্রভাবিত করে। তাই সন্তানকে যে প্রতিষ্ঠানেই ভর্তি করান না কেন, সেখানকার পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সম্পর্কের সমীকরণ যাচাই করুন। খুঁটিয়ে বার করুন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের সাথে কতটা সাবলীল ও বন্ধুত্ব মনোভাবাপন্ন সেই বিষয়টিও।
পাঁচ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সন্তানের অভিযোগগুলো শুনুনঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেমন সেটা বাবা মায়ের থেকেও পড়ুয়ারা বেশি ভালো বলতে পারে। তার কারণ পড়ুয়ারাই শিক্ষার প্রাঙ্গণে অধিক সময় কাটায়। তাই তাদের থেকে ভালো তথ্য কেউ দিতে পারে না। তাদের থেকে ভালো কেউ বুঝতে পারে না। আর এক্ষেত্রে প্রতিটি বাবা মায়ের উচিত সন্তানের কাছ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খুঁটি নাটি জানা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তাদের অভিযোগ থাকলে সেগুলো শোনা।
বাড়ির পরেই প্রত্যেক পড়ুয়াদের সেকেন্ড হোম স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ একজন পড়ুয়া বাড়িতে যতটা না সময় কাটায় তার থেকেও বেশি সময় কাটায় এই ৩ ক্ষেত্রে। তাই এই তিনটি স্থান আপনার সন্তানের জন্য সুরক্ষিত হওয়া আবশ্যক। কারণ আপনার সোনার টুকরো সন্তানটি এখানেই বেশির ভাগ সময় কাটায়। ফলে অনেকক্ষণ নজরের আড়ালে থাকে।
সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। তাই এই ৩টি স্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনার প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। সম্প্রতি এই ৩ ক্ষেত্রে গা ফিলতি করে চরম মূল্য দিতে হল সৌরনীল ও স্বপ্নদ্বীপ নামক দুই সন্তানের বাবা – মাকে। এদের মত আর কোনও মা বাবার যাতে কোল খালি না হয়, সেই জন্য সন্তানকে স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
Leave a Reply