আমাদের দেশের অধিকাংশ নিত্য যাত্রীদের ‘লাইফ লাইন’ ভারতীয় রেল। ট্রেন ছাড়া মানুষের জীবন একপ্রকার অচল। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী দেশের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় রেলের পরিষেবা। এমনকি এখনও চলছে দেশের অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় চলছে রেললাইন বিস্তারের কাজ। দূরে হোক কিংবা কাছে যে কোন মানুষের কাছেই কম খরচে এবং দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাওয়ার জন্য একমাত্র ভরসা এই দূরপাল্ল ট্রেন।
যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে ট্রেনে মূলত জেনারেল কোচ, স্লিপার, থ্রি এসি, সেকেন্ড এসি, ফার্স্ট এসি কোচ এই ৪ ধরণের বগি রাখা হয়। এই সব কোচের পরিষেবা অনুযায়ী পার্থক্য হয় টিকিটের দামেও।ট্রেনের এই সমস্ত বগিতেই যাত্রীরা সফর করতে পারেন। কিন্তু, জানলে অবাক হবেন ট্রেনে আরও একটি কোচ রয়েছে যেখানে যাত্রীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই যদি কেউ ভুলেও এই কামরায় পা রাখেন তাহলে দিতে হয় অতিরিক্ত জরিমানা। সেইসাথে যেতে হয় জেলেও।
ট্রেনের এই ‘প্রবেশ নিষিদ্ধ’ কামরাটি হল প্যান্ট্রি কার (Pantry Car)। যা আসলে রেলের ‘রান্নাঘর’ বলেই পরিচিত। রেলের নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনে থাকা এই বিশেষ কামরায় যাত্রীদের প্রবেশ করার অনুমতি নেই। তাই কোনো যাত্রী যদি এই নিয়ম লঙ্ঘন করে প্যান্ট্রি কারে ধরা পড়ে যান তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয় ভারতীয় রেল।
আসলে রেলের এই রান্নাঘরেই রেল যাত্রীদের জন্য সমস্ত খাবার দাবার তৈরি করা হয়ে থাকে। তাই সাধারণত যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবেই মূলত এই নিয়ম চালু করেছে ভারতীয় রেল। তবে কোন যাত্রী চাইলে খাবার অর্ডার দিয়ে প্যান্ট্রি কারে তৈরি হওয়া খাবার খেতে পারেন।
সাধারণত ট্রেনের একটি প্যান্ট্রি কারে রাঁধুনি এবং ওয়েটার-সহ প্রায় ৩০ জন কাজ করেন। কমবেশি ৩৫০ জোড়া দূরপাল্লার ট্রেনে প্যান্ট্রি কার পরিষেবাপাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে সুপারফার্স্ট,এক্সপ্রেস,মেল, এবং প্রিমিয়াম সার্ভিস ট্রেন। এখানে বলে রাখি ট্রেনের প্যান্ট্রিতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা কিন্তু রেলের স্থায়ী কর্মী নন। প্রসঙ্গত করোনাকালে সংক্রমণের কথা ভেবে প্যান্ট্রি কার পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেসময় রেলে শুকনো খাবার মিললেও তৈরি খাবার পাওয়া যেত না।
Leave a Reply