পরিবারের কেউ দেহত্যাগ করলে টানা ১৩ দিন নিরামিষ খেতে হয় কেন? শাস্ত্রে যা আছে, শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও
পরিবারের কেউ
প্রাণ ত্যাগ করলে
১৩ দিন নিরামিষ খেতে হয় কেন?
ছোঁয়া যায় না মাছ-মাংস!
করা যায় না হৈ-হুল্লোড়!
নিয়ম ভাঙলে নাকি সর্বনাশ!
কি কি কারণে মানা হয়
এমন নিয়ম?
কারা বানিয়েছে এই রীতি?
শাস্ত্রে যা আছে
শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও
হিন্দু ধর্ম মানেই নানান রকম রীতিনীতির সমাচার। জন্ম, প্রাণত্যাগ, বিয়ে সবেতেই হিন্দুদের বেশ কিছু রীতিনীতি রয়েছে। ঠিক তেমনি একটি রীতি হল কেউ প্রাণ ত্যাগ করলে টানা ১৩ দিন একমনে নিরামিষ খাওয়া। ১৩ দিন না কাটলে আমিষ খাওয়া ও ছোঁয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রতিটি সনাতনীরাই এই নিয়ম পালন করে। নিজেদের কোনও ব্যক্তি দেহত্যাগ করলে, অর্থাৎ পরলোকগমন করলে সেই ব্যক্তির উদ্দেশ্যে টানা ১৩ দিন হিন্দুরা নিরামিষ খাই। কিন্তু কেন এমন নিয়ম পালন করে, অনেকেই তার সঠিক কারণ জানেন না।
আসলে এই নিয়মের উৎপত্তি সনাতনীদের গরুর পুরান থেকে। গরুর পুরানে খুব সুন্দর ভাবে ব্যাখা করা হয়েছে কেন ১৩ দিন নিরামিষ ভোজন করা হয়। আর না করলেই বা কি কি ক্ষতি হবে। এক নজরে এখুন কারণগুলো-
এক, ১৩ দিন ধরে হিন্দুরা যে নিরামিষ আহার করে, এই ১৩টি দিন আসলে পরলোকগত ব্যক্তিকে উৎসর্গ করা হয়। নিরামিষ খাওয়ার অর্থই হল ১৩ দিনই শোক পালন করা।
দুই, শাস্ত্রমতে কোনও ব্যক্তি প্রাণ ত্যাগের পর, ১৩ দিন পর্যন্ত ইহলোকেই বিরাজ করে। অর্থাৎ ১৩ দিন পর্যন্ত দেহত্যাগকারী ব্যক্তির আত্মা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়। নিজের আত্মীয়, স্বজন, বন্ধু বান্ধবদের কাছাকাছি থাকে। কারণ ১৩ দিন সময় লাগে আত্মার মায়া কাটাতে। এই সময় আত্মা কথা বলতে পারে না, মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। ঘুরে ফিরের আসতে চায়। তাই এই সময় কাছের মানুষদের আমিষ খেতে দেখলে কিংবা আনন্দ, ফুর্তি করতে দেখলে, আত্মা কষ্ট পায়, অতৃপ্ত হয়। যা অমঙ্গল ঘটায়।
তিন, আত্মাকে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে ১৩ দিনের নিরামিষ ভোজন।
চার, ১৩ দিন ধরে শুধু ভালো মন্দ খাবারই নয়, সম্পূর্ণ বৈরাগীর মতন জীবন যাপন করাটাও আবশ্যক। শাস্ত্র মতে, বেঁচে থাকলে সবাই আপন, প্রাণ ত্যাগের পর সবাই পর। অর্থাৎ যিনি পরপারে চলে গেছেন তিনি জীবিত কালীন মঙ্গল জনক। প্রাণ ত্যাগের পর তিনি হয়ে ওঠেন অশুভ শক্তির আঁধার। ফলে এই সময় পরলোকবাসী আত্মা কাছের মানুষের ক্ষতি করতে চায়। তাই ১৩ দিন আনন্দ ফুর্তি করা নিষেধ করা হয়।
পাঁচ, শাস্ত্র মতে ১৩ দিন আমিষ ছেড়ে নিরামিষ খেলে আত্মা কোনও অনিষ্ঠ করতে পারে না। আত্মার ক্ষমতা কমে আসে। এমকি দ্রুত মায়া কাটিয়ে স্বর্গবাসী হয়।
Leave a Reply