মমতা ব্যানার্জির আমলে সবচেয়ে বড় ৩টি দুর্নীতি! চুনকালি ফেলেছে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে, তালিকায় আছে কোন কোন দুর্নীতির নাম?
মমতা ব্যানার্জির আমলে
সবচেয়ে বড় ৩টি দুর্নীতি!
চুনকালি লেপেছে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে!
তৃণমূলের গায়ে লাগিয়েছে কলঙ্কের দাগ!
এই ৩টি দুর্নীতির কাছে
চুনোপুঁটি নিয়োগ থেকে কয়লা কাণ্ড!
পার্থ, কেষ্টকে ফের মারবে
এই ৩ কেলেঙ্কারির নায়কেরা!
তালিকায় আছে
কোন কোন দুর্নীতির নাম?
দুর্নীতি কিংবা কেলেঙ্কারি, এই দুই শব্দই এখন বঙ্গরাজনীতির আলোচ্য বিষয়। সকাল হোক বা রাত, চারিদিকে কেবল দুর্নীতির খবর। বাংলার ট্রেড মার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই শব্দটি। টেলিভিশন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্র চোর আর চুরি এই দুই শব্দের ছড়াছড়ি। মমতা ব্যানার্জির শাসন কালে, বিগত দু বছরের মধ্যেই একাধিক দুর্নীতির খবর সামনে এসেছে। চাকরি চুরি, বালি চুরি, গরু পাচার, সোনা পাচার ইত্যাদি! এই সমস্ত কাণ্ডে জড়িয়ে কেউ টানছেন জেলের ঘানি, কেউ ছুটছেন ইডির বাড়ি। তবে এই প্রথম নয়। তৃণমূলের শাসন কালের প্রথমদিকেও বড় বড় ৩টি দুর্নীতি ঘটেছে। এই ৩টি দুর্নীতি মমতা ব্যানার্জির শাসন কালের সবচেয়ে বড় কলঙ্ক মত বিশেষজ্ঞদের। এই ৩টি দুর্নীতি বুল ডোজার চালিয়েছে লাখ লাখ বাঙ্গালীর স্বপ্নে। তৃণমূলকে নতুন ভাবে জন্ম দিলেও, তাদের গায়ে থেকে মুছবে না এই ৩ কেলেঙ্কারির দাগ! এক নজরে দেখুন মমতার শাসকালের সবচেয়ে বড় বড় আলোচিত ৩টি দুর্নীতির ঘটনা-
এক, সারদা কেলেঙ্কারিঃ পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি সারদা কেলেঙ্কারি। তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা এই কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে যার জন্য গোটা তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যায় সারদা কেলেঙ্কারির সাথে। ২০০০ সালে ব্যবসায়ী সুদীপ্ত সেন সারদা নামের এই গ্রুপটি তৈরি করেন। সারদা গ্রুপটি মূলত, অনেকগুলি কোম্পানিকে নিয়ে তৈরি করা একটি কনসোর্টিয়াম। ছোট ছোট বিনিয়োগকারীদের বেশি বেশি রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাত্রা শুরু করে সারদা গ্রুপ। চোখের নিমেষেই কয়েক বছরের মধ্যে, ২৫০০ কোটি টাকার বেশি বাজার থেকে তুলে ফেলে সারদা। সারদার শাখা প্রশাখা পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় ওড়িশা, আসাম এবং ত্রিপুরাতেও। বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ১৭ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। ২০১৩ সালে ভেঙে পড়ে স্কিম। বাজার থেকে সাধারণ মানুষের টাকা তুলে কার্যত ফেরত দিতে ব্যর্থ হয় সারদা। এদিকে সারদার ব্র্যান্ড অ্যম্বাসাডর ছিলেন, টিএমসি সাংসদ তথা অভিনেত্রী শতাব্দী রায় এবং রাজ্যসভার সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী। ব্যস সব মিলিয়ে কলঙ্কের দাগ পড়ে যায় ঘাসফুল শিবিরে। সারদাকে বিশ্বাস করে বাংলা লাখ লাখ মানুষ ঠকেছে। টাকা হারিয়েছে। সম্প্রতি সারদা কাণ্ডের টাকা ফেরত দেওয়া ব্যবস্থা করেছেন অমিত শাহ।
দুই, নারদা কাণ্ডঃ পশ্চিমবঙ্গের বুকে আরেকটি বড় কেলেঙ্কারি নারদা কাণ্ড। এটি ছিল একটি স্টিং অপারেশন। তৃণমূলের ঘুষখোর নেতাদের হাতে নাতে পাকড়াও করতেই এই স্টিং অপারেশনটি চালানো হয়। সাংবাদিক স্যামু ম্যাথুয়েল এই স্টিং অপারেশনটি চালান। তার হাত ধরেই ঘুষখোর নেতাদের জ্বলজ্যন্ত প্রমাণ সামনে চলে আসে। ২০১৬ সালে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে এই স্টিং অপারেশনের ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। যেখানে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে। ক্যামেরায় যাদের ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁরা হলেন-
মুকুল রায়
সুব্রত মুখোপাধ্যায়
সুলতান আহমেদ
সৌগত রায়
শুভেন্দু অধিকারী
কাকলি ঘোষ দস্তিদার
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়
শোভন চট্টোপাধ্যায়
মদন মিত্র
ইকবাল আহমেদ
ফিরহাদ হাকিম
পুলিশ আধিকারিক এমএইচ আহমেদ মির্জা
এই স্টিং অপারেশন ঘিরে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। এখনও তদন্তের অধীনে এই কেলেঙ্কারি কাণ্ড।
তিন, রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিঃ ২০১৩ সালে প্রথম প্রকাশ্যে আসে রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি। এটিও ছিল মূলত একটি চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি। রোজভ্যালি নামক একটি সংস্থার হাত ধরেই শুরু হয় এই দুর্নীতি। রোজভ্যালির কর্ণধার ছিলেন গৌতম কুণ্ডু। এই কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ায় একাধিক রাজনৈতিক কর্তা ব্যক্তির।ভ গ্রেফতার হন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পালের মত হেভি ওয়েট নেতারা। সূত্র অনুযায়ী বাজার থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা তোলে রোজভ্যালি সংস্থা। শুধু মাত্র পশ্চিমবঙ্গই নয়, অসম ও বিহার থেকেও টাকা তোলে এই রোজভ্যালি। বর্তমানে তদন্তের অধীনে রয়েছে রোজভ্যালি কাণ্ড।
Leave a Reply