যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ৭টি মারাত্মক অভিযোগ! ক্যাম্পাসের ৮০ শতাংশ স্থানেই নেই CCTV, সুরক্ষা কবচ, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে
৭টি মারাত্মক অভিযোগ!
ক্যাম্পাসের ৮০ শতাংশ স্থানেই নেই CCTV!
চুপিসারে খুলে ফেলা হয়েছে!
কোথাও নেই সুরক্ষা কবচ!
এণ্টি র্যাগিং সেলের হুঁশ নেই!
পড়ুয়াদের খোঁজা রাখে না!
পদে পদে অমান্য
UGC-র গাইডলাইন!
ঘোর বিপাকে জেইউ!
উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়! অস্বাভাবিক ও রহস্যজনকভাবে প্রাণ হারিয়েছে যাদবপুরের ১ম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদ্বীপ কুণ্ডু। ছাপোষা, মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় ছেলে। তাঁকে নিয়ে স্বপ্নের শেষ ছিল না বাবা মায়ের। অনেক আশা ছিল, ছেলে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়বে, ভাল কেরিয়ার গড়বে, ভালো চাকরি করে, সংসারের হাল ধরবে। স্বপ্নদীপকে ঘিরে, এমন স্বপ্নই বুনেছিল তাঁর বাবা মা। কিন্তু, ১৮ বছর ধরে তিলে তিলে গড়া সেই স্বপ্নই হঠাৎ শেষ। জীবন্ত সুস্থ, ছেলেকে এলিট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর ঠিক ৩ দিনের মাথায়, সেই ছেলে আর নেই। সে এখন পরলোকের বাসিন্দা। ভীষণভাবে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল স্বপ্নদ্বীপ । ফিরেছে তবে কাচের গাড়িতে, সাদা কাপড়ে মুখ ঢেকে। ছেলের ছবি বুকে আঁকড়ে, হাহাকার করছেনর সন্তানহারা মা-বাবা। তাঁদের এই অপূরণীয় ক্ষতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ৭টি মারাত্মক গা ফিলতির অভিযোগ উঠে আসছে-
এক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সিংহভাগ জায়গাতেই সিসিটিভি নেই। মূল ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে, কোনও হস্টেলের সামনেই কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে কে আসছে, কে বেরোচ্ছে তার কোনও হিসেব নেই। অডিট করার কেউ নেই। হস্টেলের যে বিল্ডিং এ স্বপ্নদ্বীপের মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে, সেখানেও কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। যার ফলে সেদিন রাতে ঠিক কি ঘটেছিল তা উদ্ধার করা বেশ কঠিন। স্বপ্নদ্বীপ কি সেদিন নিজে থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল নাকি কেউ তাকে ধাক্কা দিয়েছিল নাকি তাকে লাফ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল, সেগুলো খুঁজে বার করাটাই এখন চাপের। তদন্তের স্বচ্ছতা কোথাও গিয়ে যেন ধাক্কা খাচ্ছে, শুধুমাত্র সিসি ক্যামেরা না থাকায়। যদি সিসি ক্যামেরা থাকত তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই এই ঘটনার সত্য মিথ্যা যাচাই করা সহজ হত।
দুই, যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য থাকাকালীন, কিছু ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হলেও, সেগুলি পরবর্তীকালে খুলে ফেলা হয়। কিন্তু কেন খুলে ফেলা হয়? কার নির্দেশে খুলে ফেলা হয়? নিরাপত্তার খাতিরে লাগানো সিসি ক্যামেরা কারা খুলেছে, সেই নিয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
তিন, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে UGC-র কঠোর কিছু নির্দেশিকা রয়েছে, সেই সব নিয়ম ফলো করেনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
চার, যাদবপুরের কয়েকটি ডিপার্টমেন্টে যেখানে দামি যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেখানেই কেবল সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। অথচ, যেখানে পড়ুয়ারা পড়াশোনা করে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই! সুরক্ষা কবচের বাইরে ছাত্র ছাত্রীরা। অথচ দিন রাত পাহারা দেওয়া হচ্ছে দামী মেশিন, যন্ত্রপাতি! ক্যাম্পাসে কোনও অপরাধ ঘটলে, তার দায় নেবে কে? কারও ক্ষতি হলে দোষ কার! উত্তর জানা নেই কারো!
পাঁচ, UGC-র নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম বর্ষের পড়ুয়া অর্থাৎ নতুন জুনিয়রদের হস্টেলে আলাদা রাখতে হয়। যাতে সিনিয়রদের সাথে কোনও ঝামেলা না হয়। এই বিষয়টি নিয়ে কোনও মাথা ব্যাথাই নেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের। সিনিয়রদের মাঝেই রাখা হয় জুনিয়রদের।
ছয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস ও সুপারদের মধ্যে যোগাযোগের ভারসাম্য নেই। দায় এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা প্রবল।
সাত, যাদবপুরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ে এণ্টি র্যাগিং সেল থাকলেও সেটি একটিভ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও র্যাগিং হচ্ছে কি না সেই খোঁজ রাখারও কেউ নেই।
Leave a Reply