জীবনের শেষ প্রান্তে ক্ষুদিরামের শেষ কথাটি কি ছিল? যা শুনে থমকে গিয়েছিল ব্রিটিশ বাহিনী
জানেন জীবনের শেষ প্রান্তে
ক্ষুদিরামের শেষ কথাটি কি ছিল?
কি এমন বলেছিলেন তিনি
যার জন্য এত হেসেছিলেন?
শেষ নিঃশ্বাসের আগে
কোন ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন?
যা শুনে থমকে গিয়েছিল
ব্রিটিশ বাহিনী!
শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ!
ভারতকে স্বাধীন করতে যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে অল্পবয়সী এক তরুণ ক্ষুদিরাম বসু। আজকের স্বাধীন ভারতবর্ষের পিছনে অন্যতম কারিগর এই মহান বিল্পবী। যিনি দেশের জন্য নিজের তরতাজা প্রাণ বিসর্জন দিতে দুবার ভাবেননি। গর্ভধারিণী মায়ের পরোয়াও করেননি। তার কাছে দেশমাতাই সব। ভারতে এত স্বাধীনতা সংগ্রামী রয়েছে, কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন ক্ষুদিরাম বসু। কারণ একটাই তাঁর সাহস! ব্রিটিশদের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলা, কাঁদ উঁচিয়ে, বুক ফুলিয়ে দেশ স্বাধীনের হুঙ্কার দেওয়া- বাংলায় আর কেউ দেখাতে পারেননি।
ক্ষুদিরাম বসু ব্যক্তিক্রম। অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা প্রাণ বাঁচিয়ে দেশের জন্য লড়েছিলেন। অন্যদিকে ক্ষুদিরাম যিনি নিজেকে সামনে এগিয়ে দিয়েছিলেন। দেশমাতার ঢাল স্বরূপ তিনি নিজের প্রাণ বাজি রেখেছিলেন। দেশমাতার অত্যাচার তিনি সহ্য করেননি। কেউ দেশমাতার সাথে অন্যায় করলেই তিনি গর্জে উঠতেন। তেমনি এক অত্যাচারী, ব্রিটিশ বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড। যাকে চিরজীবনের জন্য পরপারে পাঠাতে, তার দিকে জীবন নাশের বস্তু ছুঁড়েছিলেন ক্ষুদিরাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত ধরা পড়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ পুলিশের হাতে। আর ধরা পড়তেই একবারের জন্য পালানোর চেষ্টা করেননি। বরং বুক বাজিয়ে ব্রিটিশদের চোখে চোখে রেখে দেশমাতার মুক্তির দাবি জানিয়েছিলেন। দেশমাতার যাতে কিছু না হয় সেই আকুতিই করেছিলেন। একটি বারের জন্যও প্রাণ ভিক্ষা করেননি। তাঁর ব্যক্তিত্ব, ভয়হীন মুখভঙ্গি অবাক করেছিল ব্রিটিশদের। দুর্ভাগ্যের বিষয় ক্ষুদিরামের কাণ্ডে ক্ষেপে যান ব্রিটিশরা। তার জীবন কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছিল ব্রিটিশ বাহিনী। সেই কথা শুনেও একটুর জন্যও টলেনি ক্ষুদিরামের পা।
ক্ষুদিরামকে পরপারে পাঠানোর জন্য তৈরি হয় মঞ্চ। তৈরি হয়ে আসেন জল্লাদেরা। ক্ষুদিরাম যখন প্রাণ ত্যাগ করেন তখন তার বয়স মাত্র ১৮ বছর, ৭ মাস এবং ১১ দিন। তাঁকে পরপারে পাঠানো হবে, শেষ নিঃশ্বাস ফেলে দুনিয়ার মায়া ছাড়িয়ে দেওয়া হবে, এই সবে কোনও ভয় ছিল না তার। মুখে হাসি। অনাবিল আনন্দ। চোখ শুকনো, অশ্রুহীন। জল্লাদ থেকে ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী ক্ষুদিরামের অভিব্য্যক্তি দেখে বিস্মিত। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে ক্ষুদিরামের শেষ ইচ্ছে জানতে চাইলে জানান- তিনি দেশমাতাকে রক্ষার কারিগরি বিদ্যা জানেন, অনুমতি পেলে তিনি সেই বিদ্যা সকলকে শিখিয়ে যেতে চান। আর নিজে থেকে একটি প্রশ্ন করেন জল্লাদদের- প্রাণ কেড়ে নেওয়ার দড়িতে মোমের প্রলেপ দেওয়া হওয়া কেন? এই প্রশ্ন শুনে সেদিন একটি শব্দও বার করতে পারেননি জল্লাদেরা।
Leave a Reply