সংসারের হাড়িটা নামমাত্রই আলাদা। একসাথে জল আনতে যাওয়া থেকে শুরু করে বাজার করা সবই হয় একসাথেই। দুই জয়ের সম্পর্ক এতটাই মধুর যে কখনো কখনো একজন রান্না করলে আনাজ কেটে দেন অন্য জা। সংসারে সামান্য ঠোকাঠুকি হলেও মিটিয়ে নেন নিজেরাই। কিন্তু ভোট যুদ্ধে একই পরিবারের দুই গৃহবধূকে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়িয়েদিল দুই দল। একই পরিবারের দুই গৃহবধুর ভোটের লড়াই নিয়ে এখন প্রবল চর্চা এলাকা জুড়ে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মনসুকা দুই নম্বর পঞ্চায়েতে এবার তৃণমূল এবং বিজেপির হয়ে ভোট ময়দানে নামল একই পরিবারের দুই গৃহবধূ।
Byte
রায় পরিবারের বড় বউ ছায়া রায় ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিটে লড়াইয়ে নেমেছে আর ছোট জা প্রিয়া রায় প্রার্থী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর প্রথম দিকে সেভাবে প্রচারে নামতে না পারলেও পার্টির সিম্বল পাওয়ার পর থেকেই জোর কদমে শুরু হয়েছে প্রচার দুই গৃহবধুরই। দুই প্রার্থীর হয়ে দেওয়াল লিখন এবং দলীয় পতাকা লাগানোর কাজ চলছে জোর কদমে। ভোটের রণভূমিতে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ কেউ কাউকে।
তবে সারাদিন ভোট প্রচার শেষে সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরে দুই গৃহবধূ একেবারে পারিবারিক ছন্দে। হাসি ঠাট্টা থেকে শুরু করে বাড়ির কাজকর্ম সবই চলছে একই সাথে।
এবারের তৃণমূল প্রার্থী প্রিয়া রায় বলেন রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় আর পারিবারিক সম্পর্ক পারিবারিক আঙ্গিনাতে থাকাটাই ভালো। আমরা সেগুলো কখনোই গুলিয়ে ফেলছি না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে প্রবল উন্নয়ণ মানুষ দেখেছে তাতে আমি একশ শতাংশ নিশ্চিত জয় তৃণমূল কংগ্রেসেরই হবে।
অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিটে প্রর্থী বাড়ির বড় বৌ ছায়ার বক্তব্য আমরা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছি এলাকার যা সমস্যা রয়েছে সেগুলো তুলে ধরছি। মানুষের কাছ থেকে প্রবল সাড়া পাচ্ছি। এবার এলাকায় পদ্ম ফুটবে এমনটা আশাবাদী আমরা। তবে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে আমরা বলব রাজনীতি করুন সুস্থ ভাবে। এখানে হিংসার পরিবেশ যাতে তৈরি না হয় সেই আবেদন থাকবে সবার জন্য।
প্রসঙ্গত গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনসুকা দুই নম্বরের নটি সংসদের সবকটি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল তৃণমূলের দখলে। লোকসভা নির্বাচনে মন শুকায় এলাকায় পদ্ম শিবির প্রবল ভাবে মাথাচাড়া উঠলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে কতগুলি জায়গায় পদ্ম ফোটাতে পারে সেটাই বড় প্রশ্ন গেরুয়া শিবিরের কাছে।
অন্যদিকে গতবারে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করলেও এবারে অধিকাংশ সংসদেই কিন্তু লড়াই হবে ত্রিমুখী। লড়ায়ের জমিটা আগের মত যে আর সহজ নয় তা মানছে শাসকদলও। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখা তৃণমূলের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
বিজেপির স্থানীয় নেতা গুণধর বায়ানের বলেন গতবারে কেউ প্রার্থী হতে পারেনি তাই তৃণমূল জয়ী হয়েছিল। এবারে কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি লড়াইটা বুঝিয়ে দেবে।
Leave a Reply