ভারতবর্ষ মানেই বৈচিত্র্যের মধ্যে একতা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এত বৈচিত্র্য পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। আমাদের দেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষ নিজস্ব কিছু ধ্যান-ধারণা এবং ধর্মীয় মতাদর্শে বিশ্বাসী।তবে ধর্মীয় বিশ্বাস যাই হোক না কেন ভারতীয়দের কাছে কিন্তু দিনে দিনে গুরুত্ব বাড়ছে জ্যোতিষশাস্ত্রের। এই জোত্যিষশাস্ত্র মেনেই দেশের অধিকাংশ মানুষ অশুভ শক্তি থেকে নিজেদের দূরে রাখতেই ধারণ করেন কালো সুতো বা কার।
এই একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই বিশেষ কালো কার রয়েছে স্বয়ং আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতেও। তিনিও নিজের ডান হাতে মোটা করে কালো সুতো পরে থাকেন। তবে কেউ কিন্তু এমনি এমনিই হাতে এই কালো রঙের সুতো পরেন না। হিন্দু ধর্ম মতে বিশেষ করে বাঙালিদের মধ্যে সমস্ত বিপদ থেকে দূরে থাকতে বিপদতারিনীর তাগা বাঁধার বিশেষ নিয়ম রয়েছে।
তবে সারা দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন সঠিক নিয়ম মেনে কালো সুতো পরলে মিলবে বিশেষ উপকারিতা। ভারতীয়দের জীবনে জ্যোতিষ শাস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই শুভ শক্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে অনেকেই জ্যোতিষ শাস্ত্রের সাহায্য নিয়ে থাকেন। যারা জ্যোতিষ শাস্ত্রে বিশ্বাসী যে কোন ধর্মের মানুষই এই কালো কার হাতের কব্জিতে ধারণ করতে পারেন। তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে এই সুতো বাঁধার নিয়ম রয়েছে ডান হাতে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে বাম হাতে পরতে হয়। গলায়, কোমরে কিংবা পায়ের আঙুলেও এই সুতো পরেন অনেকে।
শুভক্ষণ বিচার করে শনি মঙ্গলবারেই এই কালো কার ধারণ করা হয়। সাধারণত সকালে ও সন্ধ্যায় পুজোর পরেই এই সুতো পড়া যায়। কিন্তু যদি কখনও পুরনো কালো সুতো বদলানোর প্রয়োজন পড়ে তাহলে পুরনো সুতোটিকে নদীর জলে ফেলে দিতে হবে। কারণ হিসাবে মনে করা হয় এই ভাবেই নিজের দিকে ধেয়ে আসা থাকা সমস্ত কুদৃষ্টি নদীর জলের ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে।
কিন্তু সচারাচর সবার বাড়ির সামনেই তো আর নদী থাকে না। তাই সেক্ষেত্রে পুরনো সুতো বদলানোর পর তা কোন মন্দির বা পবিত্র স্থানে রেখে আসা উচিত। কিন্তু তা এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে তা কারও পায়ে না ঠেকে। দেখতে অতি তুচ্ছ হলেও এই কালো সুতোতেই রয়েছে বিশেষ উপকারিতা। যে পরার পরেই নাকি ফল মেলে হাতেনাতে।
প্রতিনিয়ত চলাফেরার পথে আমাদের অনেক মানুষের সাথেই পরিচয় হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই হয়ে থাকে নেগেটিভ শক্তির আধার। এই ধরণের মানুষের কু-নজর এড়ানো যায় না। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস এই কালো সুতো নিয়ম মেনে হাতে পরলে মানসিক শক্তি এবং অধ্যবসায় তৈরি হয়। অনেকে আবার ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে কুনজর থেকে বাঁচতেও কালো কার বেঁধে রাখেন। মনে করা হয় এই কালো সুতো কাজে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
তবে এই কালো সুতো পরার পিছনে আদৌ কোন বিজ্ঞানী কারণ আছে কিনা এ সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রমাণ মেলেনি। তাই মনে করা হয় সকলেই জ্যোতিষ শাস্ত্র এবং ব্যক্তিগত কিংবা সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেই এই সুতো পরে থাকেন। তাই এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এটি সম্পূর্ণ জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি এখানে বৈজ্ঞানিক কোন সত্যতা নেই।
Leave a Reply